X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

দাম কমেছে ১৩ পণ্যের

গোলাম মওলা
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:৩৪আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:৩৭

দাম কমেছে ১৩ পণ্যের মানুষের বেশকিছু দরকারি নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও অন্তত ১৩ পণ্যের দাম কমেছে। সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবি’র তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে আমদানি করা রসুনের দাম কমেছে ৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের এই সময়ে আমদানি করা যে রসুন ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, বর্তমানে সেই রসুন ৮০ থেকে ৯০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া দেশি রসুনের দাম কমেছে ২৬ শতাংশ।

অবশ্য টিসিবি’র তথ্য অনুযায়ী, রসুনের দাম কমলেও সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। টিসিবি’র তথ্য মতে, গত এক বছরে ইলিশ মাছের দাম কমেছে ১৭ শতাংশ। এ সময়ে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে ১৪ শতাংশ। এছাড়া আটা ও ময়দার দাম কমেছে যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও ৫ শতাংশ। এক বছরে ছোলার দাম কমেছে ৬ শতাংশ। অ্যাংকর ডালের দাম কমেছে ১০ শতাংশ। একইভাবে দেশি হলুদের দাম কমেছে ১২ শতাংশ, জিরার দাম কমেছে ৬ শতাংশ এবং লবঙ্গের দাম কমেছে ১১ শতাংশ।

তবে টিসিবি’র হিসাবে গত এক  মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০০ শতাংশ, আর আমদানি করা পেয়াজের দাম বেড়েছে ১৭২ শতাংশ। গত এক সপ্তাহেই দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ, আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। এছাড়া গত এক বছরে সব ধরনের সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

বর্তমানে এক কেজি আলু কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৪০ টাকা। গত বছরের এই সময়ে এই পণ্যটির দাম ছিল ২০ টাকা। টিসিবি’র হিসাবে গত এক বছরে আলুর দাম বেড়েছে ৬৫ শতাংশ।

টিসিবি’র তথ্য মতে, গত এক বছরে চিকন, মাঝারি ও মোটা এই তিন ধরনের চালের দামই বেড়েছে। গত এক বছরে গরিবের মোটা চালের দাম বেড়েছে ২২ শতাংশ। চিকন চালের দাম বেড়েছে ৯ শতাংশ, আর মাঝারি মানের চালের দাম বেড়েছে ১ শতাংশ।

বাজারে এখন ৪২ টাকার নিচে কোনও চালই নেই। ভালো মানের মিনিকেট, নাজিরশাইল চাল কিনতে লাগছে কেজিতে ৫৬ থেকে ৬৪ টাকা।

শুধু তাই নয়, গত এক বছরে চার ধরনের ভোজ্য তেলের দামই বেড়েছে। খোলা পাম ওয়েলের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ, পাম ওয়েল সুপারের দাম বেড়েছে ১৯ শতাংশ, বোতলজাত সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। আর খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৮ শতাংশ।

মোটা মসুর ডালের দাম এখন ৭০-৭৫ টাকা প্রতিকেজি, দেশি ছোট দানার মসুর ডাল ১২০ টাকা। টিসিবি’র হিসাবে গত এক বছরে চার ধরনেরর ডালের দাম বেড়েছে। মশুর ডালের ( বড় দানা) দাম বেড়েছে ২১ শতাংশ। মশুর ডালের ( মাঝারি দানা) দাম বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। আর  ছোট দানা মশুর ডালের  দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ। এছাড়া মুগ ডালের দাম বেড়েছে ১৯ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে মুগদা এলাকার নাসিরুল হক বলেন, ‘আগে ব্যাগ ভর্তি জিনিস কিনতে বাজারে যেতাম। এখন দুটি বা তিনটি পণ্য কিনেই টাকা শেষ হয়ে যায়।’ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা আজিজুল ইসলাম বলছিলেন, চার জনের সংসার চালাতে তিনি হিমসিম খাচ্ছেন। কারণ, সব কিছুরই দাম বাড়তি। 

তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে সব ধরনের আদার কেজি ১৬০ টাকার ওপরে। চীন থেকে আমদানি করা আদা কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ২৪০ টাকার বেশি দামে।

কাঁচাবাজার (ছবি: ফোকাসবাংলা) টিসিবি’র হিসাবে গত এক বছরে আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশ। আর দেশি আদার দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে দেশি শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে ২৬ শতাংশ। আমদানি করা শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে ৯ শতাংশ। আমদানি করা হলুদের দাম বেড়েছে ৩ শতাংশ। দারুচিনির দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ, এলাচের দাম বেড়েছে ১১ শতাংশ। টিসিবি বলছে, গত এক বছরে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ, খাসির মাংসের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশ, গুঁড়া দুধের মধ্যে ফ্রেস মিল্কের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ, মার্কসের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ, ডিপ্লোমোর দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ এবং ডানোর দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ। টিসিবির হিসাবে গত এক বছরে ডিমের দাম বেড়েছে ৩ শতাংশ এবং চিনির দাম বেড়েছে ৬ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘শুধু পেঁয়াজ নয়, যেভাবে  পণ্যের দাম অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে বেশকিছু পণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদে সমস্যার সমাধানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র বিভাগ চালু করা দরকার।’  তিনি উল্লেখ করেন, ভোক্তাস্বার্থ বিবেচনা ও জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে রাখার উদ্দেশ্যে ১৫ থেকে ২০টি  খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য চিহ্নিত করা জরুরি। সেসব পণ্যের সরবরাহ পরিস্থিতি সন্তোষজনক পর্যায়ে এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখার দায়িত্ব দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি পৃথক বিভাগ, অথবা একটি স্বতন্ত্র ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করা এখন সময়ের দাবি।

এদিকে করলা, বরবটি, চিচিঙ্গা, বেগুন, কাঁকরোলসহ বেশির ভাগ সবজির দামই এখন প্রতিকেজি ৬০ টাকার ওপরে। সবচেয়ে কম দামি সবজি পেঁপের দামও ৩৫-৪০ টাকা কেজি। পটল ৫০ টাকা কেজি। টমেটো ১২০ টাকা কেজি। বেগুন ও বরবটি ৮০ টাকা কেজি। এ ছাড়া কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজি। ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজি ১২০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ১১০ টাকা ডজন। ফার্মের হাঁসের ডিম কিনতে লাগছে ডজন ১৫০ টাকা। গরুর মাংসের দাম এখন ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি।

 

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা