X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

আমানতের চেয়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ব্যাংক খাতে

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
৩১ জুলাই ২০১৮, ০৭:২৭আপডেট : ৩১ জুলাই ২০১৮, ০৭:৩৮

বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক খাতে ২০১৭ সালে আমানতের পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ১১.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে ঋণ বিতরণের পরিমাণ বেড়েছে ১৮.৯ শতাংশ। ‘ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট-২০১৭ এ এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সোমবার (৩০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে রিপোর্টটির মোড়ক উম্মোচন করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল এর মোড়ক উম্মোচন করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধান নির্বাহীরা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটি ও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি এর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আহমেদ জামাল আর্থিক খাতে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘ইতোমধ্যে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ফাইন টাচ এর বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ শুরু করেছে। আর্থিক লেনদেনে সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবেলায় সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা অব্যাহতভাবে উন্নীতকরণে ভূমিকা রাখতে হবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে। ক্রমবর্ধমান আমদানি ব্যয় পরিশোধের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালার যথাযথ পরিপালনে সকলকে সতর্ক দৃষ্টি রাখাতে হবে।’ একই সঙ্গে রফতানি মূল্য প্রত্যাবাসন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পাদনের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

ডেপুটি গভর্নর বলেন, ‘২০১৭ সালে কিছু ব্যাংকে সাময়িক তারল্য চাপ অনুভূত হলেও সার্বিকভাবে তারল্য পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে ছিল।’ ব্যাংকিং খাতে সম্পদের গুণগত মান বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি নতুন ঋণ ও আগাম প্রদানে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহকে অধিকতর সতকর্তা অবলম্বনের পরামর্শ দেন। তিনি মোবাইল ফোনে বা ই-মেইলে বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ পরিহার করার আহবান জানান।

ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টে বলা হয়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে আমদানি বাণিজ্য বেড়েছে ৯.০ শতাংশ, রফতানি বাণিজ্য বেড়েছে ১.৭ শতাংশ এবং ওয়েজ আর্নার’স রেমিটেন্স ১৩.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

ব্যাংকিং খাতের কর্মদক্ষতা: ২০১৭ সালের শেষে ব্যাংকিং খাতের সম্পদ ১২.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ২০১৭ সালে ব্যাংকিং খাতে মূলধন ও ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের অনুপাত ১০.৮ শতাংশে অপরিবর্তিত ছিল যা আবশ্যকীয় ন্যূনতম হার (১০ শতাংশ) অপেক্ষা বেশি। ব্যাংকিং খাতের নিট মুনাফা (নিট আয় হতে সঞ্চিতি ও কর বাদে) ১৪.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে কিছু ব্যাংকে সাময়িক তারল্য চাপ অনুভূত হলেও সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতের তারল্য পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে ছিল। বছর শেষে আগাম-আমানত অনুপাত ছিল ৭৫.৯। ব্যাংকিং খাতে ২০১৭ সালে মোট শ্রেণিকৃত ঋণের হার ছিল ৯.৩ শতাংশ এবং নিট শ্রেণিকৃত ঋণের (রক্ষিত প্রভিশন সমন্বয়ের পর) হার ২.২ শতাংশ ছিল। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট শ্রেণিকৃত ঋণের হার দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪.৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৭ সালে ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি সহনীয় মাত্রায় ছিল। ব্যাংকিং খাতের মোট ঝুঁকি ভিত্তিক সম্পদের মধ্যে ঋণ ঝুঁকির পরিমাণ ছিল ৮৮ শতাংশ। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানসমূহের ক্রেডিট রেটিং অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থিতিশীল ছিল। এতে আরও বলা হয়, ২০১৭ সালে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মূলধন পর্যাপ্ততার হার ছিল ১৩.৫ শতাংশ যা ন্যূনতম আবশ্যিক হারের (১০ শতাংশ) তুলনায় বেশি। আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের শ্রেণিকৃত ঋণ ও লিজের হার ৭.৩ শতাংশ ছিল। এছাড়া ২০১৭ সালের বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা সহনীয় পর্যায়ের ছিল। মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান হ্রাস পেয়েছে। মূল্যমানের হিসেবে আমদানি ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তি উভয় ক্ষেত্রেই ২০১৬ সাল অপেক্ষা যথাক্রমে ১৬.৯ ও ০.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।

রিপোর্টটিতে বলা হয়, ২০১৭ সালে আর্থিক বাজার কাঠামোতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বন্ড/ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ নীতিমালা, ঋণ শ্রেণিকরণ/সঞ্চিতি সংরক্ষণ নীতিমালা, এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা, ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার সংক্রান্ত নীতিমালা, ঋণ-আমানতের সুদের হার পুনর্বিবেচনা ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন ও বিদ্যমান নীতিমালা যৌক্তিক পর্যায়ে পরিমার্জন ও সংশোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজী হাসান, ব্যাংকিং রিফর্ম অ্যাডভাইজার এস. কে. সুর চৌধুরী, প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. ফয়সল আহমেদ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. স্বপন কুমার বালা, ইন্সুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটির নির্বাহী পরিচালক কাজী মনোয়ার হোসেন, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এর কোষাধ্যক্ষ এম. এ. হালিম চৌধুরী, বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ এসোসিয়েশন এর সহসভাপতি এস.এম. ফরমানুল ইসলাম এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী আনিস এ. খান।

 

 

/জিএম/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মননের প্রথম আইএম নর্ম, হাতছানি জিএম নর্মের
মননের প্রথম আইএম নর্ম, হাতছানি জিএম নর্মের
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার হুমকি আব্বাসের
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার হুমকি আব্বাসের
টি-টোয়েন্টির পাওয়ার প্লেতে ১২৫ রান করে হায়দরাবাদের বিশ্ব রেকর্ড!
টি-টোয়েন্টির পাওয়ার প্লেতে ১২৫ রান করে হায়দরাবাদের বিশ্ব রেকর্ড!
জানা গেলো বেইলি রোডে আগুনের ‘আসল কারণ’
জানা গেলো বেইলি রোডে আগুনের ‘আসল কারণ’
সর্বাধিক পঠিত
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল
সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
দেশের ৯ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি, পারদ উঠতে পারে আরও
দেশের ৯ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি, পারদ উঠতে পারে আরও