বৃষ্টি আর বন্যার কারণে সবজির বাজারে এখনও অস্থিরতা রয়েছে। একমাসের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এছাড়া অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে আদা, তেজপাতাসহ ছয় ধরনের নিত্যপণ্যের দাম। তবে এই একমাসে দাম কমেছে মসুরের ডাল, আমদানি করা রসুন ও এলাচের। রাজধানীর কাওরানবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে। বিভিন্ন এলাকায় এক মাসের বেশি সময় ধরে বন্যা এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সারাদেশে সবজির উৎপাদন কমে গেছে। যার প্রভাবে অধিকাংশ সবজির দামই বেড়েছে।
মগবাজারের কাঁচা বাজারে দেখা যায়, বেগুনের দাম ৯০ টাকা কেজি, যা রোজার মধ্যেও ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। ৪০ টাকা কেজির কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। ২০ টাকা কেজির পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। ২০ টাকা হালির কাঁচকলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। বরবটি ৯০ টাকা, চিচিংগা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬৫ টাকা, পটোল ও ঢেঁড়স ৪৫ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, কচুর মুখী ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে মগবাজার কাঁচাবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আবদুল আলীম বলেন, ‘চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে দাম বেড়েছে। এক্ষেত্রে বৃষ্টি ও বন্যা বড় ভূমিকা রেখেছে। বন্যাতে বিভিন্ন এলাকার সবজির ক্ষেত ডুবে গেছে। যে কারণে ঢাকায় ঠিকমতো পণ্য আসছে না। এছাড়া ঈদের পর মানুষ ঢাকায় চলে এসেছেন। অনেকে এবার ঈদে ঢাকার বাইরে যায়নি। এ কারণে চাহিদা বেশি রয়েছে।’
কাওরানবাজারের সবজির আড়তদাররা বলছেন, চাহিদার অর্ধেক সবজি পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার আশপাশে ও বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যায় সবজির ক্ষেত ডুবে গেছে।
এদিকে আদা, পেঁয়াজ, আমদানি করা শুকনো মরিচ, ধনে, তেজপাতা ও আলুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক মাস আগে যে আদার দাম ছিল ১০০ টাকা কেজি, এখন সেই আদা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। এক মাস আগের ২০ টাকা কেজির আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। ২৬০ টাকা কেজির শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। এক মাস আগের বিক্রি হওয়া ১০০ টাকা কেজির ধনে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। একইভাবে ১০০ টাকা কেজির তেজপাতা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।
এদিকে গত এক মাসে মসুরের ডাল (বড় দানা), আমদানি করা রসুন ও এলাচের দাম কমেছে। এছাড়া মাছের বাজারে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে ইলিশ মাছ। বাজারে বড়, মাঝারি ও ছোট সাইজের প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। দামও তুলনামূলক কম। বিভিন্ন বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়, যা কিছু দিন আগেও ছিল ১২শ’-১৩শ’ টাকা।
এদিকে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চিনি ও আলুর দাম বেড়েছে কেজিতে ২ টাকা। বর্তমানে ৫৭ টাকায় এক কেজি চিনি ও ৩২ টাকায় এক কেজি আলু পাওয়া যাচ্ছে। কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ১৩০ টাকা কেজির ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। এক সপ্তাহে শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০ টাকা। ২৫০ টাকা কেজির শুকনো মরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। আর কেজিতে ৫ টাকা কমেছে মসুর ডালের দাম। ৬৫ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ২০ টাকা কমেছে মুগ ডালের। ১২০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মুগডাল। পেঁয়াজের কেজিতে কমেছে ৫ টাকা। ৪০ টাকা কেজির দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। জিরার কেজিতে কমেছে ২০ টাকা। ৩০০ টাকা কেজি জিরার দাম এখন ২৮০ টাকা। লবঙ্গের দাম কমেছে কেজিতে ১০০ টাকা। ৭৮০ টাকার লবঙ্গ এখন ৬৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া ডিমের হালিতে কমেছে এক টাকা। ৩৮ টাকা হালি ডিম এখন ৩৭ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।