যেখানে বিনামূল্যে ইফতার করেন হাজার মানুষ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন প্রাঙ্গণে রমজান মাসে প্রতিদিন বিকেলে একটি দৃশ্য নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। দৃশ্যটি মধুর ক্যান্টিনের আর বাকি মাসগুলোর মতো নয়। মধুর ক্যান্টিনের সামনে সারি সারি চেয়ারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী সহ নানান শ্রেণি পেশার মানুষ উৎসাহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন ইফতারের জন্য। আর একদল শিক্ষার্থী ব্যস্ত অপেক্ষাকৃত মানুষদের হাতে তাদের ইফতার পৌঁছে দেওয়ার জন্য। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হলো, একদম বিনামূল্যেই সবার হাতে হাতে পৌছে যাচ্ছে এই ইফতার।

 


বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গত বছর লকডাউনের সময় প্রথম শিক্ষার্থীদের জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল। এবার সেই সীমাবদ্ধতা ছাপিয়ে উদ্যোগটি সাধারণ মানুষের  ভরসার জায়গায় পরিণত  হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার মানুষ একসঙ্গে  ইফতার করছেন এখানে। 

ইফতার বিতরণ কর্মসূচির উদ্যোক্তা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক শেখ স্বাধীন শাহেদ বলেন, করোনার সময় থেকে গত দু বছর ধরে আমরা কার্যক্রমটা করছি ঢাকায় অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের জন্য। সারাদিন পড়ালেখা করে শিক্ষার্থীদের দিনশেষে যেন ইফতার নিয়ে কোনও চিন্তা না করতে হয়। তারা যেন লাইব্রেরি থেকে পড়াশোনা শেষ করে মধুর ক্যান্টিন থেকে ইফতার করে রুমে ফিরে যেতে পারে। এবার সেই ধারাবাহিকতায় মনে হয়েছে সাধারণ মানুষের জন্যও আয়োজনটা করি।'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী  সাদিক সোহাগ বলেন, 'একদিন ইফতারের শেষ মুহূর্তে ক্যাম্পাসে ফেরার  পর যখন ইফতার কেনার মতো সময় নেই, তখন একজন আমাদের মধুর ক্যান্টিনের সামনে ইফতার করতে বললেন। প্রথমে খুব দ্বিধাবোধ করলেও পরে তাদের আপ্যায়নে আমরা এতোটাই মুগ্ধ হয়েছি যে ক্যাম্পাসে আসলেই আমরা দলবল নিয়ে চলে যাই মধুর ক্যান্টিনে ইফতার করতে।'

ব্যবসার কাজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়  প্রতিদিনই কেরানীগঞ্জ থেকে আসেন ব্যবসায়ী খাইরুজ্জামান। কাজ শেষ করে প্রতিদিনই মধুর ক্যান্টিন  থেকে ইফতার শেষ করেই আবার কর্মস্থলের দিকে রওনা দেন৷ তিনি বলেন, 'আমার মতো যারা দূর থেকে কাজের উদ্দেশ্যে আসেন, তাদের জন্য এই আয়োজনটি আশীর্বাদস্বরূপ। 

 

কাকফাটা রোদ হোক কিংবা কাল বৈশাখি ঝড় কিন্তু এর মাঝেও আয়োজনের কোনো ঘাটতি থাকেনা। প্রতিদিন ই সময় মতো হয়ে থাকে বিশাল এই আয়োজনের ব্যবস্থা।  পুরান ঢাকার বাদামতলি থেকে ধানমন্ডির স্টার কাবাব। সব জায়গার বিভিন্ন মুখরোচক খাবার দিয়ে সাজানো থাকে ইফতারের এই আয়োজন।