X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট: হিলারি না ট্রাম্প?

রাশেদা রওনক খান
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৬:৫৪আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬, ১৭:০০

রাশেদা রওনক খান আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিতর্ক সংস্কৃতি শুরু হয়েছিল ১৯৬০ সালের নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে এবং সেসময় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রিচার্ড নিক্সন এবং জন এফ কেনেডি। তাদের মধ্যকার বিতর্কটি ছিল আমেরিকার জাতীয় পর্যায়ে টেলিভিশনে প্রচারিত প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক, যা আজ মার্কিন নির্বাচনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে। কেবল তাই নয়, বলা যায় ফল নির্ধারণের সবচেয়ে প্রভাবশালী একটি মাধ্যমও এটা। থিওডোর হোয়াইট তার বইয়ে লিখেছেন, ‘সেই প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠানে চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন নিক্সন অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিলেন সুদর্শন কেনেডির হাসিমুখ, দৃঢ় সংকল্পের চেহারা এবং ব্যক্তিত্বের কাছে। সেদিনেই যেন নির্বাচনের ফলাফল কেনেডির পক্ষে চলে গেলো!’ ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া বিতর্ক অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতায় এটা খুব স্পষ্ট করেই বলা যেতে পারে যে সোমবার রাতের নির্বাচনি বিতর্কটি হিলারি এবং ট্রাম্পের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ!
যাই হোক, শুরু হতে যাচ্ছে আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক-২০১৬। আমেরিকানরা অপেক্ষা করছে এই বিতর্ক দেখার জন্য। অন্য যেকোনও বারের চেয়ে এবারের প্রার্থী হিলারি এবং ট্রাম্পের বিতর্ক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমেরিকানদের কাছে, কারণ, প্রথমত, এই দুই প্রার্থী বিতর্কের আগেই অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন, বিশেষ করে ট্রাম্প। তিনি নিজে বিভিন্ন মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন, প্রতিপক্ষকে কথা বলার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সবচেয়ে নগ্নভাবে বিতর্কিত হয়েছেন। তবে এইধরনের বিতর্ক তৈরি করা তার নির্বাচনি প্রচারণারই একটা কৌশলও হতে পারে বলে অনেকে মনে করেন!  দ্বিতীয়ত, এই প্রথম একজন নারী 'প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্ক'তে অংশ নিতে যাচ্ছেন, সেই হিসেবে তাকে একটা বাড়তি পরীক্ষা দিতেই হবে, সেটা 'প্রগতিশীল' বলে দাবিদার মার্কিন নাগরিকরা মেনে নিক আর নাই নিক! ফলে ট্রাম্পের চেয়ে তাকে বিতর্কে অনেকটাই এগিয়ে থাকতে হবে, নয়তো তীক্ষ্ণতার বিচারে 'নারী' বলে কেউ কেউ ট্রাম্পকে সামনে রাখার সুযোগ পাবে। তৃতীয়ত, হিলারি এবং ট্রাম্প দুজনকেই নিজ নিজ দলের মাঝেও একধরনের তুলনামূলক আলোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। কেননা, হিলারির ক্ষেত্রে তার দলেরই প্রেসিডেন্ট ওবামা তার 'স্পিচ বা বক্তব্য'র জন্য বেশ জনপ্রিয় এবং তিনি বক্তব্য দেওয়াটাকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন যে, তার উত্তরসূরী হিসেবে হিলারির প্রতি আমেরিকানদের প্রত্যাশা অনেক বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। সেই বিবেচনায় হিলারির জন্য এটা অগ্নি পরীক্ষার মতোই একটি কঠিন সময়! আর ট্রাম্প তো নিজ দলেই বিতর্কিত তার 'অপরিপক্ক' , 'বেফাঁস' কথাবার্তার জন্য। মার্কিনিরা তো বটেই খোদ রিপাবলিকানরা তার বিতর্কের চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে একটুও দ্বিধা করবেন না।

অন্যদিকে, হিলারির ক্ষেত্রে ফার্স্ট লেডি, সিনেটর, সেক্রেটারি অব স্টেট- এই তিন পরিচয়ের সঙ্গে বাড়তি যোগ হয়েছে 'আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথমবারের মতো মনোনীত নারী প্রার্থী’!  স্যান্ডির সঙ্গে লড়াইয়ের সময় ‘নারী প্রার্থী’র বিষয়টি খুব আলোচিত থাকলেও এখন অবশ্য এতসব বিষয় সামনে চলে আসায় ‘নারী প্রার্থী'র বিষয়টি আলোচনায় একটু পিছিয়ে পড়েছে। তাছাড়া তরুণ প্রজন্মের নতুন ভোটারদের কাছে এটা ‘বাড়তি পরিচয়’ বলে যে খুব মনে হচ্ছে, তাও না! যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই, পুরো বিশ্বই এখন তাকিয়ে আছে দেখার জন্য যে শেষ পর্যন্ত মার্কিনিরা হিলারিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে গ্রহণ করার জন্য যথেষ্ট সাহসী হতে পেরেছে কিনা! 

তবে এই চার পরিচয়ের মাঝে হিলারি সবচেয়ে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন,‘সেক্রেটারি অব স্টেট’ থাকাকালীন সময়ে। এই পরিচিতিই যেমন জানান দেয় তিনি বলিষ্ঠ প্রার্থী, তেমনি এই পরিচিতির সময়কালটিই এখন তার জন্য বিভীষিকাময় হয়ে উঠছে, তা হলো তার ‘ইমেইল স্ক্যান্ডেল’! ধারণা করা হচ্ছে, নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে আরও কিছু ইমেইল ফাঁস হওয়াসহ নানাভাবে প্রতিপক্ষ তাকে ঘায়েল করতে পারে! আমেরিকার নির্বাচনে অক্টোবর মাসের একটা মিথ আছে, তাহলো- ‘অক্টোবর সারপ্রাইজ’ বা ‘অক্টোবর সারপ্রাইজ’, যেখানে নির্বাচনের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে অক্টোবর মাসে যে প্রার্থী জরিপে এগিয়ে থাকেন তার জন্য একটা ‘নেতিবাচক সারপ্রাইজ’ অপেক্ষা করে, যার মাধ্যমে নির্বাচনি দৌড়ে একটু থমকে যেতে পারেন সেই প্রার্থী!  এবার ২০১৬’র অক্টোবরে এমন কোনও সারপ্রাইজ হিলারির জন্য অপেক্ষা করছে কিনা এবং তা ঘটলে স্মার্ট হিলারি কীভাবে তা সামলে উঠবেন, তা দেখার জন্যও আমেরিকার জনগণ অপেক্ষা করছে! 

ফিরে আসি নির্বাচনি বিতর্ক প্রসঙ্গে। মার্কিনিরা খুব অনুমান করতে পছন্দ করেন। তাই চলছে দু’জন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর বিতর্ক কেমন হতে পারে, কোন কোন বিষয়ে কে কাকে কীভাবে যুক্তি-পাল্টা যুক্তি দিয়ে ঘায়েল করবেন, কীভাবে পরস্পর পরস্পরের মুখোমুখি হবেন, তাকাবেন, হাসি বিনিময় করবেন, হ্যান্ডসেক করবেন ইত্যাদি নিয়ে জল্পনা-কল্পনা, লেখালেখি, কার্টুন, ফটোশপসহ নানান কিছু! এবারের প্রার্থীরা যেহেতু অন্য যেকোনও বারের চেয়ে বেশি বিতর্কিত, তাই এসবের বাইরেও যে বিষয়গুলো বিতর্কে প্রাধান্য পেতে পারে, তা হলো- ট্রাম্প কতটা সংবেদনশীল হয়ে কথা বলতে পারছেন, তাদের পরস্পরের দিকে দৃষ্টি কতটা ভালো কিংবা মন্দ ভাবে উপস্থাপন হচ্ছে, বর্ণ বিদ্বেষী ট্রাম্প কতটা বর্ণবাদী আলোচনা হতে দূরে থাকবেন, বৈদেশিক নীতিতে কার কেমন পরিকল্পনা, অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার পরিকল্পনায় কে কীভাবে তার যুক্তি তুলে ধরছেন ইত্যাদি। 

তারা দু’জনই ইতিমধ্যেই বিভিন্ন উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেছেন জনসম্মুখে, যদিও সেসব উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা কীভাবে ফলপ্রসূ করবেন সে ব্যাপারে দু’জনের ধারণাই খুব অস্পষ্ট। যেমন: চাইল্ড কেয়ার প্ল্যান নিয়ে তারা দু’জনেই কথা বলছেন। ট্রাম্প বলছেন, কর্মজীবী অভিভাবকদের ওপর অর্পিত কর থেকে সন্তান লালন-পালনের জন্য ব্যয়িত অর্থ মওকুফ করা হবে। আর এইক্ষেত্রে হিলারি বলছেন, যারা বেকার বাবা-মামা, তাদের সন্তান পালনের জন্য সরকার হতে প্রণোদনা দেওয়া হবে। এই পরিকল্পনা প্রকাশ পাওয়ার পর অনেকেই বলছেন, বেকার-গরিব অভিভাবকদের জন্য সত্যি বলতে ট্রাম্পের কোনও পরিকল্পনা নেই বরং মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্ত অভিভাবক, যারা আয় করেন, তাদের কর হতে মুক্তি দেওয়ার পথ খুঁজে বেড়াচ্ছেন! হিলারি যেখানে আন-ডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদের জন্য একটা সমাধানের পথ খোঁজার কথা বলছেন, সেখানে ট্রাম্প তাদের তাড়ানোর ব্যবস্থা করে মেক্সিকান সীমান্তে একটা সীমান্ত প্রাচীর গড়ে তুলতেই বেশি আগ্রহী। হিলারি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনটিকে আরেকটু শিথিল করার পক্ষে (অবশ্য 'ইমেইল স্ক্যান্ডেল'-এর পর এই বিষয়টি নিয়ে তিনি হয়তো আপাতত নীরব থাকতে পারেন!)। হিলারি যেখানে উচ্চবিত্তদের আয়ের ওপর অর্পিত কর বাড়ানোর পক্ষে, সেখানে ট্রাম্প গরিব-বেকার-অসহায় নাগরিক নয়, বরং কর্মজীবী সবার করের বোঝা কমাতে আগ্রহী। এসব বিষয়ে আরও স্পষ্ট হওয়া যাবে তাদের তিনটি বিতর্কের পরপরই!

বিতর্কে এসব বিষয়ে উত্থাপনে হিলারি সংবেদনশীল আচরণ করবেন বলেই সবার প্রত্যাশা, তবে ট্রাম্পের জন্য এই বিতর্ক অনেক বড় পরীক্ষা। একে তো ট্রাম্প হিলারির মতো রাজনৈতিক ভাবে অভিজ্ঞ মানুষ নন, তার মধ্যে তার ‘অপরিপক্ক’ ও 'দাম্ভিক' আচরণ তাকে এক্ষেত্রে পিছিয়ে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ট্রাম্পকে অনেক বেশি ‘লো টোন’ বা ‘লেস এগ্রেসিভ’ কণ্ঠে কথা বলতে হবে! এর জন্য তাকে অনেক অনুশীলন করে বিতর্কের মাঠে নামতে হবে! যেমনটি তিনি মেক্সিকানদের বেলায় করেছেন! যে ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেছিলেন হিস্প্যানিকদের অবৈধ অভিবাসী, ধর্ষক, এবং ড্রাগ ডিলার বলে গালি দেওয়ার মধ্যদিয়ে, সেই তিনি কিনা মেক্সিকোতে গিয়ে তাদের ‘গ্রেট পিপল’ বলে এসেছেন!  তাই ট্র্যাম্পকে দিয়ে সবই সম্ভব!

বর্ণবিদ্বেষী বলে পরিচিত ট্রাম্প এখন তার স্বভাবসুলভ ভাঁড়ামো হতে কিছুটা মুক্ত করতে পেরেছেন। ট্রাম্পকে যেসব ভোটার বর্ণ বিদ্বেষী বলে ভোট দেবেন না ঠিক করেছেন, তাদেরকে দলে টানার জন্য ট্রাম্প এখন অনেক কৌশলী হয়ে উঠেছেন! কেননা, ট্রাম্পই সেই ব্যক্তি যিনি কিনা ওবামাকে এতো বছর 'আমেরিকান সিটিজেন' বলে স্বীকারই করেননি এবং সেজন্য ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়াটাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতেন, সেই ট্রাম্পই হঠাৎ করে কয়েকদিন আগে বলে বসলেন, ওবামা আমেরিকার নাগরিক! যা আসলে তার আফ্রিকান-আমেরিকানদের কাছে টানার উপায় হিসেবেই অনেকে ভাবছেন! 

এই ধরনের কৌশলী আচরণ যদি তিনি নির্বাচনের দিন পর্যন্ত করে যেতে পারেন, অন্তত বিতর্কের দিনগুলোতে না করেন, তাহলে তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে। তবে অনেকেই বলছেন, এই ধরনের ধারাবাহিক কৌশলী আচরণের জন্য তাকে তার পরামর্শকের কথা শুনতে হবে, যেমনটি এখন শুনছেন! এবং সবচেয়ে বড় কথা, লিখিত বক্তব্যের বাইরে তার যেকোনও কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে, বিশেষ করে নির্বাচনের সময়টুকুতে, নয়তো আবারও যেকোনও ধরনের লাগামহীন কথা বলে এই মুহূর্তে অর্জিত জনপ্রিয়তাটুকুও হারিয়ে ফেলতে পারেন। তবে এটাও সত্য, এইধরনের সুর পাল্টে ফেলে কথা বলা, তার ইমেজকে যেমন উজ্জ্বল করতে পারে, আবার তার আগের বক্তব্য হতে সরে আসার প্রবণতাকে ‘অস্থির’, ‘অগভীর’, ‘অপরিপক্ক’ ইত্যাদি দোষে দুষ্ট বলে প্রতিপক্ষ আখ্যা দিতে পারে। 

অবশ্য অনেকেই বলছেন, ট্রাম্পের একটা বড় শক্তি হলো-যারা তার সমর্থক, তারা তিনি যাই বলুক কিংবা করুক, তাকেই সমর্থন করবে! তাদের যুক্তি হচ্ছে, ‘ট্রাম্প হিলারির চেয়ে অনেক বেশি খোলা মনের, যা বলছে তা হিলারির মতো মনের ভেতরে চেপে-ধরে-বেঁধে রেখে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সফল করার জন্য কূটনৈতিক ভাষায় বলছেন না, যা তার মনে হচ্ছে তা জনগণকে খোলামেলাভাবেই বলে দিচ্ছেন, এক্ষেত্রে তার সমর্থকেরা তাকে 'খোলা বই' এর সঙ্গে তুলনা করছেন’! তবে হিলারি ইমিগ্রান্টদের জন্য অনেকটা আস্থার জায়গা তৈরি করলে পারলেও 'ক্লিনটন ফাউন্ডেশন এর ডোনেশন ভিত্তিক সাক্ষাৎকার' বিতর্ক এবং ‘ইমেইল ফাঁসে’র মতো ঘটনার পর বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাইলেটারাল চুক্তিগুলো কেমন হবে, সে ব্যাপারে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কেননা, পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী ট্রাম্প বহির্বিশ্বের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যতটা অর্থনীতিকে গুরুত্ব দেবে, হিলারি ততটাই বেশি ঝুঁকবে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের দিকে! এখন ট্রাম্পের কাজ হবে, এই অন্ধ সমর্থকদের বাইরে যারা আছেন, 'যারা' তার বর্ণ-বিদ্বেষী কথার জন্য তাকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারে, এই বিতর্কের মধ্যদিয়ে নিজের ব্যক্তিত্ব, বলিষ্ঠ আচরণ, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে তাদের মন জয় করা, যদিও এই কাজটি ট্রাম্পের জন্য মোটেই সহজ নয়!

অন্যদিকে, নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ‘সময়’ হিলারির অনুকূলে যাচ্ছে না বিপরীতে যাবে, সেটা খুব স্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না এখনো! ওবামা তার সাধ্যমতো যদিও সমর্থন দিয়ে চলছে হিলারিকে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যক্তি ওবামার জনপ্রিয়তা কেবল তার নিজস্ব। এই জনপ্রিয়তাকে হিলারি তার নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যবহার করতে পারলেও, তা নিজের দিকে নিয়ে আসার মতো নয় এতটা শক্ত আসন 'মার্কিনিদের মনে' গড়ে তুলতে আরও সময় লাগবে হিলারির, এটাও চরম সত্য।

এসবই অনুমাননির্ভর বক্তব্য। আমরা আসলেই জানিনা, কী হতে যাচ্ছে সামনের দিনগুলোতে! অন্যান্য যেকোনও নির্বাচনের চেয়ে ২০১৬ এর দুই প্রার্থীর নির্বাচনি প্রচারণা,বাক-বিতণ্ডা নানান কারণেই অধিক আলোচিত-সমালোচিত। কেননা হিলারি এবং ট্রাম্প দুজনই আমাদেরকে মার্কিন রাজনীতির 'আলোকিত' এবং 'অন্ধকার'-দুটো দিককেই জানান দিয়েছে, যা আমরা তো বটেই খোদ মার্কিনিরাই আশা করেনি। আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের মোট চারটি পর্ব- যেখানে প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থীরা তিনটিতে অংশ নেবেন এবং একটিতে  ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা, এই চারটি পর্বের বিতর্ক শেষেই ১৯ অক্টোবর কিছুটা হলেও বোঝা যাবে এই দুই প্রার্থীর মাঝে কে আসলে আমেরিকার নেতৃত্বে আসতে পারে! 

লেখক: শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
রাশিয়ায় বন্ধ হলো জাতিসংঘের নজরদারি সংস্থার কার্যক্রম
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ওজন কমিয়ে সাকিব পুরো ফিট, সন্তুষ্ট সহকারী কোচ
ক্যানসারে আক্রান্ত অভিনেতা রুমি, ভর্তি হাসপাতালে
ক্যানসারে আক্রান্ত অভিনেতা রুমি, ভর্তি হাসপাতালে
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ