X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

তনু হত্যাকাণ্ড ও নাটকীয় ময়নাতদন্ত

ফারজানা হুসাইন
১৭ জুন ২০১৬, ২২:১০আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০১৭, ১৮:৫১




১.
ফারজানা হুসাইন সংবাদপত্রের পাতায় প্রথম জানলাম, মার্চ মাসের ২০ তারিখে তনু নামের মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে, মৃতদেহ পাওয়া গেছে কুমিল্লা সেনানিবাস সংলগ্ন এলাকায়। বিকেলে বাড়ি থেকে টিউশনি করতে বের হয়েছিলেন তনু। রাত দশটায়ও যখন বাড়ি ফেরেননি তখন তনুর বাবা তার খোঁজে বের হন। বাড়ি থেকে কিছু দূরেই রক্তাক্ত আর জখম অবস্থায় তনুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হয়, ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে।
ধর্ষণ এদেশে নতুন কোনও ঘটনা নয়; প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, পত্রিকার পাতায় কিছু ঘটনা আসছে, দুই-একদিন আমরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে আলোচনা-সমালোচনা করছি, তারপর আবারও ব্যস্ত হয়ে যাচ্ছি নতুন কোনও ঘটনা বা ইস্যু নিয়ে। তবে অন্য ঘটনাগুলোর মতো পত্রিকার পাতা বা আমাদের আড্ডা- আলোচনা থেকে তনু দ্রুত হারিয়ে যায়নি, কেন তা এক বিস্ময়। তনু হত্যাকাণ্ডে তদন্ত আর পদক্ষেপ গ্রহণে পুলিশ আর প্রশাসনের ধীরগতি, তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও সন্দেহজনক কাউকে গ্রেফতারে অপারগতা ছাপিয়ে যে বিষয়টি সাধারণ মানুষকে হতবাক করেছে, তা হলো তনুর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। মেয়েটির মৃতদেহ কুমিল্লা সেনানিবাসের কাছেই একটা জঙ্গলপূর্ণ এলাকায় জখম আর রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে হত্যার পূর্বে তাকে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা করা হতে পারে। অথচ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হলো ধর্ষণের কোনও আলামত পাওয়া যায়নি, তার মৃত্যুর কারণ অজ্ঞাত!
ওদিকে মেয়েটির ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করা হচ্ছে তনুর পরিবারকে। এ অবস্থায় সাধারণত যেমন হয়, নিহতের পরিবার মান সম্মানের কথা চিন্তা করে চুপ হয়ে যায়, মামলা একসময় থেমে যায়। কিন্তু তনুর পরিবার এ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মেনে নেয়নি। সন্দেহভাজন কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের বদলে তনুর পরিবারকে পুলিশ ও প্রশাসন জিজ্ঞাসাবাদের নামে বারবার হেনস্তা করেছে, তবু তারা মেয়েটির হত্যার বিচারের দাবি থেকে পিছিয়ে আসেনি। সুতরাং মৃত্যুর দশ দিন পর কবর থেকে মৃতদেহ তুলে দ্বিতীয়বারের মতো আবারও ময়নাতদন্ত করা হয়।
তনুর পরিবারের মতো আমরা সচেতন নাগরিকেরা সবাই আবারও আশায় বুক বাঁধি নিশ্চয়ই এবার কোনও আলামত পাওয়া যাবে, মৃত্যুর কারণ জানা যাবে, তদন্তের অগ্রগতি হবে, অপরাধী ধরা পড়বে। কিন্তু, প্রায় তিন মাস পর প্রকাশিত এই দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত ধর্ষণের কথা বলে না, মৃত্যুর কারণ বলতে পারে না, কেবল জানায় তনু যৌন সংসর্গে অভ্যস্ত ছিল, she was habituated to sexual intercourse. হত্যা শব্দটিকে সযত্নে এড়িয়ে মৃত্যুর পূর্বে যৌন সংসর্গের কথা বলা হয়েছে এই রিপোর্টে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আমাদের হাতে নেই, তবে দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, রিপোর্টে উল্লিখিত মৃত্যুর পূর্বে তনুর যৌন সংসর্গে ঐচ্ছিক নাকি জোর পূর্বক তার কোনও সঠিক উত্তর এই ময়নাতদন্তে নেই। পত্রিকার খবর সূত্রে আরও জানা যায়, তনুর মরদেহ থেকে পাওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ডিএনএ এখনও মেলাতে পারেনি মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। অথচ ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এক মাস আগে সিআইডির কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তনুকে হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল। ডিএনএ পরীক্ষায় তার আলামত পাওয়া গেছে।
রিপোর্টের পক্ষে দাবি করা হচ্ছে, মৃত্যুর দশ দিন পর মৃতদেহ কবর থেকে তুলে আবারও ময়নাতদন্ত করা হয়েছে, ততদিনে মৃতদেহ বিকৃত বা ডিকম্পোসড হয়ে গেছে, আঘাতের চিহ্ন ও অবিকৃত থাকেনি। তাই ময়নাতদন্তে নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না তনুর মৃত্যুর কারণ, কিংবা হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা।
যে রিপোর্টে তনুর মৃত্যু রহস্যের কোনও কূল কিনারা করতে পারে না, কেবল জানায় মৃত্যুর পূর্বে যৌন সংসর্গ হয়েছিল, এই রিপোর্ট তনু হত্যাকাণ্ডের কী কাজে আসবে, বিচার প্রক্রিয়াতে কতটা সাহায্য করবে? এই গা-বাঁচানো রিপোর্টের আসল উদ্দেশ্য কী? কাকে বা কাদের নিরাপদ রাখার জন্য এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে?
এই প্রশ্নগুলোর কোনও জবাব নেই, জবাব দেওয়ারও কেউ নেই যেন।

২.
আমাদের দেশে ধর্ষণের অভিযোগ আনার পর ধর্ষণের শিকার নারীর শারীরিক পরীক্ষার নামে আদতে সতীত্ব পরীক্ষা চলে। এই পরীক্ষা কোনও অংশেই প্রগৌতিহাসিক সেই সীতার অগ্নি পরীক্ষার চেয়ে কম দূর্বিষহ আর অপমানজনক নয়। ধর্ষণের পরপর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ধর্ষণের শিকার নারীর যোনিতে দুই আঙুল দিয়ে পরীক্ষা করা হয় তার সতীচ্ছেদ-পর্দা আছে কি না, তার যোনি পথের ল্যাক্সটি বা শিথিলতা, অর্থাৎ মেয়েটি কুমারী কি না এসব দেখা হয়। যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোতে সেক্সচুয়াল এ্যসল্ট ফরেনসিক এভিডেন্স কিট নামের কিছু বিশেষ যন্ত্রপাতির সাহায্যে সহজেই প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হয়। এই আলামত সংগ্রহ করেন বিশেষ প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত নার্স। একইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীকে ক্ষতের চিকিৎসা দেওয়াসহ যৌনবাহিত রোগ ও প্রেগনেন্সি টেস্ট করা হয়। আমাদের দেশে নারী চিকিৎসকের অপ্রতুলতার দরুণ অনেক সময় পুরুষ ডাক্তার এই পরীক্ষা করেন একজন মহিলা পুলিশ বা নার্সের উপস্থিতিতে।
অথচ চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক আগেই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছে যে সতীচ্ছে পর্দার সঙ্গে কুমারীত্ব বা ভার্জিনিটির কোনও সম্পর্ক নেই। যৌন সংসর্গ ছাড়াও বিভিন্ন শারীরিক ক্রিয়া যেমন সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটার সময়েও সতীচ্ছেদ পর্দা ছিন্ন হতে পারে।
যদি আগে থেকে সতীচ্ছেদ পর্দা ছিন্ন না হয়ে থাকে তবে, যেকোনও যৌন সংসর্গে এই পর্দা ছিন্ন হবে, তা সে পারস্পরিক সম্মতিতে যৌন সংসর্গ হোক কিংবা জোরপূর্বক যৌন সংসর্গ বা ধর্ষণ হোক । ধর্ষণ হয়েছে কি না তা বোঝার জন্য যোনিতে আঙুল প্রবেশ করিয়ে টু ফিংগার টেস্ট করার প্রয়োজনীয়তা একেবারেই নেই। ধর্ষণের শিকার নারীর শরীরে পুরুষের শুক্রাণু বা অন্যান্য বডি ফ্লুইডের উপস্থিতি, মেয়েটির শরীরের অন্যান্য অংশের সঙ্গে যোনিপথে বা আশেপাশে আঘাত বা জখম আছে কিনা তা পরীক্ষা করেই নির্ভুলভাবে বলে দেওয়া যায় যৌন সংসর্গ জোরপূবর্ক নাকি সম্মতিতে হয়েছে।
টু ফিংগার টেস্ট করার মাধ্যমে ভার্জিনিটি বা সতীত্ব পরীক্ষা করে ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে আবারও বিপর্যস্ত করা অমানবিক ও অনৈতিক।
যদি কোনও কারণে শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্টে পাওয়া যায় যে, অবিবাহিত মেয়েটির সতীচ্ছেদ পর্দা আগেই ছিন্ন হয়েছে, তবে অগ্র-পশ্চাৎ বিবেচনা না করেই আমরা ধরে নেই মেয়েটি যৌন সংসর্গে আগে থেকেই অভিজ্ঞ, এই মেয়ে কলঙ্কিনী। হ্যাবিটুয়েটেড টু সেক্সচুয়াল ইন্টারকোর্স- এই তকমা যে মেয়ের গায়ে লাগে তার জন্য বিচার পাওয়া তো দূরের কথা, বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়ে এই সমাজে। সবার প্রথমে তার হাত ছেড়ে দেয় পরিবার আর সমাজ। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে মেয়েটিকে ক্রস একজামিনের নামে সবার সামনে হেয় করা হয়, দ্বিতীয়বারের মতো মৌখিকভাবে ধর্ষণ করা হয়। বাংলাদেশের সাক্ষ্য আইন ১৮৭২ এর ১৫৫(৪) ধারা মোতাবেক, আসামি বা অন্য ব্যক্তির সঙ্গে মেয়েটির ব্যক্তিগত জীবন আর অতীত সম্পর্কব নিয়ে প্রশ্ন করে বিপক্ষের আইনজীবী আদালতে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে মেয়েটি অসতী। এমন কলঙ্কিনীকে ধর্ষণ করার তো কিছু নেই, সে স্বেচ্ছায় আসামির সঙ্গে যৌন সংসর্গ করেছে এবং এখন আসামিকে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে। মজার বিষয়, ধর্ষণই একমাত্র অপরাধ যে, অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় ধর্ষণের শিকার নারীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক, অতীত ইতিহাস আদালতে পেশ করে বিচার প্রার্থীর সাক্ষ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। বিচার চাইতে আসলে আগে বিচার প্রার্থীকে প্রমাণ দিতে হয় সে সতী, নিষ্কলুষ। আমাদের সংবিধান যে কোনও অপরাধীর জন্য ফেয়ার ট্রায়াল বা নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করে অথচ ধর্ষণের শিকার নারীর জন্য সুবিচার নিশ্চিত করতে পারে না। মানবাধিকার আইনে প্রত্যেক নাগরিকের রাইট টু প্রাইভেট লাইফ বা ব্যক্তিগত জীবনের অধিকারের কথা বলা হয়েছে, অথচ টু ফিংগার টেস্ট করে ধর্ষণের শিকার নারীর ব্যক্তিগত জীবনাচারণকে আদালত আর মিডিয়ার সামনে তুলে ধরে ব্যক্তির মানবাধিকারকে বিপন্ন করা হয়, নারীর ব্যক্তিগত জীবনের অধিকারকে অস্বীকার করা হয় ।

৩.
আমাদের সমাজে যৌন সম্পর্ক একটি ট্যাবু, এ নিয়ে আমরা কথা বলি না। এ সমাজে ধর্ষণের ঘটনায় এখনও আমরা নারীর দোষ খুঁজি। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির গ্যাং রেইপ কেইসে নির্ভয়া (ছদ্মনাম) নামের মেয়েটা যখন জীবন-মৃত্যুর মাঝামাঝি, তখনও আমাদের প্রশ্ন কেন নির্ভয়া একজন ছেলে বন্ধুর সঙ্গে সন্ধ্যার পর সিনেমা দেখতে গিয়েছিল। মোটা দাগে আমরা দাগাই 'ছেলে বন্ধু' 'সন্ধ্যার পর' আর 'সিনেমাকে'। যেন ধর্ষকের অপরাধকে জাস্টিফাই করা যায় ধর্ষণের শিকার মেয়েটার ছেলে বন্ধুর সঙ্গে রাতে সিনেমা দেখতে যাওয়া দিয়ে।
তনু হত্যাকাণ্ডের পর সমাজের সবার সহানুভূতি তার প্রতি ছিল যখন তনুর হিজাব পরা একটি ছবি জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশ পায়। যেন হিজাব পরা মেয়ে ভালো মেয়ে- তাই আমরা তনু হত্যার বিচার চেয়েছি, রাজপথে নেমেছি। কিন্তু যখন জানা গেল তনু মঞ্চের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তিনি নাটক করতেন, তখন সেই আমরাই দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছি। যেন নাটক করা মেয়ের হত্যার বিচার চাইতে নেই। আর এখন যখন ময়নাতদন্তে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে জোরপূর্বক শব্দটা এড়িয়ে গিয়ে শুধুই যৌন সংসর্গের কথা বলা হচ্ছে, তখন এটুকু বুঝতে বাকি থাকে না তনু হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবির সঙ্গে জনগণের সংশ্লিষ্টতা ছিন্ন করতে, তদন্তকে অন্য খাতে প্রবাহিত করতেই এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
১৯৭২ সালে মাথুরা নামের এক আদিবাসী কিশোরী ভারতের মহারাষ্ট্রের দেশাইপুর পুলিশ স্টেশনে দায়িত্বরত দুইজন পুলিশ কনস্টেবল কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়। প্রথমে মামলা নিতে রাজি নাহলেও, পরবর্তী সময়ে জনতার রোষে থানা ধর্ষণ মামলা নেয়। ধর্ষণের শিকার মাথুরার শারীরিক পরীক্ষা বা টু ফিংগার টেস্টের রিপোর্ট আসে মেয়েটি আগে থেকেই যৌন সংসর্গে অভ্যস্ত ছিল। অর্থাৎ সমাজের তথাকথিত সতীত্বের পরীক্ষায় মেয়েটি পাস করতে পারেনি। আদালতে এই রিপোর্ট উপস্থাপন করে বিপক্ষের আইনজীবী সবার সামনে প্রমাণ করে দেন অসতী মাথুরাকে থানায় ধর্ষণ করা হয়নি, সে স্বেচ্ছায় অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলদের সঙ্গে যৌন সংসর্গ করেছে। যে অবিবাহিত মেয়ের আগেই যৌন অভিজ্ঞতা থাকে, তাকে যেন ধর্ষণ করা হয়, অপরাধ হয় না। মাথুরা রেইপ কেস উচ্চ আদালত পর্যন্ত পৌঁছেও বিচার পায় না 'অসতী' মাথুরা। এই ঘটনার এগারো বছর পর নারী অধিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এনজিও এবং সচেতন নাগরিকদের প্রতিবাদে ভারতীয় ধর্ষণ আইনে পরিবর্তন আনে সরকার । আর মাথুরার ঘটনার সুদীর্ঘ চল্লিশ বছর পর ২০১২ সালের দিল্লী গ্যাং রেইপ-এর পরিপ্রেক্ষিতে আবারও জনগণের আক্রোশের মুখে ভারতীয় সরকার 'টু ফিংগার টেস্ট' নামক অপ্রয়োজনীয় আর নারীর প্রতি অবমাননাকর শারীরিক পরীক্ষার অবসানের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৪ সালে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট টু ফিংগার টেস্টকে ব্যক্তির রাইট টু প্রাইভেসি বা গোপনীয়তার অধিকারের পরিপন্থী উল্লেখ করে এ টেস্টকে বেআইনি ঘোষনা করেন।
দেড়শত বছরের পুরোনো ব্রিটিশ আইন এখনও আমাদের বিচার ব্যবস্থাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে রেখেছে। আর কতজন তনুকে মরতে হবে, কত তনুকে ধর্ষণের শিকার হতে হবে আমাদের এই প্রাচীন আইনের পরিবর্তন আনতে? আর কত তনুকে মৃত্যুর পরও সতীত্বের পরীক্ষা দিতে হবে? ধর্ষণের শিকার মেয়েটির ব্যক্তিগত ও অতীত সম্পর্ক বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন আদালতের সামনে উন্মোচনে বাধা দেয়, এমন একটি রেইপশিল্ড আইনের জন্য আর কত দিনের অপেক্ষায় থাকতে হবে আমাদের?
উত্তরগুলো আমার জানা নেই, আমাদের কারও জানা নেই।
লেখক: আইনজীবী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও মানবাধিকারকর্মী

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ধারণার চেয়ে কম সেনা প্রয়োজন ইউক্রেনের: সিরস্কি
ধারণার চেয়ে কম সেনা প্রয়োজন ইউক্রেনের: সিরস্কি
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
ফিরেই ফর্টিসকে বিধ্বস্ত করলো মোহামেডান
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ