X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

জন্মহার বাড়াতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করবে জাপান

বিদেশ ডেস্ক
১০ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:০৬আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:২৩

জাপানে জন্মহার যেভাবে কমছে তা ঠেকাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তির পেছনে অর্থ ঢালবে সরকার। লোকজন যাতে তাদের পছন্দের জীবনসঙ্গী খুঁজে বের করতে পারে, সেজন্যে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে কাজে লাগানো হবে। জন্মহার বাড়াতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করবে জাপান

জাপানে যেসব স্থানীয় সরকার ইতোমধ্যে এরকম প্রকল্প চালাচ্ছে বা শুরু করতে যাচ্ছে, সরকার আগামী বছর থেকে সেগুলোকে সহায়তা দেবে।

গত বছর জাপানে জন্ম নিয়েছিল মাত্র ৮ লাখ ৬৫৪ হাজার শিশু। এটি দেশটিতে নিম্ন জন্মহারের ক্ষেত্রে এক নতুন রেকর্ড।

বিশ্বে যেসব দেশে জন্ম হার সবচেয়ে কম, জাপান তার একটি। সেখানে জন্মহার কমছে বহু বছর ধরে। ফলে এখন জাপান মূলত প্রবীণদের দেশে পরিণত হয়েছে।

এই ধারা পাল্টানোর জন্য সরকার চেষ্টা করছে অনেক বছর ধরে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ সে রকম একটি পদক্ষেপ।

আগামী বছর জাপানের কেন্দ্রীয় সরকার এ খাতে স্থানীয় সরকারগুলোর জন্য দুই বিলিয়ন ইয়েন বা ১ কোটি ৯০ লাখ ডলার বরাদ্দ করেছে।

জাপানে অনেক স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ম্যাচ-মেকিং বা ঘটকালি সেবা দিয়ে থাকে। কোনও কোনও এলাকার কর্তৃপক্ষ এজন্য এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করছে। যারা জীবনসঙ্গী খুঁজছেন, তাদের যে ফর্মটি পূরণ করতে হয়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে সেটি বিশ্লেষণ করে এই কাজ অনেক ভালোভাবে করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এখন যেসব ব্যবস্থা চালু আছে, সেগুলোর ঘটকালি দক্ষতা খুব সীমিত। সম্ভাব্য পাত্র-পাত্রী খোঁজার সময় এখানে কেবল বয়স বা আয়ের সীমাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়। একেবারে যে রকম সঙ্গী কেউ খুঁজছেন, কেবল সেরকম কেউ থাকলেই তাকে সার্চ রেজাল্টে খুঁজে পাওয়া যায়।

জাপানের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, সরকারের এই তহবিল যোগানো হবে আরও উন্নত প্রযুক্তি তৈরির জন্য। যেখানে পাত্র-পাত্রী খোঁজার ক্ষেত্রে কারও শখ ও মূল্যবোধের মতো বিষয়গুলোকেও বিবেচনায় নেওয়া যাবে।

সরকারের একজন মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘যেসব স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটকালির সেবা চালু করেছে বা করতে যাচ্ছে, আমরা বিশেষ করে তাদেরকেই সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা করছি। আশা করি এ ধরনের সহায়তার মাধ্যমে আমরা জাপানের জন্মহার কমার বর্তমান ধারাটি বদলে দিতে পারবো।’

২০১৭ সালে জাপানের জনসংখ্যা যেখানে ছিল ১২ কোটি ৮০ লাখ, সেখান থেকে এই শতকের শেষে তা ৫ কোটি ৩০ লাখে নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জাপানে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমছে, অথচ বাড়ছে অবসরে যাওয়া প্রবীণ মানুষের সংখ্যা। এ অবস্থায় কিভাবে সরকারের বাড়তে থাকা জনকল্যাণ ব্যয়ের খরচ মেটানো যাবে, সেটা নিয়ে নীতিনির্ধারকরা এখন চিন্তিত।

সাচিকো হরিগুচি হচ্ছেন জাপানের টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক এবং চিকিৎসা নৃতত্ত্ববিদ। তিনি মনে করেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে টাকা জোগানোর চেয়ে অনেক ভালো উপায় সরকারের সামনে আছে জন্মহার বাড়ানোর জন্য। যেমন নিম্ন আয়ের তরুণ-তরুণীদের সহায়তা দেওয়া।

এক্ষেত্রে তিনি সাম্প্রতিক এক গবেষণার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। এতে বলা হচ্ছে, জাপানে প্রাপ্তবয়স্ক তরুণদের মধ্যে রোমান্টিক সম্পর্কের ব্যাপারে অনাগ্রহ এবং তাদের নিম্ন আয়ের মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে।

ড. হরিগুচির ভাষায়, ‘যদি তারা কারও সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে না চায়, তাহলে সেখানে ঘটকালি করে কোনও লাভ হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করতেই হয়, তাহলে ঘরের কাজকর্ম কিংবা শিশুদের দেখাশোনা করতে পারে সে রকম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স রোবটই বরং বেশি কাজে দেবে।’

জাপানে যে কর্মরত মায়েদের কোনও রকম সহায়তা দেওয়া হয় না, বিশ্লেষকরা বহুদিন ধরে তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। দেশটিতে আশা করা হয় যে, একজন নারী তার চাকরির পাশাপাশি ঘরের সব কাজকর্ম সামলাবেন এবং শিশুদের বড় করবেন।

সরকার বলছে, তারা জাপানে মেয়েরা যাতে আরও বেশি সংখ্যায় পূর্ণকালীন চাকুরিতে আসে, সেটিকে উৎসাহিত করতে চায়। কিন্তু সাম্প্রতিককালে দেশটিতে কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য আরও বেড়েছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, লিঙ্গ সমতার দিক থেকে বিশ্বের ১৫৩টি দেশের মধ্যে জাপানের অবস্থান ১২১। আগের বছরের তুলনায় জাপানের অবস্থান আরও ১১ ধাপ নিচে নেমে গেছে। সূত্র: বিবিসি।

/এমপি/
সম্পর্কিত
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৫ অভিবাসী নিহত
তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে সিরিজ ভূমিকম্প
আবারও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলো উত্তর কোরিয়া
সর্বশেষ খবর
পোড়া রোগীদের যন্ত্রণা বাড়াচ্ছে তাপপ্রবাহ
পোড়া রোগীদের যন্ত্রণা বাড়াচ্ছে তাপপ্রবাহ
নিখোঁজের ২৫ দিন পর ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার
নিখোঁজের ২৫ দিন পর ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার
যুক্তরাষ্ট্র বড় শক্তি, তাদের পরোয়া করতে হয়: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্র বড় শক্তি, তাদের পরোয়া করতে হয়: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
ব্যাংক ডাকাতি রোধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে
ব্যাংক ডাকাতি রোধে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
৭ দফা আবেদন করেও প্রশাসনের সহায়তা পায়নি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট
৭ দফা আবেদন করেও প্রশাসনের সহায়তা পায়নি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট