ডাটা প্রটেকশন আইন

‘ব্যবসায় বাধা এলে রফতানি সম্ভাবনা ব্যাহত হবে’

আইটি খাত থেকে ২০২৫ সালে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার রফতানির সম্ভাবনা আছে। কিন্তু তথ্য সুরক্ষা বা অন্য কোনও আইন দিয়ে এটির প্রতিবন্ধকতা তৈরি করলে এটি অর্জন করা দুরুহ হবে। রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত ‘অনলাইন ফ্রিডম অ্যান্ড বিজনেস ইনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক ফেসবুক সেমিনারে বক্তারা একথা বলেন। 

সেমিনারে ওরাকলের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রুবাবা দৌলা বলেন, ‘গত কয়েক বছরে ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে। ডিজিটাইজেশনের জন্য অনলাইন স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ডাটা প্রটেকশন করা সম্ভব নয়। এখানে তিনটি জিনিস গুরুত্বপূর্ণ এবং সেগুলো হচ্ছে— কোথায় ডাটা রাখা হচ্ছে, কিভাবে রাখা হচ্ছে এবং কারা এই তথ্যগুলো দেখতে পাচ্ছে। আমাদেরকে বুঝতে হবে, তথ্য যেন সুরক্ষিত থাকে।’

আইটি খাতের প্রসার হয়েছে এবং ২০০৮ সালে আড়াই কোটি ডলার রফতানি থেকে ২০২১ সালে প্রায় ২০০ কোটি ডলার রফতানি হয়েছে। এটি ২০২৫ সালে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার দাঁড়াবে। কিন্তু এ খাতে যদি প্রতিবন্ধকতা থাকে, তবে এটি অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে তিনি জানান।

রুবাবা দৌলা বলেন, ‘আমাদেরকে বুঝতে হবে— কোনটি স্পর্শকাতর তথ্য এবং কোনটি নয়। অনেক বাংলাদেশি কোম্পানি বৈশ্বিক ক্ষেত্রে কাজ করে এবং তাদের তথ্য প্রবেশাধিকার প্রয়োজন। আমাদেরকে বুঝতে হবে— কিভাবে তথ্য সুরক্ষিত করবো এবং একইসঙ্গে ব্যবসা সম্প্রসারণে বাধা হয়ে দাঁড়াবো না।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ‘প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবং এই পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের আইনি ও নিয়ন্ত্রক কাঠামোকে সাজানোর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আমরা সবাই — সেটা যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্ব।’

খসড়া ডেটা সুরক্ষা আইন নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে মূল্য দিই, তাই আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা সরকারের কাছে সরাসরি তুলে ধরেছি।’

আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রতিটি দেশ তাদের স্থানীয় প্রেক্ষাপটকে অবশ্যই বিবেচনায় রাখবে।’ কিন্তু আমরা বাংলাদেশসহ সব দেশকে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট আন্তর্জাতিক মানদণ্ডগুলো সমুন্নত রাখার আহ্বান জানাই বলে তিনি জানান।

যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, ‘বাক স্বাধীনতা ও এর সঙ্গে নীতি প্রণয়নে ভারসাম্য বজায় রাখা বর্তমানে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এটি সবদেশের জন্য প্রযোজ্য।’

এটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখানে ডিজিটাল অর্থনীতি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে যে কোম্পানিগুলো কাজ করছে, সেগুলো বাধাগ্রস্ত না হলে এর সম্ভাব্যতা অনেক বেশি।’

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জমান বলেন, ‘ডাটা প্রটেকশন আইনের খসড়ায় অনেক বিষয়ে স্বচ্ছতার অভাব আছে। যেমন ব্যক্তিগত তথ্য বলতে কী বোঝায়, সেটি পরিষ্কারভাবে বলা হয়নি খসড়া আইনে।’

এছাড়া যারা এই আইনটি তত্ত্বাবধান করবে, তাদেরকে স্বাধীন একটি সংস্থা হতে হবে বলে তিনি জানান।