X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

সীমানা নিয়ে বিরোধে ডিপিডিসি-ডেসকো

সঞ্চিতা সীতু
১৯ এপ্রিল ২০১৯, ১১:০৭আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০১৯, ১১:১৫

ডিপিডিসি-ডেসকো সীমানা নিয়ে বিরোধে জড়িয়েছে ঢাকার দুই বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশের এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সীমানা নির্ধারণ করে দিলেও একটি কোম্পানি তাদের কর্তৃত্ব ছাড়তে চাইছে না। খোদ বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দেশনাকেও তারা পাত্তা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করতে একজন অতিরিক্ত সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার পক্ষে এখনও এ সমস্যা নিরসনে কিছু করে ওঠা সম্ভব হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের নির্দেশও মানছে না বিতরণ কোম্পানি।’

জানা যায়, ডিপিডিসির অনুকূলে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) লাইসেন্সের ভৌগলিক সীমানা অনুসারে মিরপুর রোডের পুব পাশে নিউরোসায়েন্স, বাংলাদেশে বেতার ও ন্যাশনাল আই ইনস্টিটিউটের মতো বড় বড় গ্রাহকদের ডেসকোর অনুকূলে হস্তান্তর করা হলেও ডিপিডিসির ভৌগলিক সীমানার অর্থাৎ মিরপুর রোডের পশ্চিম পাশে গাবতলী, কল্যাণপুর, তুরাগ হাউজিং,  দারুসসালামসহ আশেপাশের এলাকাগুলো এখনও ডেসকোকে হস্তান্তর করেনি। যদিও এ ব্যাপারে সমন্বয়সভায় সচিব নির্দেশ দিয়েছেন।

বিদ্যুৎ আইন অনুযায়ী এক কোম্পানির সীমানায় অন্য কোম্পানি বিদ্যুৎ বিতরণ করতে পারে না। কিন্তু এখনও দেশের কোথাও কোথাও এই সমস্যা রয়ে গেছে। সমাধানের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা করছে। কিন্তু বিতরণ কোম্পানিগুলো অনেক ক্ষেত্রেই মন্ত্রণালয়কে পাত্তা দিচ্ছে না। কোথাও কোথাও তারা নিজেরা উচ্চ আদালতে গেছে। শ্রমিকদের দিয়ে আন্দোলন সৃষ্টি করে পরিস্থিতি ঘোলা করার চেষ্টাও হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে এমন বিরোধ থাকা দুঃখজনক বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, ‘কিছু কিছু এলাকায় আমাদের সঙ্গে ডেসকোর সীমানার সমাধান হয়নি। সেসব নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।’

তিনি বলেন, ‘বিইআরসি ২০০৮ সালে যখন লাইসেন্স দেয় তখন ভৌগলিক সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তাতে গাবতলীর রাস্তার পশ্চিম পাশের এলাকায় ডিপিডিসিকে দেওয়া হয়। আর বেতার, নিউরোসায়েন্সসহ আশেপাশের এলাকায় ডেসকোকে দেওয়া হয়। ওই সময় ডিপিডিসি ডেসকোকে তাদের এলাকা বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু ডেসকো এখনও আমাদের এলাকা বুঝিয়ে দেয়নি। ওই এলাকা এখনও তাদের বলেই তারা দাবি করছে।’

বিকাশ দেওয়ান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা এখন মন্ত্রণালয়ের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। তারা যা সিদ্ধান্ত দেবে তাই আমরা মেনে নেবো।’

তবে ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিদ সারওয়ার বলেন, ‘ডিপিডিসির কাছ থেকে তো ডেসকো এলাকা বুঝে নেয়নি। ১৯৯৪ সালে যখন ডেসা থেকে ডেসকো আলাদা করা হয়, তখনই এই এলাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা সেভাবেই পরিচালনা করছি। গাবতলীর খালের পাশ দিয়ে রাস্তা হয়েছে। সেই রাস্তার কারণে কিছু এলাকা রাস্তার ওপারে পড়েছে। কিন্তু এলাকা তো ডেসকোরই। ডেসার আমল থেকেই যত কাগজপত্র আছে সব আমাদের নামেই আছে। সেই সময়েই সম্পত্তিসহ সব আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’

বিইআরসির লাইসেন্সের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় ভুল হয়। বর্ণনা দিতে গিয়ে ভুল হয়েছে। এইরকম কিছু হয়েছে। কাগজপত্র অনুযায়ী সব গ্রাহক, সব লাইন ডেসকোর। ডেসা থেকেই ডেসকোর জন্ম।’

শাহিদ সারওয়ার আরও বলেন, ‘ভৌগলিক সীমানা নিয়ে কোনও বিরোধ নেই। এর বিনিময়ে ডিপিডিসিকে শেয়ার দেওয়া হয়েছে। ডেসকোর প্রায় ১৭৯ কোটি টাকার শেয়ার পিডিবির পরিবর্তে ডিপিডিসিকে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় আমরা কেন ডিপিডিসিকে জায়গা বুঝিয়ে দেবো? ওটা ওদের এলাকায় নয়।’ ওই এলাকায় বড় বড় গ্রাহক থাকায় তারা (ডিপিডিসি) ওই এলাকা চাইছে বলে দাবি করেন তিনি।

বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন একজন কমর্কতা বলেন, ‘বিষয়টি সমাধানের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি দুই পক্ষের সব কাগজপত্র দেখে সিদ্ধান্ত দেবেন।’ খুব শিগগির এ বিষয়ে একটি সমাধান আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

/এইচআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা
সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর: শেখ হাসিনা
কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে: রাষ্ট্রপতি
কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে: রাষ্ট্রপতি
দিনাজপুরে একসঙ্গে ২০ হাজার কণ্ঠে গীতা পাঠ
দিনাজপুরে একসঙ্গে ২০ হাজার কণ্ঠে গীতা পাঠ
উপজেলা নির্বাচন আগের যে কোনও নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে: ইসি হাবিব
উপজেলা নির্বাচন আগের যে কোনও নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে: ইসি হাবিব
সর্বাধিক পঠিত
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পেলো হামাস
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
বিক্রি না করে মজুত, গুদামে পচে যাচ্ছে আলু
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই