শিশুদের তথ্য বিক্রি করে দিচ্ছে ভার্চুয়াল লার্নিং অ্যাপ

কোভিড-১৯ মহামারির সময় লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী ভার্চুয়াল পাঠে অংশ নেয়। আর সেখানে তাদের দেওয়া ব্যক্তিগত উপাত্ত এবং তাদের অনলাইন গতিবিধির উপর নজরদারি চালায় বিভিন্ন শিক্ষামূলক অ্যাপ এবং ওয়েসবাইট। এসব তথ্য-উপাত্তের অনেকটাই পরে বিভিন্ন থার্ড পার্টি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

সিএনএন জানায়, মানবাধিকার সংস্থার একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ৪৯টি দেশে পরিচালিত ১৬৪টি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ১৪৬টির মধ্যে এমন কাজের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সংস্থাটি জানায়, এসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের না জানিয়ে তাদের এসব তথ্য এবং উপাত্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করেছে। এসব তথ্য ও উপাত্তের মধ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীদের পরিচয়, অবস্থান, অনলাইন অ্যাক্টিভিটি, আচরণ এবং তাদের পরিবার ও বন্ধুদের সম্পর্কে তথ্য।

শিশু অধিকার এবং প্রযুক্তি গবেষক হায়ে জুং হ্যান বলেন, প্লাটফর্মগুলো শিশু, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখেছে। এমনকি তারা যদি এগুলো জেনেও থাকে সেক্ষেত্রেও তাদের কিছুই করার ছিল না। প্রাইভেসি রক্ষার জন্য হয় তাদের টাকা খরচ করতে হতো অথবা এই মহামারির সময় পড়াশোনা না করে বসে থাকতে হতো।

সার্ভিলেন্স টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা অ্যালবার্ট ফক্স চ্যান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই জানি যে প্রযুক্তির অপব্যবহার হচ্ছে এবং শিশুদের বিপদে ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি এই রিপোর্টটিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে বিষয়টা কতোটা ক্ষতিকর হতে পারে এবং শিক্ষাবিদ ও সরকার কিভাবে ভুল করছে সেটাও বোঝা যাচ্ছে’। সিএনএন জানায়, এবিষয়ে আইন থাকলেও স্কুল এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে।

গ্র্যান্টার রিসার্চ ফার্মের বিশ্লেষক বার্ট উইলেমসেন প্রাইভেসি ইস্যুকে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, স্কুল এবং টেক প্রতিষ্ঠানগুলোর এ বিষয় স্বচ্ছতা থাকা উচিত। এই তথ্যগুলো দিয়ে তারা কি করছে এবং কেন এই তথ্যগুলো তাদের দরকার এগুলো বিস্তারিত জানানো উচিত তাদের। তিনি আরও বলেন, এই উপাত্তগুলো নেওয়ার পেছনে অবশ্যই কোনও না কোনও কারণ রয়েছে। কিন্তু সেটি বিজ্ঞাপনের জন্য হতে পারে না। যেহেতু ডিজিটাল জগতে এসব তথ্য সহজে মুছে যায় না তাই এসব তথ্য শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য অনেক সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আর এ বিষয় অবশ্যই সচেতন হতে হবে।