X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

ওবায়দুল কাদের, বদি ও আইনের শাসন

নাদীম কাদির
০৭ নভেম্বর ২০১৬, ১২:২২আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০১৬, ১২:৩১

নাদীম কাদির ফৌজদারি মামলায় দায়মুক্তি নিয়ে অধিকার সংগঠনগুলোর হৈচৈ-এর মধ্যেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমপি আবদুর রহমান বদিকে জেলে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সরকার একটি জোরালো বার্তা দিয়েছে। আর সেটি হচ্ছে অপরাধী যে-ই হোক না কেন; তার বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান কঠোর।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উচ্ছৃঙ্খল কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অ্যাকশন একটি ভালো পদক্ষেপ।
আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেছেন, অভিযান (দলের ভেতরকার উচ্ছৃঙ্খলতার বিরুদ্ধে) মাত্র শুরু হয়েছে। তার এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার।
ওপরের দুটি দৃষ্টান্ত যদি মাত্র শুরু হওয়া হয়ে থাকে; আশা করা যায় এটা একটা দীর্ঘ যাত্রাপথ হবে। বাংলাদেশ আইনের শাসনের শক্তিশালী ভিতের ওপর দাঁড়াবে। সুশাসনের জন্য আইনের শাসনের প্রয়োজন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্ত অবস্থান তাকে তার ভিশন ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের মতো দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য অর্জনের পথে নিয়ে যাবে।
২০১৬ সালের ২ নভেম্বর আওয়ামী লীগের এমপি আবদুর রহমান বদিকে দুর্নীতির দায়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি আদালত। তিনি আরও বহু বেআইনি কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত। ফলে এটি ছিল একটি ভালো খবর। এটা বিশেষ করে তার মতো সেসব দুর্বৃত্ত নেতাদের জন্য যারা অর্জনগুলোকে ধূলিস্মাৎ করে দেয় তাদের নিজেদের পদক্ষেপ বা কর্মকাণ্ড বিবেচনারও একটা বার্তা।
কিন্তু বদি কি বার্তাটি পেয়েছে? টেলিভিশনের ফুটেজে তাকে দাঁত বের করে ভেঙচি কেটে হাসতে দেখা গেছে। দেখে মনে হয়েছে, তিনি যেন একজন বীরে পরিণত হয়েছেন। তাকে বলা হয়েছে, তিনি একজন দোষী সাব্যস্ত হওয়া অপরাধী। সরকারি দলের একজন এমপি বা সদস্য হওয়ায় তার ক্ষেত্রে আইনের শাসনের কোনও ব্যত্যয় হবে না।
এটা যে দলীয় নেতাকর্মীদের জন্যও প্রযোজ্য সেই বার্তা পৌঁছানোর জন্য ওবায়দুল কাদের একজন যথার্থ নেতা। কেউ অন্যায়-অপরাধ করলে এবং দেশ ও দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করলে তা চলতে দেওয়া হবে না।
ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর নির্বাসনে পাঠানোর কোনও উত্তর নেই। কিন্তু এমন বার্তার মাধ্যমে প্ররোচকদের দ্বারা সংঘটিত ক্ষয়ক্ষতি বন্ধ বা অন্তত এর প্রকোপ কমিয়ে আনা যায়।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেছেন, অপব্যবহারের ফলে নেতাদের সঙ্গে ফটোসেশনেরও অনুমতি দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে আমি পুরোপুরি একমত এবং আমি এটা সর্বত্র দেখতে চাই।

কিছু নেতা শুধু ‘ফটো নেতা’। বাস্তবে তারা দেশ বা দল এমনকি তাদের নেতার জন্য কিছুই করেন না।

আমার আশঙ্কা, এই নেতারা বিপদের সময় তাদের নেত্রীর সুরক্ষায় এগিয়ে আসবে না; যিনি তাদের নাম, যশ ও সম্পদ এনে দিয়েছেন। সুতরাং আমাদের অবশ্যই সত্যিকারের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের চেনা উচিত।

ওবায়দুল কাদের দলের নেতাকর্মীদের নিজেদের প্রতি প্রশ্ন রাখতে বলেছেন, শেখ হাসিনা ছাড়া তাদের এবং দেশের কী হবে? খুবই বাস্তবসম্মত কথা। তাদের বাস্তবতা অনুধাবন করতে হবে। এটা শুধু আওয়ামী লীগকেই সাহায্য করবে না; বাংলাদেশকেও সাহায্য করবে।

আসুন আমরা আশাবাদী হই যে, বদিই শেষ নয়। দল বা সরকারের মধ্যে যদি অন্য অনিষ্টকারীরা থাকেন তবে সম্পর্কেও একই রকমের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আমরা আশা করি, সবার ভালোর জন্যই মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য বাস্তবে রূপ পাবে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এসব পদক্ষেপ ২০১৯ সালের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের জন্য জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করবে। অন্যথায় ক্ষমতায় ফিরতে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। শুভকামনা ওবায়দুল কাদের।

লেখক: সাংবাদিকতায় জাতিসংঘের ড্যাগ হ্যামারসোল্ড স্কলার এবং লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
জয়পুরহাটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও চট্টগ্রামে কাস্টমসে দুদকের অভিযান
জয়পুরহাটে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও চট্টগ্রামে কাস্টমসে দুদকের অভিযান
বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনা যেসব খেলায় সহযোগিতা প্রত্যাশী
বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনা যেসব খেলায় সহযোগিতা প্রত্যাশী
জনসচেতনতাই টেকসই উন্নয়নের পথ সুগম করতে পারে: স্পিকার
জনসচেতনতাই টেকসই উন্নয়নের পথ সুগম করতে পারে: স্পিকার
ধ্রুব এষ হাসপাতালে
ধ্রুব এষ হাসপাতালে
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ