X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

রোকেয়া স্মরণে পায়রাবন্দে নেই কোনও স্মৃতিসৌধ

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর
০৯ ডিসেম্বর ২০২০, ০৫:০২আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০২০, ০৫:০৩

পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামে ১৪ বছর বন্ধ থাকার পর বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রটি চালু করা হলেও আবারও তা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন শুধু লাইব্রেরি খোলা রাখা হয়, তবে পর্যাপ্ত বই না থাকায় সেটিও অনেকটা অকার্যকর অবস্থায় আছে। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে বেগম রোকেয়ার বাস্তুভিটা। সেখানে এখন একটি ইটের দালান ছাড়া আর কিছুই নেই। দীর্ঘ ৪৯ বছরেও সেখানে কোনও স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়নি।

বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান রংপুরের পায়রাবন্দ গ্রামের ভিটা আর রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র ঘুরে এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে বলে জানা গেছে, প্রতিবছর ৯ ডিসেম্বর (বেগম রোকেয়ার জন্মদিন) এলেই টনক নড়ে প্রশাসনের। ব্যস্ততা বাড়ে কর্মকর্তাদের। তারা বেগম রোকেয়ার বাস্তুভিটাসহ আশপাশের এলাকা রং করা এবং আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজনের প্রস্তুতি নেন। কিন্তু ১৪ বছর অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকা রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রটি আলোর মুখ দেখলেও সেই আলো আবার নিভে গেছে। এখানে দায়িত্ব পালনে দুই কর্মকর্তা দীর্ঘ ১৪ বছর পর সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে চাকরি ফিরে পেলেও দুই নাইট গার্ড পেয়েছেন অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি।

২০১৯ সালে ম্মৃতিকেন্দ্রটি পুনরায় সচল করার উদ্যোগ নেয় বাংলা একাডেমি। স্মৃতিকেন্দ্রে সপ্তাহে তিন দিন সংগীত শেখানো এবং একদিন অঙ্ক শেখানো শুরু হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণের পর সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। এখন শুধু লাইব্রেরিটি খোলা রাখা হলেও সেখানে পর্যাপ্ত বই না থাকায় সেটিও অকার্যকর। স্মৃতিকেন্দ্রের সংগ্রহশালায় নেই রোকেয়ার কোনও স্মৃতিচিহ্ন। সবগুলো আলমারি ফাঁকা পড়ে আছে। গবেষণাগারটিও বন্ধ রয়েছে। সুদৃশ্য ভবনটির প্লাস্টার ধসে পড়ছে। হতদরিদ্র নারীদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার জন্য আগে যে হাতেকলমে সেলাই প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কারিগরী প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো, সেটাও পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র স্মৃতিকেন্দ্রের উপ-পরিচালক ফারুক রহমান জানান, স্মৃতিকেন্দ্রটি মেরামত ও সংস্কার করার জন্য গণপূর্ত বিভাগ আড়াই কোটি টাকার একটি প্রাক্কলন জমা দিলেও মন্ত্রণালয় থেকে এখনও প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। করোনা সংক্রমণের কারণে আপাতত গান আর অঙ্ক শেখানোও বন্ধ রয়েছে। তবে স্মৃতিকেন্দ্রটি সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অপরদিকে, স্মৃতিকেন্দ্রের পাশেই রোকেয়ার বাস্তুভিটা। যেন ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে কিছু ইটের গাঁথুনি। আজ পর্যন্ত সেখানে কোনও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম দুলাল।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব উদ্যোগে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্মৃতিকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ভবনের উদ্বোধন দুটোই করেন শেখ হাসিনা। কিন্তু দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে অবহেলায় পড়েছিল স্মৃতিকেন্দ্রটি। গত বছর সীমিত পরিসরে চালু করা হলেও আবারও বন্ধ হয়ে গেছে।’

রফিকুল ইসলাম দুলাল আরও বলেন, ‘একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারেন, এর কার্যক্রম আবারও শুরু করতে।’

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রোকেয়ার বাস্তুভিটা আর স্মৃতিকেন্দ্র দেখতে আসা দর্শনার্থীরা এর দুরবস্থা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে পুরোপুরি সচল করার দাবি জানিয়েছেন।

/আইএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ