সরকার বিএনপিকে শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল বিরোধীদলের ভূমিকায় দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিরোধীদল শক্তিশালী হলে গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় গুণগত পরিবর্তন আসে।’
রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) ওবায়দুল কাদের তার সংসদ ভবনস্থ সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয়ে অনলাইন ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন।
‘বিএনপি নেতাদের সরকার দেশে শূন্য করতে চায়’ দলটির এমন বক্তব্যকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অবান্তর হিসেবে অবিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘সরকার বিএপিকে শক্তিশালী এবং দায়িত্বশীল বিরোধীদলের ভূমিকায় দেখতে চায়। দেশের জনগণও চায় বিএনপি মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াক। জনগণ চায় তারা স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতা ছেড়ে দিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনায় রাজনীতি করুক।’
একদলীয় কোনও চর্চা সরকারের কাজে ও মনস্তত্বে নেই উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। সে জন্যই সমৃদ্ধ আগামী গড়তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দায়িত্বশীল বিরোধীদল প্রত্যাশা করে।’
কিন্তু বিএনপি’র আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। আর সেজন্যই তারা নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের আগেই হেরে যায় মন্তব্য করে তিনি বিএনপি’র রাজনীতিকে কচ্ছপের সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি একবার মাথা বের করে, পরক্ষণেই আবার মাথা লুকিয়ে নেয়।’
সরকারের বিরুদ্ধে আদালতকে ব্যবহার করার অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। উচ্চ ও নিম্ন আদালতে সরকারের কোনও হস্তক্ষেপ নেই। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা আছে বলেই সরকার বিচারিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে না, বরং বিএনপিই দ্বিচারিতার আশ্রয় নেয় আইন-আদালতকে ঘিরে। তারা মামলায় জিতলে বলে বিচার বিভাগ স্বাধীন, আর হারলে বলে সরকার হস্তক্ষেপ করেছে।’
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি অংশ নিয়েছিল অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি তখন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ব্যাহত ও বাধাগ্রস্ত করতে এবং গণতন্ত্রকে সংকটে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণ ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে সরকার গঠন করার সুযোগ দিয়েছিল বলেই সমগ্র বাংলাদেশে আজ উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি অর্জনের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।’
নির্বাচন নিয়ে বিএনপি’র অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাদের প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘তাহলে তারা নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে যাননি কেন?’ জনগণ ও রাষ্ট্রের সম্পদ আগুনে যারা পোড়ায়, সন্ত্রাস নির্ভরতা যাদের আন্দোলনের চালিকাশক্তি, তাদের হাত থেকে জনগণের প্রাণ আর সম্পদের সুরক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আন্দোলন আর সন্ত্রাস এক কথা নয়, প্রতিবাদ আর সহিংসতা এক কথা নয়।’
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ব্লুমবার্গ টিভির প্রতিবেদনে করোনা মোকাবিলায় সরকারের প্রশংসার বিষয়টি তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি মোকাবিলা করে আর্থসামাজিক অবস্থা ধরে রেখে বসবাস উপযোগী ধারা বজায় রাখতে বিশ্বের শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। কোভিড সহনশীলতা র্যাংকিং এ জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে শেখ হাসিনার দূরদর্শী, সুদক্ষ ও মানবিক নেতৃত্বের পরিচয় স্পষ্ট হয়েছে।’
সরকারের এই উন্নয়ন ও অর্জনের সংবাদ বিএনপি চোখে দেখে না বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
