X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

খান আতার জন্মদিনে তার দুই সন্তান...

বিনোদন রিপোর্ট
১০ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০১আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০১

খান আতাউর রহমান চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব খান আতাউর রহমান শুধু নির্মাতাই নন, তিনি ছিলেন একাধারে অভিনেতা, গীতিকবি, সুরকার, সংগীত পরিচালক, গায়ক, চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক। চলচ্চিত্রের এমন প্রতিভা বিরল। তিনি খান আতা নামে অধিক পরিচিত।
১৯২৮ সালের ১১ ডিসেম্বর জন্ম নেওয়া খান আতা ৫ বার বিভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন, ২০০৩-এ পেয়েছেন মরণোত্তর একুশে পদক।
এই কিংবদন্তির জন্মদিন উপলক্ষে দেশ টিভির নিয়মিত মিউজিক্যাল শো ‘প্রিয়জনের গান’-এ সংগীত পরিবেশন করবেন তার দুই সন্তান রুমানা ইসলাম ও আগুন। শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে সরাসরি প্রচার হবে অনুষ্ঠানটি। জানান, অনুষ্ঠানটির প্রযোজক ওয়ালিদ হাসান।
এতে রুমানা ও আগুন বাবার স্মৃতি নিয়ে আলাপের পাশাপাশি শোনাবেন গানও। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করবেন তাসনুভা মোহনা।
এক জীবনে খান আতাউর রহমান-
খান আতা ১৯৫৯ সালে পাকিস্তানি পরিচালক আখতার জং কারদার পরিচালিত উর্দু ভাষার চলচ্চিত্র ‘জাগো হুয়া সাভেরা’তে মূল চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। এতে তার বিপরীতে ছিলেন ভারতীয় অভিনেত্রী তৃপ্তি মিত্র। এ ছায়াছবির সহকারী পরিচালক ছিলেন জহির রায়হান। একই বছরে মুক্তি পায় তার অভিনীত প্রথম বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র ‘এ দেশ তোমার আমার’। এই চলচ্চিত্রের পরিচালক ছিলেন এহতেশাম।
১৯৬০ সালে জহির রায়হানের সাথে খান আতা গড়ে তোলেন লিটল সিনে সার্কেল। এতে পরের বছরগুলোতে তার জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। অভিনেতা হিসেবে তিনি কাজ করেছেন ‘কখনো আসেনি’, ‘যে নদী মরুপথে’, ‘সোনার কাজল’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘সুজন সখী’-এর মতো সফল চলচ্চিত্র।
খান আতার প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘অনেক দিনের চেনা’। ছায়াছবিটি ১৯৬৩ সালে মুক্তি পায়। ১৯৬৭ সালে তিনি বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার জীবনী নিয়ে নির্মাণ করেন ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’। চলচ্চিত্রটি ১৯৬৯ সালে মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এ প্রদর্শিত হয় এবং শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে গোল্ডেন প্রাইজের জন্য মনোনীত হয়। এরপর তিনি নির্মাণ করেন ‘সাত ভাই চম্পা’, ‘অরুণ বরুণ কিরণমালা’ ও ‘জোয়ার ভাটা’। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৩ সালে নির্মাণ করেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’। যার বিষয়বস্তু ছিল যুদ্ধ পরবর্তী বাস্তবতা। ১৯৭৫ সালে প্রমোদ কর ছদ্মনামে গ্রামীণ পটভূমিতে নির্মাণ করেন রোমান্টিক চলচ্চিত্র ‘সুজন সখী’। এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি ১ম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে পুরস্কৃত হন। ৮০’র দশকে নির্মাণ করেন ‘হিসাব নিকাশ’ এবং ‘পরশপাথর’ নামের দুটি ছায়াছবি। মুক্তিযুদ্ধের ওপর ১৯৯৪ সালে তিনি নির্মাণ শুরু করেন ‘এখনো অনেক রাত’। ১৯৯৭ সালে ছবির কাজ শেষ হয়। কিন্তু সেন্সর বোর্ড ছবিটির ৭টি দৃশ্য কেটে ফেলার নির্দেশ দেয়ায় ক্ষুব্ধ হন তিনি।
রুমানা ইসলাম ও আগুন তিনি ‘কবি জসীম উদ্‌দীন’, ‘গঙ্গা আমার গঙ্গা’, ‘গানের পাখি আব্বাস উদ্দিন’-সহ বেশকিছু তথ্যচিত্রও তৈরি করেছেন।
খান আতা সংগীত পরিচালক হিসেবে প্রথম কাজ করেন এহতেশাম পরিচালিত ‘এ দেশ তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে। পরে ১৯৬২ সালে ‘সূর্যস্নান’ ছবিতে তিনি উপহার দেন ‘পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া রে’-এর মতো বিখ্যাত গান। যাতে কণ্ঠ দেন আরেক কিংবদন্তি কলিম শরাফী। ১৯৬৩ সালে জহির রায়হানের ‘কাঁচের দেয়াল’ ছবিতে তিনি নিয়ে আসেন ‘শ্যামল বরণ মেয়েটি’ শীর্ষক একটি জনপ্রিয় গান। ‘সূর্যস্নান’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে এবং ‘কাঁচের দেয়াল’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান চলচ্চিত্র উৎসব-এ তিনি পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া সংগীত পরিচালক হিসেবে নিজের যোগ্যতা প্রকাশ করেন ‘বাহানা’, ‘সাগর’, ‘আখেরি স্টেশন’, ‘মালা’ প্রভৃতি উর্দু ছবিতে।
১৯৭০ সালে জহির রায়হান পরিচালিত ‘জীবন থেকে নেয়া’তে তিনি ‘এ খাঁচা ভাঙবো আমি কেমন করে’ শীর্ষক গানের কথা লিখেন এবং নিজেই কণ্ঠ দেন, পর্দায় ঠোঁট মেলান তিনিই! ৭০ ও ৮০’র দশকে উপহার দেন সাবিনা ইয়াসমীনের কণ্ঠে ‘এ কি সোনার আলোয়’, শহনাজ রহমতুল্লাহের কণ্ঠে ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’-এর মতো ঐতিহাসিক দেশাত্মবোধক গান। খান আতাউর রহমান প্রায় ৫০০ গানের গীতিকার। ‘এখনো অনেক রাত’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি ২২তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ গীতিকারের পুরস্কার অর্জন করেন।
১৯৯৭ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

/এমএম/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: কোন পদে লড়ছেন কে
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন: কোন পদে লড়ছেন কে
রাজকুমার: ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ এক বিয়োগান্তক ছবি
সিনেমা সমালোচনারাজকুমার: ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ এক বিয়োগান্তক ছবি
হলিউডের ‘ভূত’ আসছে দেশে!
হলিউডের ‘ভূত’ আসছে দেশে!
মাহির সঙ্গে প্রেম গুঞ্জন নিয়ে জয়: আমরা খুব ভালো বন্ধু
মাহির সঙ্গে প্রেম গুঞ্জন নিয়ে জয়: আমরা খুব ভালো বন্ধু
সালমানের বাড়ির সামনে গোলাগুলি, ছুটে এলেন মুখ্যমন্ত্রী
সালমানের বাড়ির সামনে গোলাগুলি, ছুটে এলেন মুখ্যমন্ত্রী