টেলিযোগাযোগ খাতের কর কমানোর দাবি অ্যামটবের

দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে টেলিযোগাযোগ শিল্পের সর্বাত্মক ভূমিকা থাকার পরও প্রস্তাবিত বাজেটে এই শিল্পের কোনও সুপারিশই মূল্যায়ন করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন-অ্যামটব নেতারা। মঙ্গলবার (৮ জুন) বাজেট পরবর্তী এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন। এ ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে তারা সরকারকে টেলিযোগাযোগ খাতের সুপারিশগুলো পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।

অ্যামটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, ‘মোবাইল কাভারেজের বিস্তৃতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক (একক গ্রাহক হার ৪৬ শতাংশ) এখনও মোবাইল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেননি। তাই ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির অন্যতম শর্ত হচ্ছে মোবাইল খাতে কর কাঠামোর সংস্কার।’   

অ্যামটবের দাবিগুলো:

১. অলাভজনক অপারেটরের ওপর ন্যূনতম ২ শতাংশ টার্নওভার ট্যাক্স প্রত্যাহার বা যুক্তিসঙ্গত করা।

২. উচ্চ করপোরেট করের হারকে যৌক্তিক ও সহনীয় পর্যায়ে হ্রাস করে তালিকাভুক্ত (বর্তমান ৪০ শতাংশ) ও অ-তালিকাভুক্ত (বর্তমান ৪৫ শতাংশ) অপারেটরদের কর ২৫ ও ৩২ শতাংশে নামিয়ে আনা।

৩. সরাসরি অপারেটর বিলিং থেকে পরিপূরক শুল্ক ও সারচার্জ প্রত্যাহার।

৪. সব ইনট্যাঞ্জিবল সম্পদের ওপর অ্যামোরটাইজেশন সুবিধা প্রদান করা। 

৫. মোবাইল সিমের ওপরে আরোপিত ২০০ টাকা কর বিলুপ্ত করা।

৬. প্রতি ১০০ টাকা টকটাইম ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ৩৩.২৫ এবং ২১.৭৫ শতাংশ ভ্যাট, এসডি ও সারচার্জ যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনা।

৭. সরকারি সংস্থার জন্য ভ্যাট ছাড় সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশনা বা গাইডলাইন প্রদান করা এবং অপরিশোধিত ভ্যাটের ওপর আরোপিত সুদ যৌক্তিক করা।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের ডিরেক্টর ও হেড অব পাবলিক অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত কার্যক্রম সম্প্রসারিত করছি এবং বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীকে নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করছি। কর ব্যবস্থাকে যৌক্তিক পর্যায়ে ঢেলে সাজালে ডিজিটাল যাত্রা আরও গতিশীল হবে।’

রবি’র চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো সামগ্রিক বিশ্লেষণের ভিত্তিতে উত্থাপন করা সত্ত্বেও একটি শিল্প হিসেবে প্রতি বাজেটেই আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। আমরা সরকারকে অনুরোধ করবো, টেলিযোগাযোগ খাতের কর কাঠামো নিয়ে একটি বিশদ গবেষণা পরিচালনা করার। এতে আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সহজ হবে।’

বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, ‘টেলিকম খাতে করের হার বাস্তবসম্মতভাবে কমানো হলে আমাদের বিনিয়োগকারীরা অবশ্যই এখানে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত হবে।’