বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে গঠিত রিফর্ম টাস্কফোর্স আরও ১১টি ব্যাংকের সম্পদ যাচাই (অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে গত ১৫ বছরে অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিল বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
নতুন করে যাচাইয়ের আওতায় আসা ব্যাংকগুলো হলো—ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), আইএফআইসি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক অডিট প্রতিষ্ঠানগুলো এই রিভিউ সম্পন্ন করবে। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আরও ১১টি ব্যাংকের ‘অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ’ করা হবে। তবে তিনি ব্যাংকগুলোর নাম প্রকাশ করেননি।
এ বিষয়ে ‘ব্যাংক রিসট্রাকচারিং অ্যান্ড রেজ্যুলেশন ইউনিট’ নামে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে গঠিত একটি নতুন ইউনিট কাজ করছে। এরই মধ্যে ইরনেস্ট অ্যান্ড ইয়াং এবং কেপিএমজি ছয়টি ব্যাংকের সম্পদ যাচাই সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে ইরনেস্ট অ্যান্ড ইয়াং—এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামি ব্যাংকের এবং কেপিএমজি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের রিভিউ করেছে।
জানা গেছে, প্রতিটি ব্যাংকের জন্য একজন করে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যাতে নিরপেক্ষভাবে ও যথাযথভাবে অডিট কার্যক্রম পরিচালিত হয়। একইভাবে প্রতিটি অডিট প্রতিষ্ঠান থেকেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রিভিউয়ের আওতায় আসবে—ব্যাংকের আর্থিক নীতিমালা, সম্পদের ঝুঁকি ও মূল্যায়ন, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ঋণ শ্রেণিকরণ ও পুনঃতফসিলকরণ, একক ঋণগ্রহীতা ও বৃহৎ ঋণসীমা, বড় খেলাপিদের অবস্থান এবং হিসাব নীতিমালা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত দিকগুলো। পাশাপাশি তারল্য ও বিনিয়োগ নীতিও পর্যালোচনা করা হবে।