খাদ্য মন্ত্রণালয় পরিচালিত খোলাবাজারে ‘ট্রাক সেল’ কর্মসূচি বন্ধে আবারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডিলাররা। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) থেকে ‘ট্রাক সেল’ বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করবেন ডিলাররা। তাদের দাবি অনুযায়ী খোলাবাজারে খাদ্যপণ্য বিক্রির ওপর কমিশন না বাড়ানোর কারণে বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে সমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের পর বিকালে ‘ট্রাক সেল’-ওএমএস ডিলার সমিতির সভাপতি আলমগীর সৈকত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘আমরা ধর্মঘটে যাচ্ছি। আগামী ৭ নভেম্বর থেকে থেকে ‘ট্রাক সেল’ কর্মসূচি বন্ধ রাখা হবে।’’ প্রসঙ্গত, বর্তমানে ডিলাররা প্রতিকেজি চাল বিক্রির ওপর দেড় টাকা এবং আটায় একটাকা কমিশন পান। তারা শুরু থেকে চাল ও আটায় দুই টাকা কমিশনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
উল্লেখ্য, এর আগেও গত ৫ অক্টোবর থেকে কমিশন বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছিল ওএমএস ‘ট্রাক সেল’ ডিলার সমিতি। পরে কমিশনের আশ্বাস পেয়ে ধর্মঘট থেকে ফিরে আসেন ডিলাররা। তবে গত একমাসেও খাদ্য মন্ত্রণালয় কমিশনের সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় আবারও ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেয় ওএমএস ‘ট্রাক সেল’ ডিলার সমিতি।
গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে হঠাৎ করেই চালের দাম বেড়ে যায়। এরপর সমালোচনার মুখে খোলাবাজারে প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকায় এবং আটা ১৭ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয় এ কর্মসূচি শুরু করে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই ‘ট্রাক সেল’ কর্মসূচিতে ডিলারদের জন্য প্রতিকেজি চালে দেড় টাকা এবং আটায় একটাকা কমিশন নির্ধারণ করা হয়। প্রতিদিন রাজধানীতে ১২০টি স্থানে ট্রাকে চাল ও আটা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। তবে শুরু থেকেই আতপ চালের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ ছিল কম। আতপ চাল খাওয়ার অভ্যাস না থকার কারণে লোকজন চাল কিনতে আগ্রহ দেখাননি বলে জানান ডিলাররা।
জুরাইনের ‘ট্রাক সেল’ ডিলার হাজি আব্দুল খালেক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘একে তো জোর করে আতপ চাল খাওয়াতে হচ্ছে, এর পর কমিশন কম। তাই লোকসান দিয়ে নিত্যপণ্য চাল ও আটা বিক্রির কর্মসূচি চালাতে চান না ওএমএস ‘ট্রাক সেল’ ডিলাররা। লাইসেন্স বাঁচাতে বাধ্য হয়েই তবু এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া।’’
‘ট্রাক সেল’ ওএমএস ডিলার সমিতি’র সভাপতি আলমগীর সৈকত বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘চেষ্টা করেও জনগণকে আতপ চাল খাওয়ানো যাচ্ছে না। অন্যদিকে, সরকার কমিশনও বাড়াচ্ছে না। এ অবস্থায় ডিলাররা বৃহস্পতিবারও (২ নভেম্বর) ৮০টি ডিও নিয়েছে।’
হাজি আব্দুল খালেক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চাল ও আটা মিলিয়ে প্রতিদিন দুই মেট্রিক বিক্রি হয় না। আটার চাহিদা থাকলেও আতপ চাল কেউ নিতে চায় না। তাই প্রতিদিনের বেঁচে যাওয়া চাল যোগ করে পরদিন আবার দুই মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করেন ডিলাররা।’
আগে ধর্মঘট ডেকে তা প্রত্যাহার করার পর ‘ট্রাক সেল’ ওএমএস ডিলার সমিতি’র সভাপতি আলমগীর সৈকত জানিয়েছিলেন, ‘মন্ত্রণালয় চালে দেড় টাকা কমিশন বাড়িয়ে দুই টাকা এবং আটায় একটা থেকে কমিশন বাড়িয়ে দুই টাকা করার আশ্বাস দেয় মন্ত্রণালয়। তাই ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়।’
আলমগীর সৈকত আরও বলেন, ‘মন্ত্রণালয় কমিশন বাড়ানোর ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আবার ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’