ছায়া সংসদে তারা জানালেন সমস্যা, দেখালেন সমাধানও

‘শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা এবং প্রান্তিক তরুণদের সমান অধিকার নিশ্চিত করা’- এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে দুদিনব্যাপী ‘ছায়া যুব সংসদ ২০২১’ আয়োজন করা হয়। পথশিশু, জেলে, হিজড়াসহ সমাজের পিছিয়ে পড়া ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবারের অধিবেশনে।

জাতীয় সংসদের আদলে সাজানো এ অনুষ্ঠানের যাবতীয় কার্যাবলী সাজানো হয় বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। রবিবার (৮ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আয়োজকরা জানান, জাতিসংঘ যুব ও ছাত্র সমিতি বাংলাদেশ (ইউনিস্যাব) এবং অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে এবারের আয়োজন করা হয় ৬ ও ৭ আগস্ট।

৬ আগস্ট ‘ছায়া যুব সংসদ ২০২১’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠ করেন ইউনিস্যাবের সভাপতি শ্যামী ওয়াদুদ। উদ্বোধনে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নাহিম রাজ্জাক। তিনি ইউনিস্যাব-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সহ-সভাপতি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে যুব ছায়া সংসদ প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়। করোনা পরিস্থিতিতে এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ভার্চুয়ালি।

দেশে বিদ্যমান নানা সমস্যা নিয়ে তরুণদের চিন্তা, মতামত এবং সমাধান নিয়ে প্রস্তাবিত ধারণাকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়াই এ অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছায়া সাংসদরা তাদের এলাকার সমস্যা তুলে ধরে সমাধানের ব্যাপারে বক্তব্য রাখেন।

এতে, রাজশাহী-৩ আসনের কল্পিত সাংসদ পাঠ্যবই পরিবর্তনের কথা বলেন। দিনাজপুর-৩ আসনের ‘সাংসদ’ মাদ্রাসা শিক্ষাকে বাংলা ও ইংরেজির সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতি সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণের কথাও বলেন কেউ কেউ। বিশেষত, নওগাঁ-৬ আসনের ‘সাংসদ’ বলেন, সাঁওতালদের মাতৃভাষাকে লিখিত ভাষায় প্রণয়ন করা জরুরি এবং তাদের পাঠ্যবইয়ে তাদের বর্ণমালা অন্তর্ভুক্তির অনুরোধ করেন।

এ ছাড়াও বিভিন্ন ছায়া মন্ত্রণালয় প্রান্তিকদের ভূমি দখল, আইন ও বিচার ব্যবস্থার নিষ্ক্রিয় ভূমিকা, মাতৃত্বকালীন ভাতা দুই বছর থেকে পাঁচ বছরে উন্নীত করার কথাও উল্লেখ করেন। গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তারা। সমাজের চলমান অসঙ্গতি নিরসনেও বিভিন্ন সমাধান তুলে ধরেন।

‘ছায়া যুব সংসদ ২০২১’-এ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে ১৫০ জন তরুণ অংশ নেন। হাজারেরও বেশি তরুণের মধ্য থেকে নির্বাচিত করা হয় তাদের। মনোনীত ১৫০ আসনের মাঝে ৩০টি আসন সংরক্ষিত ছিল অবহেলিত প্রান্তিক তরুণ সমাজের জন্য।

দুই দিনের আয়োজনটিতে ছিল ছায়া স্থায়ী কমিটি সেশন, প্রস্তাবনা পেশ, বিল উত্থাপন, ভোট গ্রহণ, এবং প্রেস ব্রিফিং এবং ফলাফল ঘোষণাসহ নানা আয়োজন। সেশনগুলো পরিচালনা করেন একজন ছায়া স্পিকার।

বিশেষ অতিথি হিসেবে একশন এইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিরের উপস্থিতিতে এবারের আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।