X
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
১৩ আষাঢ় ১৪৩২

ভুতুড়ে বিলের ব্যাখ্যায় যা বলছে মিটার কোম্পানি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:১৮আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:১৮

নানা সময় পল্লী এলাকার গ্রাহকদের ভুতুড়ে বিলের সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যা সমাধানে আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে মিটার কোম্পানি বি অ্যান্ড টি গ্রুপ।

গ্রুপটির ডিরেক্টর এম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মিটার একটি যন্ত্র। নানা কারণে তা নষ্ট হতে পারে। তাই মিটার নিয়ে কোনও বিভ্রান্ত বা আতঙ্কিত না হয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে তার সমাধান পাওয়া যাবে।’

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই পরামর্শ দেন।

এম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক প্রায় তিন কোটির ওপরে। তাদের ব্যবহৃত মিটারের মধ্যে যদি এক শতাংশও নানা কারণে নষ্ট হয়, তা খোলা চোখে কম না। কিন্তু পরিসংখ্যানের দিক থেকে এটা অনেকটা স্বাভাবিক। কারণ মিটার একটি মেশিন। এটি নানা কারণেই নষ্ট হয়। এর মধ্যে মিটার বেশি পুরানো হলে, ট্যাম্পারিং করা বা চেষ্টা করা হলে অথবা বজ্রপাত হলে নষ্ট হয়ে থাকে। এছাড়া মিটারের গ্রাউন্ডিং কানেকশন সঠিকভাবে না থাকায় এই সমস্যা বেশি হয়। এর মধ্যে ওয়ারেন্টি থাকলে সেই মিটার নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গেলে তা ঠিক বা পরিবর্তন করে দেওয়া হয়।’

নষ্ট মিটার বোঝার উপায়

মিটার নষ্ট কিনা তা বোঝার উপায় মিটারের মধ্যেই আছে জানিয়ে এম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘মিটারের মধ্যে ইমপালস লাইট থাকে (ছোট ফোটার মতো), যা বিদ্যুৎ চলাকালীন সময় জ্বলতে-নিভতে থাকে। এর মাধ্যমে বোঝা যায় মিটার ঠিক চলছে। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকার পরও যদি এই লাইট অনিয়ন্ত্রিতভাবে জ্বলতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে মিটারটিতে সমস্যা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই ফিচারটি মিটারে যুক্ত করা হয়েছে, যাতে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ চলে গেলে সেটি দেখে বুঝতে পারে মিটার ঠিকমতো চলছে কিনা। যদি এই সমস্যা দেখা দেয় তাহলে দ্রুত পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। তা না হলে বিল বেশি আসতে পারে।’

নষ্ট মিটারে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করার আধুনিক ব্যবস্থা করা যায়। সেক্ষেত্রে মিটারের দাম অনেক বেড়ে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু এক থেকে দুই শতাংশ গ্রাহক এই সমস্যার সম্মুখীন হন, তাই বাকি গ্রাহকদের ওপর মিটারের বাড়তি খরচ চাপিয়ে দেওয়া যৌক্তিক না। সতর্ক থাকলেই নষ্ট মিটার চিহ্নিত করা যায় এবং ভুতুড়ে বিলের ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।’

বিল কেন বেশি আসে

বিল বেশি আসার মূল কারণ দুইভাবে প্রকাশ করা যায় জানিয়ে এম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘অনেক গ্রাহক বলেন ব্যবহারের চেয়ে বেশি বিল আসে। মিটারের ব্যবহারের চেয়ে বিদুৎ বিল বেশি আসা সম্ভব না, যদি মিটার ঠিক থাকে। মিটার নষ্ট হলে বিল বেশি আসে। আবার বিগত সরকার কয়েক দফা বিদ্যুৎ বিল বাড়ানোর কারণে ধারাবাহিকভাবে বিলও বাড়ে। এক্ষেত্রে কত বাড়ছে তা অনেক গ্রাহকই ধরতে পারেন না। তাই কেবল মিটারের কারণেই বিল বেশি আসে এমন ধারণা অনেকের। তাছাড়াও বৈদ্যুতিক জিনিসের ব্যবহারের হারও অনেক অংশে বেড়েছে, যা গ্রাহকরা গণনা করেন না। যার কারণে সঠিক বিল এলেও তাকে বেশি মনে করা হচ্ছে।’

পল্লী বিদ্যুতের মিটারের মান

পল্লী বিদ্যুৎ নিম্নমানের মিটার ক্রয় করে ধারণাটি ঠিক না জানিয়ে বি অ্যান্ড টি গ্রুপের ডিরেক্টর বলেন, ‘বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) তাদের নির্ধারিত টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশনের বাহিরে কোনও মিটার ক্রয় করে না। আমাদের মিটার নষ্ট হওয়ার হার ১.৫ শতাংশের বেশি নয়। আমাদের জানামতে বিগত তিন বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কোনও বাংলাদেশি মিটার প্রস্তুতকারীর মিটার নষ্টের হার ৩ শতাংশের বেশি নয়। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিআরইবি প্রায় ১৫ লাখ মিটার ক্রয় করে, যেখানে গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে তিন কোটির বেশি। যদি অনেক মিটার নষ্ট হতো তবে বিআরইবি বছরে সর্বনিম্ন প্রায় ৪০ থেকে ৬০ লাখ মিটার ক্রয় করতো শুধু নষ্ট মিটার পরিবর্তন করার জন্য। এর পাশাপাশি নতুন কানেকশনের জন্য ক্রয় করতে হতো আরও কয়েক লাখ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া খোলা বাজারে যেসব মিটার পাওয়া যায় তা বিআরইবি এর টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন সাপোর্ট করে না। তার পরও সেসব মিটারের মূল্য আমাদের ওপেন টেন্ডরের মাধ্যমে সরবরাহকৃত মিটারের মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। মধ্যম আয়ের গ্রাহকের জন্য বিআরইবি এ রকম মিটার না ক্রয় করে লোকাল বাজার থেকে গ্রাহককে মিটার ক্রয় করতে দিলে মধ্যম আয়ের গ্রাহকের খরচ আরও বাড়তো। তাই দুর্নীতির মাধ্যমে ক্রয় বিষয়টিও সঠিক নয়।’

/জেডএ/আরআইজে/
সম্পর্কিত
৮ আগস্ট ‘বিপ্লব বেহাত দিবস’ পালনের হুঁশিয়ারি ইনকিলাব মঞ্চের
আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে অনাস্থা শিক্ষার্থীদের, গণশুনানির আলটিমেটাম
প্রধানমন্ত্রীর সময়সীমার প্রস্তাব বিএনপি আট বছর আগে দিয়েছে: আমির খসরু
সর্বশেষ খবর
জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
বিএসসির বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন দুটি জাহাজ, দরপত্র আহ্বান
বিএসসির বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন দুটি জাহাজ, দরপত্র আহ্বান
জোহরান মামদানি কি একজন কমিউনিস্ট?
জোহরান মামদানি কি একজন কমিউনিস্ট?
ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৯
ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৯
সর্বাধিক পঠিত
পরীক্ষায় বাড়তি সময় না দেওয়ায় পরিদর্শককে মারধর ছাত্রদল নেতার, দিলেন হত্যার হুমকি
পরীক্ষায় বাড়তি সময় না দেওয়ায় পরিদর্শককে মারধর ছাত্রদল নেতার, দিলেন হত্যার হুমকি
জাতীয়করণ নয়, এমপিওভুক্তির আওতায় আসছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা
জাতীয়করণ নয়, এমপিওভুক্তির আওতায় আসছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা
ইরান-রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেছে চীন
ইরান-রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেছে চীন
বিরোধীদের নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ নয়: দ্য ইকোনমিস্ট
বিরোধীদের নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ নয়: দ্য ইকোনমিস্ট
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জন্য নতুন এমপিও নীতিমালা জারি
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জন্য নতুন এমপিও নীতিমালা জারি