ডিজিটাল উদ্ভাবন হবে উন্নয়নের মূল শক্তি: মোস্তাফা জব্বার

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল উদ্ভাবন হবে আগামী দিনের উন্নয়নের মূল শক্তি। তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল প্রযুক্তিকে উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাতে আমরা হোম নেটওয়ার্ককে উৎসাহিত করতে উদ‌্যোগ নিয়েছি।’

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) ঢাকায় সচিবালয়ে তার দফতরে ‘নকিয়া ফাইভ-জি ক‌্যাপাবিলিটি অ্যান্ড টেকনিক‌্যাল কোলাবরেশন’ বিষয়ে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নকিয়া বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে নকিয়ার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল জ্যাগার দুই সদস‌্যের  প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধিদলের অপর সদস‌্য হলেন— নকিয়া বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রধান মো. আরিফুল ইসলাম। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিশেষ করে টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়।

এ সময় আইওটি প্রযুক্তিকে কৃষি ও মৎস‌্য চাষে কাজে লাগাতে হবে। প্রযুক্তিবিদ ও ডিজিটাল প্রযুক্তি শিল্পসহ সংশ্লিষ্টদের এ ব‌্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে ফাইভ-জি মোবাইল প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, ‘ফোর-জি প্রযুক্তি সবার জন্য, কিন্তু ফাইভ-জি প্রযুক্তি একটি শিল্প পণ‌্য। স্বাস্থ‌্য, শিক্ষা, কৃষি, মৎস‌্য এবং শিল্প খাতের জন‌্য এই প্রযুক্তি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা ঘোষিত দূরদৃষ্টি সম্পন্ন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য অহংকারের বিষয় হচ্ছে— বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যেখানে ফাইভ-জি যুগে যেতে পারেনি, অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করা এক সময়ের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির বাংলাদেশ প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে উন্নত বিশ্বের সমান্তরালে হাঁটছে। অপারেটরদেরকে লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে মোবাইল ফোন সাধারণের নাগালে পৌঁছে দেওয়া এবং কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করে কম্পিউটারে সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা সর্বোপরি ২০০৯ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতারই ফসল।’

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে বর্তমানে ৮৭টি দেশে বাণিজ‌্যিকভাবে ফাইভ-জি চালু হয়েছে। জিএসএস তথ্যমতে, ২০২২ সালের জুনের শেষ নাগাদ বিশ্বের ১৫০টি দেশে ৪৯৬টি অপারেটর পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভ-জি নেটওয়ার্কে বিনিয়োগ করছে। ২০২২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন ফাইভ-জি সংযোগ স্থাপিত হবে এবং ফোরজি সংযোগ কমতে শুরু করবে। এই সময়ের মধ্যে থ্রিজি সংযোগ গ্রহণের হার শতকরা ২০ ভাগের নীচে চলে আসবে। এই সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাপী মোবাইল ব্রডব্যান্ড সংযোগ ৮ বিলিয়নে উপনীত হবে এবং ফাইভ-জি সংযোগ শতকরা ২০ ভাগে পৌঁছুবে। বিশ্বে ২০২২-২৩ সালে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক হবে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন এবং মোবাইল গ্রাহক হবে ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন। ২০২৪ থেকে ২৫ সালের মধ্যে বিশ্বে ফাইভ-জি সংযোগ স্থাপিত হবে ২ বিলিয়ন। এ সময়ের মধ্যে মোবাইল ব্রডব্যান্ড গ্রহণের হার হবে শতকরা ৯৫ ভাগ। ২০২১ সালে বিশ্বে জিডিপিতে মোবাইল ইন্ডাস্ট্রিজের অবদান ছিল ৪ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২৫ সালে ৪ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। ২০২৪-২৫ সালে বিশ্বে মোবাইল ইকোসিস্টেম সহায়ক হিসেবে সরাসরি ১২ মিলিয়ন এবং পরোক্ষভাবে আরও ১৪ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থান হবে।