মোবাইলের ‘বড় বাজার’ ছোট করার অনুরোধ

দেশে মোবাইল ফোনের গ্রে মার্কেট (অবৈধ বাজার) অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে বড় হয়ে গেছে। বড় হতে হতে তা বাজার আকারের ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এই বাজারকে ছোট করার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় মোবাইল ফোন নির্মাতারা। রবিবার (৩০ অক্টোবর) টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও সংযোজনকারী স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অংশীজনরা (স্থানীয় মোবাইল ফোন উৎপাদক ও আমদানিকারকরা) এই অনুরোধ জানান বলে জানা গেছে।

বৈঠকে অংশ গ্রহণকারী একটি সূত্র (স্থানীয় মোবাইলফোন নির্মাতা) জানায়, বিটিআরসিকে তারা জানিয়েছেন যে, মোবাইলের গ্রে মার্কেট অনেক বেড়ে গেছে। ইতোমধ্যে ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। শিগগিরই এটা বন্ধ করতে হবে। তা না-হলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। ওই সূত্র আরও  জানায়, বৈঠকে জানানো হয়েছে— এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার) চালুর ফলে দেশে মোবাইলের অবৈধ বাজার ৫ শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছিল। বৈঠকে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ মোবাইল নির্মাতা আবারও এনইআইআর চালুর অনুরোধ জানান। এছাড়া মোবাইল আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট (মূসক) আরোপ করায় মোবাইলের দাম বেড়ে গেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয় অংশীজনদের পক্ষ থেকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিটিআরসির বৈঠকে ৭টি এজেন্ডা ছিল। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল— মোবাইল উৎপাদন, সংযোজন, বাজারজাত করার ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যা নিয়ে আলোচনা, প্রতিটি জেলায় ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা-বিষয়ক আলোচনা, মোবাইলের যন্ত্রাংশ আমদানি-বিষয়ক আলোচনা, মোবাইল সেটে বাংলা কি-বোর্ড বিষয়ক এবং বাংলাদেশ  মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের প্রম্তাবনা নিয়ে আলোচনা।    

বৈঠকে বিটিআরসির স্পেক্ট্রাম বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ-সহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলে।

সব মোবাইল হ্যান্ডসেটের জন্য এক ও অভিন্ন চার্জারের দাবি ছিল বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের। এই বিষয়ে কমিশনের আজকের বৈঠকে অ্যাসোসিয়েশনের দাবি এবং যুক্তি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। এ বিষয়ে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের যুক্তি হচ্ছে— যদি এক  ও অভিন্ন চার্জার হয় সে ক্ষেত্রে, একটি পরিবারের পাঁচ জন সদস্যের যদি পাঁচটি হ্যান্ডসেট থাকে, তাহলে তার জন্য ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি চার্জারের প্রয়োজন হয়। ফলে অতিরিক্ত ব্যয়ের পাশাপাশি ঘরে অতিরিক্ত তারের জঞ্জাল সৃষ্টি হচ্ছে। ঠিক একইভাবে এসব চার্জার বিকল হলে বা নষ্ট হলে ই-বর্জ্যের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। অভিন্ন চার্জার হলে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় অনেকাংশে কমে যাবে। বাজারে মানহীন একসেসরিজের পরিমাণ কমার সঙ্গে সঙ্গে ই-বর্জ্যের পরিমাণ কমে যাবে। ভ্রমণের সময় গ্রাহকরা চার্জার বহন করা থেকে মুক্তি পাবে। উৎপাদকদের খরচ কম হওয়ার কারণে হ্যান্ডসেটের দাম কমাতে পারবেন।’

এছাড়া হ্যান্ডসেটের গুণগত মান বৃদ্ধির পাশাপাশি মূল্য নির্ধারণে কমিশনকে জানানো এবং জবাবদিহির আওতায় আনার পরামর্শ দেওয়া হয়।