সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের চারটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন জানান, সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের চারটি প্রস্তাবই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ভোলা জেলায় ৪০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো এবং বর্ধিত মেয়াদের জন্য ট্যারিফ প্রস্তাব; ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্রিড টাইড সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দরপ্রস্তাব; ‘বাপবিবো’র বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্পের আওতায় ৩২ হাজার ৪০০টি এসপিসি পোল কেনার প্রস্তাব; পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় ৭০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতার গ্রিড টাইড সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রস্তাব।
অতিরিক্ত সচিব সামসুল আরেফিন জানান, ভোলা জেলায় ৪০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো এবং বর্ধিত মেয়াদের জন্য ট্যারিফ প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পন্সর কোম্পানি ভেঞ্চার এনার্জি রিসোর্স লিমিটেডের সঙ্গে সরকারের বর্ধিত চুক্তির মেয়াদ (চারবারে ৯ বছর) গত বছরের ১১ জুলাই শেষ হয়। পিজিসিবি কর্তৃক ভোলা জেলায় ২৩০/৩৩ কেভি ট্রান্সফরমার স্থাপনসহ চালু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আবার চার বছর বাড়ানোর প্রয়োজন।
পিইসি কর্তৃক স্পন্সর কোম্পানির সঙ্গে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশ করা মূল চুক্তির ধারাবাহিকতায় ভোলা জেলায় ৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ ২০২১ সালের ১২ জুলাই থেকে চার বছর বাড়ানোর জন্য উদ্যোক্তা সংস্থার সঙ্গে ট্যারিফ কিলোওয়াট/ঘণ্টা ২.৭১৭৬ টাকা হিসেবে ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে সংশোধিত চুক্তি সম্পাদনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্ধিত মেয়াদে স্পন্সর কোম্পানিকে ৩৮০ কোটি ৯০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। বর্ণিত প্রস্তাবে ট্যারিফ আগের তুলনায় কম হওয়ায় প্রায় ৪৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয় সাশ্রয় হবে।
সভায় অনুমোদিত বিদ্যুৎ বিভাগের অন্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ‘বাপবিবো’র বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্পের আওতায় ৩২ হাজার ৪০০টি এসপিসি পোল কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের প্যাকেজ নং এ-২১, লট-১ এর আওতায় ৩২ হাজার ৪০০টি এসপিসি পোল কেনার জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে, যার সবগুলোই রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এবং পোলস অ্যান্ড কনক্রিট লিমিটেড এসপিসি পোলগুলো সরবরাহ করবে। এজন্য ব্যয় হবে ৩১ কোটি ৩৫ লাখ ৫৯ হাজার ৩৮৮ টাকা।
এদিকে, ময়মনসিংহ ও পাবনায় ৩ হাজার ১৫৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতার গ্রিড টাইড সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দুটি পৃথক প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
২০ বছর মেয়াদে ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ কিনতে প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা ৮ দশমিক ১২ টাকা হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৮৪৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। প্রাইভেট সেক্টর পাওয়ার জেনারেশন পলিসি-১৯৯৬ এর আওতায় বিল্ড ওন অপারেশন (বিওও) ভিত্তিতে আইপিপি হিসেবে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে দাইহান গ্রিন অ্যানার্জি কোম্পানি লিমিটেড, এইচআই কোরিয়া কোম্পানি লিমিটেড এবং পাবনা সোলার পাওয়ার লিমিটেড।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্রিড টাইড সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দরপ্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। ২০ বছর মেয়াদে প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা ৮ দশমিক ১২ টাকা হিসেবে উদ্যোক্তা সংস্থাকে আনুমানিক ১ হাজার ৩১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। প্রাইভেট সেক্টর পাওয়ার জেনারেশন পলিসি-১৯৯৬ এর আওতায় বিল্ড ওন অপারেশন (বিওও) ভিত্তিতে আইপিপি হিসেবে বিদ্যুৎ-কেন্দ্রটি টোটাল ইরেন এস এ ফ্রান্স, নরওয়ে রিনিওবলস গ্রুপ, নরওয়ে এবং আরবান সার্ভিসেস লিমিটেড, বাংলাদেশ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
