X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

জন্ডিস ও রঙমিস্ত্রীর গল্প

হাবিব আনিসুর রহমান
২৪ নভেম্বর ২০২০, ১৬:১৪আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২০, ১৬:১৬

জন্ডিস ও রঙমিস্ত্রীর গল্প গাঢ় কালো রঙের একটা টি-শার্ট পছন্দ করলো শায়লা। আজিজ মার্কেটের নিচতলার দোকানে দাঁড়িয়ে আমার বুকের উপর পরপর তিনবার শার্টটা ধরতে বলে ঘুরেফিরে দেখলো। সেলসম্যান ছেলেটা একগাল হেসে বললো, খুব হ্যান্ডসাম লাগছে স্যারকে, এটাই নেন ম্যাডাম, প্যাকেট করে দিই? শায়লা আবার শার্টটা আমার বুকের উপর ধরতে গেলে পিছিয়ে গেলাম, থাক দরকার নেই! তারপরও কয়েকটা টি-শার্ট দেখলো শায়লা। পছন্দ হলো না। শেষে সিদ্ধান্ত হলো এটাই নেবে। আমি এসব ব্যাপারে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এতো বছরের সংসার, এখন দু’জন দু’জনকে ভালভাবেই চিনেছি। তিনদিন পর রোজা, যারা ঝক্কি ঝামেলা একদম পছন্দ করে না তারা এখনই কেনাকাটার কাজটা সেরে রাখে—শায়লা তাদের দলে। যেমন ভিড় মার্কেটের ভেতরে তেমনি ভিড় রাস্তায়। মানুষ শুধু ছুটছে, বিশেষ করে মহিলা ক্রেতারা। ফাস্টফুডের দোকানগুলোতেই ভিড় বেশি। শপিং-এ এলে ভিড় ঠেলে দু’পাঁচটা দোকান ঘুরতে হবেই, তা না হলে পছন্দমতো কাপড়টা কিনতে পারবে না। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে শেষে ওই ফাস্টফুডের দোকানে গিয়ে চটপটি বার্গার ফুচকা আর একটা কোল্ড ড্রিংস তো খেতেই হয়, এসব ছাড়া কেনাকাটা জমে না।

শায়লা তারপর আরও কিছু কিনলো, আমার জন্যে একটা পাঞ্জাবি, ম্যাচ করে একটা কোটিও কিনে দিল।

মার্কেট থেকে বের হয়ে দেখি রিকশা মাত্র পাঁচটা, ‘গ্রীন রোড যাবেন?’ জিজ্ঞাসা করতেই মাথা নেড়ে বলে, না। বুঝতে পারলাম আজ কপালে খারাবি আছে, গ্রীন রোডের দিকে কেউ যাবে না। জ্যৈষ্ঠের কাঠফাটা রোদ ছড়িয়ে রয়েছে চারপাশে। বেশিক্ষণ তিষ্ঠানো যাবে না এই আগুন রোদে। রিকশার বদলে সারি সারি রিকশা-ভ্যানের উপর নানা ধরনের আম লিচু বিক্রি হচ্ছে। একবার ভাবলাম কিছু আম কিনে নিয়ে যাই, আবার মনে হলো, ফরমালিন বা অন্য কিছু মেশায়নি তো! লিচু ছেলের খুব পছন্দ কিন্তু গত সপ্তাহে আবিস্কার হলো লিচুর গায়ে রং। একটা রিকশা দেখে শায়লা দ্রুত তার সাথে কথা বলতে শুরু করলো। বয়স্ক এক রিকশাওয়ালা। চারপাশে যাত্রীদের ভিড় দেখে ডবল ভাড়া হেঁকে বসলেও বসতে পারতো, কিন্তু না, ঠিক ভাড়াটাই চাইল সে। ভাড়া বেশি চাইতেই পারে, তাদের যুক্তিও তো আছে, প্রত্যেক মোড়েই জ্যাম, আধ ঘণ্টার রাস্তা লেগে যায় দেড় ঘণ্টা। বেশি ভাড়ার কথা শুনলে মেজাজ বিগড়ে যায় শায়লার। আজ তেমন কিছু ঘটলো না। নির্বিঘ্নে রিকশায় উঠে বসলাম।

রিকশা সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। প্যাডেলের উপর পা দুটো চেপে ধরে একটা ধীর গতির ছন্দে চলছিল রিকশা। কাঁটাবন মোড়ের অনেকটা আগেই জ্যামে পড়ে যায়। রিকশাওয়ালার ময়লা লুঙ্গি জীর্ণ শার্ট আর দুটো খালি পায়ের দিকে তাকিয়ে আমার মন খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। এই বয়সে রিকশা চালাচ্ছে লোকটা! সারাদিন পরিশ্রম করে কতো উপায় করে? হঠাৎ তাকে প্রশ্ন করে বসলাম, রিকশা সারাদিন চালান?

—আমারে জিগাইলেন স্যার?

—হ্যাঁ আপনাকে বলছি।

—হ হারাদিনই চালাই।

রিকশাওয়ালার আবার চালাচ্ছে আর পিছন ফিরে কথা বলছে। শায়লা বিরক্ত হয়ে বলে, ওকে চালাতে দাও, কথা বোলো না। রিকশা আবার জ্যামে আটকে গেলে আমি আবার জানতে চাই, যে টাকা পান তাতে সংসার চলে?

—হ স্যার চলে কষ্টে, কিন্তু ঘর ভাড়া দিতে অয়, সব ট্যাকা ওইখানেই যায়গা, হ্যাষে সংসার চালাইতে পারি না, ধার অয়।

—থাকেন কোথায়?

—বসিলায় থাকি।

—সারাদিন গাড়ি চালান রেস্ট নেন না?

—হ লই, চায়ের দোকানের পাশে খাড়াইয়া চা-বিস্কুট খাই, ওইটাই আমাগো জিরান।

—অনেক কষ্ট হয়?

এখানে এসে শায়লা কনুই দিয়ে বেশ জোরেই গুতা দিলো আমাকে, বোকামির একটা সীমা থাকা দরকার, রিকশা চালাবে কিন্ত কষ্ট হবে না, এটা কেমন প্রশ্ন!

রিকশাওয়ালা আমাদের দিকে মুখ ক’রে বললো,

—না স্যার, আমার কষ্ট অয় না।

—কষ্ট হয় না! সারাদিন রিকশা চালান অথচ আপনার কষ্ট হয় না, বলেন কী? আশ্চর্য! এটা ব’লেই মাথার ওপরের আগুনের পিণ্ডটার দিকে তাকালাম একবার। তখন চারদিকে রোদের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে, চারপাশের মানুষগুলো গরমে হাঁপাচ্ছে।

হঠাৎ মনে হলো একটা জরুরি ওষুধ কেনার কথা ছিল, কিনতে ভুলে গেছি। শায়লাকে বলতেই শায়লা হালকা একটা ঝাড়ি দিল, তোমাকে বলি লিস্ট নিয়ে বেরুবা, কিছুতেই কথা শোনো না! 

রিকশাওয়ালা এবার পিছন ফিরে বলে, স্যার, দশ বচ্ছর আগে একবার আমার জন্ডিস হইছিলো, দুই মাসের মইধ্যে আমার চোখ মুখ বেবাক শরীল হলুদ হইয়া গেছিল, ঘরে হুইয়া থাকতাম আর সবসুমে চক্ষের সামনে আমার লাশ দেখতাম, বস্তির মাইনষে আমার লাশ লইয়া গোরস্তান যাইতাছে।

—ডাক্তার দেখাননি, ওষুধ খাননি?

বলতে থাকলে আবার কনুইয়ের গুতা খেলাম, থামোতো, বেচারা গরিব মানুষ ও ডাক্তার ওষুধ এসব পাবে কোথায়?

—স্যার, তখন আমার বউরে দিছিলাম মাইনষের বাড়ির কাম করতে, সকালে বাইর হইতো আবার বারটার সময় একবার আইসা আমারে দেইখা যাইতো আর নাস্তা দিয়া যাইতো, কাপড় কাচা, গর ঝাড় দেয়া, গর মুছা এইসব কাম করতো, হেই বেতনের ট্যাকা দিয়া কেরানিগঞ্জ থেইকা কবিরাজি ওষুদ আইনা খাওয়াইছে আমারে, ডাক্তারের ওষুদ খাই নাই, সব মাইনষে কইছে ডাক্তারের ওষুদে জন্ডিস রোগ সারে না, আমি কবিরাজী খাইয়া ভাল হইছি, কবিরাজ স্বপ্নে ওই ওষুদের গাছ পাইছিলেন। তারপর থেইকা একটা আইশ্চর্য জিনিস হইছে আমার!

—আশ্চর্য জিনিস! কেমন, বলা যাবে?

—কইতাছি স্যার, শুনেন, ওই যে অসুকের শরীল লইয়া ঘরে শুইয়া থাকতাম আর চক্ষের সামনে নিজের লাশ দেখতাম হারাদিন, তারপর কবিরাজের ওষুদ খাইয়া ভাল হইয়া আইলাম রেশকা চালইতে বুঝছেন সার, পরথম খ্যাপ মারলাম বসিলা খেইকা মহম্মদপুর, ভাড়া পাইলাম একখান বিশ ট্যাকা আর দুইটা দশ ট্যাকার নোট, সেইদিন থেইকা আইজ পর্যন্ত রেশকার উপরে উইঠা বইলেই আমি চক্ষের সামনে খালি দশ-বিশ ট্যাকার নোট দেহি, গাড়ি চালাইতে আমার ইট্টুও কষ্ট হয় না, এইডা হৈলো আমার কাহিনি, বুজছেন স্যার?

—রিকশা চালানো শুরু করলেই আপনি দশ-বিশ টাকার নোট দেখেন চোখের সামনে! হ্যাঁ, সাইকোলোজিতে এটা অসম্ভব কিছু নয় বরঞ্চ স্বাভাবিক, এটা দেখেন কারণ ওই টাকার জন্যেই তো আপনি রিকশা চালান তাই না? এইরকম আর কিছু দেখেন?

আমাকে থামিয়ে দিলো শায়লা, আচ্ছা তুমি এত কথা বলছ কেন! অসহ্য, আর একটা কথাও বলবে না।

—দেখ এই কথাগুলো বলছি সময় কাটানোর জন্যে, বিষয়টা খুবই সহজ সরল সোজা, দেখছো না সূর্যটা কীভাবে দাবড়ানি দিচ্ছে?

জ্যাম ছাড়লে হাঁপ ছেড়ে বাঁচি। রিকশা কাঁটাবন মোড় পার হয়ে ডানদিকে কিছুদূর গিয়ে হঠাৎ থেমে গেল, রিকশা থেকে নেমে লোকটা বললো, চাচায় ডাকে, অইতাছি সার, ব’লেই সে পিছন দিকে হেঁটে গেল, মিনিট দুই পর ফিরে এসে রিকশার সিটে বসে আবার চালাতে লাগলো। এখন লোকটা কাঁদছে। বাম হাত দিয়ে রিকশার হ্যান্ডেল ধরে ডান হাত দিয়ে চোখ মুছছে।

—কী হলো, কোথায় গিয়েছিলেন?

আমার এক চাচায় ডাকছিল, কাঁদতে কাঁদতে বললো লোকটা।

—কাঁদছেন কেন?

—ছয়তলা থেইকা পইড়া গেছে।

—কে?

—আমার পোলা

—বলেন কী! কী করত?

—রঙমিস্ত্রী

—এখন কোথায় সে? কেমন আছে?

—আমাগো বস্তির বাসায়, প্যাটের ভিত্রে রড ঢুইকা গেছে, বাঁইচা নাই, লোকটা ডান হাত দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বললো, একটা ছুডু মাইয়া।

রিকশাওয়ালার আকস্মিক এসব কথাবার্তায় আমরা বিস্মিত হতবাক, এখন কী করবেন?

আমারে অহন সাভার মাস্টার বাড়ি যাইতে হইবো পোলারে লইয়া, আল্লা আল্লা! সার সিএনজি কইরা নেওন যাইব না?

আমার এত খারাপ লাগতে লাগল, শায়লা আমাকে বললো, আমার মনে হয় তাকে সম্পূর্ণ ভাড়া মিটিয়ে ছেড়ে দেয়া উচিৎ, তুমি কি বলো? বললাম, হ্যাঁ তাইই করো, ভাড়া ছাড়া আরও কিছু টাকা ওর হাতে দেয়া দরকার।

এসব কথা বলতে বলতে রিকশা হাতির পুলে চলে আসলো। শায়লা বললো, চলো এখানে নেমে আমরা হাঁটতে হাঁটতে সামনে এগিয়ে যাই, এখন রিকশা চালিয়ে নেয়াটা অমানবিক হবে। শায়লা বললো, আমরা এখানেই আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি।

পার্স বের ক’রে ভাড়া ছাড়াও দুশো টাকা তার হাতে দিয়ে বললো, আপনার ছেলের মৃত্যুতে আমরাও শোকাহত, আমরাও ব্যথা পাচ্ছি, কষ্ট পাচ্ছি। রিকশাওয়ালা টাকাগুলো নিল একহাতে, অন্যহাতে চোখ মুছতে মুছতে বললো, দোয়া কইরেন স্যার, আল্লা, আল্লা!

২.

গলির ভিতর ঢুকে আমার মন খুব খারাপ, শায়লারও নিশ্চয় খারাপ। আমি কথা বলেই যাচ্ছি, শায়লা মাথা নত করে চুপচাপ কথা শুনে যাচ্ছে। গলির ভিতর দেখি কিছু তরকারি সামনে নিয়ে একজন ঝিমুচ্ছে। শশার দিকে তাকিয়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল, কবেকার শশা কে জানে, গত সপ্তাহে ভ্যান থেকে নিয়েছিলাম এক কেজি, টাটকা সবুজ কিন্তু ভিতরে বিচি পচে বিজবিজ করছে। ওদের কী দোষ, পরদিন ভ্যানওয়ালাকে এমনি দু’কথা শোনালাম।

মনটা বিষাদে ভরে আছে, মানস-চক্ষে দেখছিলাম লোকটার বাড়ির পরিস্থিতি। গলির আধাআধি পেরুতে আমার আফসোস শুনতে শুনতে হঠাৎ শায়লা বলে, একটা কথা বলব, যদি তুমি রেগে না যাও।

আমি কী কারণে যেন বললাম, হ্যাঁ রাগ করব।

—তাহলে বলব না।

—আচ্ছা বল না।

হাঁটছি।

শায়লা আবার বলে, বলি, তুমি রাগ করবে না কিন্তু!

—বলো।

—লোকটা মনে হয় আমাদের ধোঁকা দিল।

—কেন মনে হলো?

কারণ দুটো, এক নম্বর, ওর চাচা যখন ওকে ডাকলো তখন দু’মিনিটের মধ্যে ফিরে এলো, ওর তো দেরি করার কথা ছিল। আর আমি যখন ওকে টাকা দিচ্ছিলাম ও শ্যেন দৃষ্টিতে আমার পার্সের দিকে তাকিয়েছিল। আমার টাকা বের করতে দেরি হচ্ছিল ও একবারের জন্য চোখ ফিরায় নাই। ওর চোখে পানি ছিল না তখন!

আমি বোকার মতো শায়লার দিকে তাকিয়ে থাকি। শায়লা আবার বলে, আমি চাই ও আমাদের ধোঁকা দিক, দু’শ টাকাই তো! সামান্য খাজনার রশিদ জিম্মি করে তোমার ডেভেলপার নেয় নাই পঞ্চাশ হাজার টাকা! দিক ধোঁকা, ছেলেটা বেঁচে থাক।

—ও কাঁদছিল শায়লা!

— হুম!

—রিকশা নাও।

পরদিন ভিডিও ফোন পেল শায়লা, বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে আমাদের পুত্রবধূ,

—আম্মা আপনাকে এমন ক্লান্ত অন্যমনস্ক লাগছে কেন?

—গতকাল দুপুরে আজিজ মার্কেট থেকে ফেরার সময় রিকশাটা যখন কাঁটাবনের কাছে আসলো তখন ঘটনাটা ঘটলো...শায়লা সমস্ত ঘটনা খুলে বললো বউমাকে...তারপর বললো তার সন্দেহের কারণগুলো, তারপর বললো, একটু আগে সে বাম হাত দিয়ে হ্যান্ডেল ধরে রিকশা চালাচ্ছিল আর ডান হাত দিয়ে তার চোখ মুছছিল, কিন্তু চলে যাবার সময় সে দু’হাত দিয়েই হ্যান্ডেল ধরে দ্রুত প্যাডেল মেরে চলে গেল।

আমি পাশে বসেছিলাম। ওদের কথোপকথন শুনছিলাম।

বউমা সবটাই শুনলো,

—আপনার কি মনে হচ্ছে সে আপনাদের ধোঁকা দিয়ে ওই টাকাটা নিয়ে গেছে?

—হ্যাঁ মা তাই, এটাই যেন হয়, সে আমাদের ধোঁকা দিয়ে টাকাটা নিয়ে যাক, তাও ভালো, তবু তার ছেলেটার মৃত্যু যেন ওভাবে না হয়, ওই মৃত্যু সহ্য করতে পারছি না আমরা, ছেলেটা বেঁচে থাক। ভাবো ছয়তলা থেকে পড়ে রডে গেঁথে যাওয়া!

বউমা কিছুক্ষণ শুনল মন দিয়ে তারপর বলে,

—দেখেন মা, লোকটা মিথ্যে বলেছে না সত্যি বলেছে এটা বলা কারও পক্ষে সম্ভব নয়, কেননা এখন একজন মানুষ আর একজন মানুষকে বিশ্বাস করে না, ফল মাছ এসব কিনে আনলে দেখবেন দিনের পর দিন পড়ে আছে কিন্তু পচছে না, এসব জিনিস কিনলেই আপনার মনে হবে ওগুলো ফরমালিন দেয়া, আপনার অবিশ্বাস বেড়েই চলবে...তবে আমার নিজের কী মনে হয় জানেন মা?

—বলো,

—আমাদের মতো মধ্যবিত্তের সন্তান মারা গেলে আমরা যেভাবে শোক প্রকাশ করি, একজন রিকশা শ্রমিক সেভাবে শোক প্রকাশ করার অবকাশ পায় না, সেই মুহূর্তে ওই লোকটা তার ছেলের লাশ কি ক’রে সাভারে নিয়ে যাবে সেটা নিয়েই ভাবছিল...

বউমা কথা বলে যাচ্ছিল, কিন্তু হঠাৎ চুপ হ’য়ে গেলো শায়লা, কী হলো মা, থেমে গেলেন যে, কী হলো কথা বলেন?

—তোমার কথার সাথে আমি একমত হ’তে পারলাম না বউমা, তুমি ভুল বলছো, আমি যখন ব্যাগ থেকে টাকা বের করছিলাম তখন ওই রিকশাওয়ালা লোভাতুর চোখে টাকাগুলোর দিকে তাকিয়ে ছিল, ওর চোখে আমি পানি দেখতে পাইনি, তার ছেলে মারা যায়নি, টাকার জন্যেই সে ওই গল্পটা বানিয়েছে।

—কিন্তু মা, ও তো ছেলেকে সাভারে নিয়ে যাবে বলেছে, ওর তো তখন টাকার কথাই মাথায় কাজ করার কথা, কান্নার চেয়ে টাকাটাই তার বেশি জরুরি ছিল!

শায়লার পক্ষে সমস্ত বিষয়টা সহ্য করা সম্ভব হচ্ছিল না।

শায়লা ফোন রেখে খাটের উপর গিয়ে বসলো, মাথাটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে! তার মুখ থেকে অস্ফুট শব্দ বেরিয়ে এলো—আহা! ছেলেটা মারাই গেল!

//জেডএস//
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা