প্রসঙ্গত, একটি নম্বর স্কিমের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট অপারেটর ১০ কোটি সিম (নম্বরসহ) বিক্রি করতে পারে। যার নম্বরগুলো হয় ১১ ডিজিটের। ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ই্উনিয়ন (আইটিইউ) প্রদত্ত স্ট্যান্ডার্ড এটিই।
জানা যায়, গ্রামীণফোন এরই মধ্যে তাদের বন্ধ পুরনো ও অব্যবহৃত নম্বর (সিম) নতুন করে বিক্রি করছে। সিম বিক্রির কোটা প্রায় শেষের পথে থাকায় এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে গ্রামীণফোন সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, বন্ধ ও অব্যহৃত সিম বিক্রিতে বিটিআরসির নির্দেশনাও রয়েছে। তাতে বলা আছে, ৭৩০ দিন বা দুই বছর কোনও সিম একটানা বন্ধ বা অব্যবহৃত থাকলে সেই সিম চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং সংশ্লিষ্ট গ্রাহক ওই সিমের মালিকানা হারাবেন।
তবে তার আগে একটানা ৯০ দিন কোনও সংযোগ বন্ধ থাকলে সিমটি ইনঅ্যাক্টিভ হয়ে যাবে এবং ২ বছরের আগে টাকা রিচার্জ করা হলে সিমটি আবারও অ্যাক্টিভ হবে। এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে গ্রামীণফোন খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি। আর এ কারণে গ্রামীণফোন নম্বর স্কিমের দিকেই গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, গ্রামীণফোন এরই মধ্যে সিম বিক্রির কোটা প্রায় শেষ করে ফেলেছে। বিক্রি হওয়া ১০ কোটি সিমের বাইরে সিম বিক্রি করতে হলে তা গ্রামীণফোনের জন্য নির্দিষ্ট ‘০১৭’ -এ বিক্রি করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে নতুন একটি নম্বর স্কিম নিতে হবে। বর্তমানে ০ থেকে ১০ -এর মধ্যে ‘০১২’, ‘০১৩’, ‘০১৪’ ও ‘০১০’ নম্বর স্কিম খালি রয়েছে। এ্গুলোর যেকোনও একটি গ্রামীণফোন পেতে পারে বলে ওই সূত্র জানায়। আবেদনের খবরটি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এম রায়হান আখতার জানান, বিশ্বের ৪টি দেশে একাধিক নম্বর স্কিমের প্রচলন রয়েছে। দেশগুলোরে মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত ও নাইজেরিয়া। তিনি উল্লেখ করেন, যেসব দেশে জনসংখ্যা ২০ কোটির বেশি সেসব দেশে একাধিক নম্বর স্কিমের ব্যবহার হয়ে থাকে।
তিনি জানান, আমাদের দেশে একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ২০টি সিম নিতে পারেন। দেশের ১৫ কোটি (ধরে) মানুষ যদি ২০টি করে সিম নিতে চায় তাহলে মোট সিমের সংখ্যা হবে ৩০০ কোটি। আর এই সংখ্যক সিম বিক্রি করতে মোবাইলফোন অপারেটর প্রয়োজন হবে ৩০টি। আমাদের দেশে এটি একটি অসম্ভব ঘটনা। কারণ, একটি নম্বর স্কিমে ১০ কোটির বেশি সিম বিক্রি করা যাবে না।
সাধারণত,নতুন নম্বর স্কিমের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিলাম আয়োজন করে। পরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে নম্বরটি অপারেটররা নিতে পারে।
এ ব্যাপারে রায়হান আখতারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ ধরনের কোনও নিয়ম নেই। এমনকি লাইসেন্সিং গাইডলাইনেও কোনও কিছু উল্লেখ নেই। অপারেটরদের লাইসেন্স দেওয়ার সময় একটি নম্বরও দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, মোবাইল অপারেটর রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হওয়ার বিধিবিধানে নতুন নম্বর স্কিম বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। বিষয়টি এতে অন্তর্ভুক্ত হলে নতুন নম্বর স্কিম দেওয়ার বিষয়ে আর কোনও জটিলতা থাকবে না।
তিনি বলেন, মোবাইল অপারেটরদের টুজির লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালে। নম্বর স্কিম মোবাইল ফোন অপারেটরদের লাইসেন্স দেওয়ার সময় দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু লাইসেন্স নবায়নের সময় নম্বর স্কিম বরাদ্দও এবার নবায়ন করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নম্বর স্কিম সংশ্লিষ্ট দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তা অপারেটরদের দেওয়ার সময় আর্থিক মূল্যমানে বরাদ্দ দেওয়া হয়। বাংলাদেশেও কোনও অপারেটরকে একাধিক নম্বর স্কিম বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারণ করা যেতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
/এইচএএইচ/ এমএসএম