X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

বন কেন্দ্রিক দুর্নীতি প্রতিরোধে করণীয়

মো. রেযাউল করিম
০৭ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:১২আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:১২

মো. রেযাউল করিম পরিবেশের সুষম ভারসাম্য রক্ষাসহ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে অবিচ্ছেদ্য অংশ বন। বাংলাদেশে বন উজাড়ের হার উদ্বেগজনক। গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের তথ্যমতে, ২০০১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশে মোট ৪ লাখ ৩২ হাজার ২৫০ একর এলাকার বৃক্ষ আচ্ছাদন হ্রাস পেয়েছে, যা মোট বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকার প্রায় নয় শতাংশ। উদ্বেগজনকভাবে বন হ্রাস পাওয়ার পেছনে বন কেন্দ্রিক অনিয়ম ও দুর্নীতির ভূমিকাই প্রধান। বন ও বনজ-সম্পদের প্রধান নিয়ন্ত্রক ও রক্ষক হিসেবে বন অধিদফতরের ভূমিকা ও কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ।

সম্প্রতি টিআইবি পরিচালিত একটি গবেষণায় (ডিসেম্বর ৩০, ২০২০ প্রকাশিত) অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ে বন অধিদফতর ও বন খাত সংশ্লিষ্ট সুশাসনের চ্যালেঞ্জ, অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। উক্ত গবেষণায় দেখা যায়, প্রায় ৯৩ বছরের পুরনো বন আইনটির (১৯২৭) আমূল সংস্কার, প্রয়োজনীয় বিধিমালা, সম্পূরক আইন ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে কার্যকর উদ্যোগ অনুপস্থিত। আধুনিক প্রযুক্তির (যেমন- রিমোট সেনসিং) সম্প্রসারণসহ ও কার্যকর ব্যবহারকে প্রাধান্য দিয়ে বন অধিদফতরের সার্বিক প্রশাসনিক ও জনবল কাঠামো পুরোপুরি পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। গতানুগতিক বন ব্যবস্থাপনাকে (যথা, বন টহল) বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যমান জনবলের প্রায় ৪২ শতাংশ বৃদ্ধিসহ অধিদফতরের জন্য প্রস্তাবিত নতুন সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদন করা হলে বাংলাদেশে বন সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় গুণগত কোনও পরিবর্তন না হওয়া এবং বন কেন্দ্রিক দুর্নীতিসহ বাড়তি জনবল বাবদ রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের ঘটনা অব্যাহত থাকার ঝুঁকি রয়েছে বলে গবেষণায় প্রতীয়মান হয়।

বন খাত কেন্দ্রিক সুশাসনের ব্যত্যয় সংক্রান্ত টিআইবির পর্যবেক্ষণ- 

বনজীবীদের অধিকার সুরক্ষা না হওয়া: অধিদফতরের কর্মকাণ্ড বননির্ভর জনগোষ্ঠীর প্রথাগত ভূমি অধিকার সুরক্ষা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নয়। বননির্ভর জনগোষ্ঠীর প্রথাগত ভূমি অধিকার হরণ, বন আইন লঙ্ঘন করে ও একতরফা সংরক্ষিত বন, বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য, জাতীয় উদ্যান ঘোষণাসহ জবরদখল উচ্ছেদের নামে বৈষম্যমূলকভাবে ক্ষমতা চর্চার সাম্প্রতিক উদাহরণ রয়েছে।

বন রক্ষায় অক্ষমতা: বন অধিদফতর, ইউনেসকো ও বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের জন্য রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত হলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের বিপক্ষে অধিদফতর শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেনি। বন্যহাতির অভয়ারণ্য ও জাতীয় উদ্যানসমূহের মধ্য দিয়ে দোহাজারী-গুনদুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে অধিদফতরের সম্মতি জ্ঞাপন সংস্থাটির দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ। মহেশখালী ও মাতারবাড়িতে বাস্তবায়নাধীন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প দ্বারা সংলগ্ন উপকূলীয় শ্বাসমূলীয় বন ধ্বংস; কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণকালে দুই হাজারের অধিক গর্জন গাছ কর্তন; সাঙ্গু ও মাতামুহুরী সংরক্ষিত গভীর বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে সড়ক নির্মাণ; রামু ও রুমা উপজেলায় সেনানিবাস স্থাপন দ্বারা বন্য হাতির অভয়ারণ্য বিপন্ন করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অধিদফতরের নিজস্ব সক্ষমতার পূর্ণ প্রয়োগ হয়নি। মূলত নতজানু অবস্থানের কারণে ইতোমধ্যে এক লক্ষ ৬০ হাজার ২৪০ একর জমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ নিয়েছে এবং এই প্রক্রিয়া উদ্বেগজনকভাবে অব্যাহত রয়েছে।

বনভূমি পুনরুদ্ধারে ব্যর্থতা: ২০১৯ সালের ডিসেম্বর অবধি মোট দুই লক্ষ ৮৭ হাজার ৪৫৩ একর বনভূমি জবরদখল করা হলেও অধিদফতর সর্বশেষ পাঁচ বছরে মাত্র আট হাজার ৭৯২ একর (৩%) জবরদখলকৃত বনভূমি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জবরদখলে থাকা বনভূমির জমি দখলমুক্তকরণ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সাঁড়াশি পদক্ষেপ গ্রহণের নজির বিরল। প্রভাবশালী জবরদখলকারীদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শুধু চিঠি আদান-প্রদানে সীমাবদ্ধ থাকার উদাহরণ রয়েছে।

ক্ষমতা অপব্যবহার: বনভূমির জমির দাগ ও খতিয়ানে ইচ্ছাকৃত ভুল তথ্য সংযোজন করে বনভূমি জবরদখলের সুযোগ প্রদানের অভিযোগ রয়েছে। মধুপুর ও কালিয়াকৈর উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে বনের জমিতে জনসাধারণকে বিধিবহির্ভূতভাবে অর্থের বিনিময়ে অর্থকরী ফসল আবাদের সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে প্রভাবশালীদের সামাজিক বনায়নের প্লট বরাদ্দের অভিযোগ রয়েছে। অবৈধ বনজ-সম্পদ পরিবহনে বাধা সৃষ্টি, আটক ও জব্দ না করতে অধস্তন বন কর্মীদের নির্দেশ প্রদান এবং তা অমান্য করলে অন্যত্র শাস্তিমূলক বদলিসহ চাকরিতে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে।

দায়িত্বে অবহেলা: সংরক্ষিত বন ও এর আশপাশে বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, ত্রুটিপূর্ণ পরিবেশ ও সামাজিক সমীক্ষা সম্পাদন এবং এসবের উদ্দেশ্যমূলকভাবে অনুমোদনের ঘটনায় সার্বিকভাবে অধিদফতরের ওপর অর্পিত ক্ষমতা প্রয়োগে ব্যর্থতাও প্রত্যক্ষ করা যায়। তাছাড়া বনের জমি অবৈধভাবে দখল, বনভূমির জমি বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ দ্বারা প্রাকৃতিক বনের স্থায়ী ক্ষতিরোধে বন অধিদফতরের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা লক্ষ করা যায়।

যোগসাজশে বন ও বন্যপ্রাণী বিপন্ন: স্থানীয় ভূমি অফিস, স্যাটেলমেন্ট ও সাবরেজিস্ট্রার অফিসের কর্মী ও বনকর্মীদের একাংশের যোগসাজশে ভুয়া দলিল ও নথি তৈরি এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ডভুক্তির উদাহরণ রয়েছে। বনকর্মীদের একাংশের সংশ্লিষ্টতায় সারাদেশে সংরক্ষিত ও প্রাকৃতিক বনসমূহের ভেতরে ও এর আশপাশে স্থাপিত করাতকলে অবাধে সংশ্লিষ্ট বনের গাছ চেরাইয়ের উদাহরণ রয়েছে। অবৈধ বনজসম্পদ, যেমন- বাঘ, কুমির, হরিণের মাংস, কাঠ, ইত্যাদি আটক করার পরও পাচারকারীদের ক্ষেত্রবিশেষে গোপনে ছেড়ে দেওয়া কিংবা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অভিযোগ রয়েছে।

‘বদলি বাণিজ্য’: অধিদফতরে নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলি/পদায়নের একাংশের ক্ষেত্রে অর্থ ৫০ হাজার থেকে তিন কোটি টাকা পর্যন্ত বিধিবহির্ভূত লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। কোনও কোনও সময় প্রধান বন সংরক্ষক পদে পদোন্নতি বা পদায়ন দ্বারা নিয়োগের ক্ষেত্রে এক থেকে তিন কোটি টাকা, বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালক পদে এক থেকে দেড় কোটি টাকা ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হিসেবে বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে ২০-২৫ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ সদর দফতর, আঞ্চলিক ও বিভাগীয় বন কার্যালয়ের কর্মীদের একাংশ অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

অর্থ আত্মসাৎ: বনায়ন প্রকল্পের ৬১ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ বরাদ্দ প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের একাংশের যোগসাজশে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। মাঠ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা সাবেক একজন মন্ত্রীর নির্দেশে বাস্তবায়নাধীন একটি প্রকল্পের পুরো বিল ঠিকাদারকে প্রদানে বাধ্য হন। তাছাড়া ‘আর্থিকভাবে লোভনীয়’ বিট, চেক স্টেশন, ফাঁড়ি ও ক্যাম্প পর্যায়ের কর্মীদের বেতন সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা কর্তৃক নগদে বণ্টনকালে রেঞ্জ ও ডিএফও’র ‘মাসিক খরচ’ হিসেবে বেতনের একাংশ কেটে রাখার অভিযোগ রয়েছে। মোটরযানের মেরামত ও জ্বালানি বাবদ নগদ উত্তোলিত টাকার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কেটে রাখার অভিযোগ রয়েছে।

দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ: বন অধিদফতরের সব স্তরে বন কেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডের কার্যকর তদারকি, পরিবীক্ষণ ও ‘ফরেস্ট্রি পারফরম্যান্স অডিট’ অনুপস্থিতিতে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ হয়েছে বলে গবেষণায় প্রতীয়মান হয়। বন কেন্দ্রিক যোগসাজশপূর্ণ দুর্নীতির বিচারহীনতায় কার্যত বন ও জীববৈচিত্র্যের ধ্বংস উদ্বেগজনকভাবে অব্যাহত রয়েছে। দেশের প্রাকৃতিক বন ও বাস্তুতন্ত্র ক্রমাগত উজাড় ও বনের জমি উদ্বেগজনকভাবে জবরদখল সংক্রান্ত ঘটনার দায়ভার বন অধিদফতর এড়াতে পারে না।

সুপারিশ

নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে করণীয়: রাষ্ট্রীয় অতীব জরুরি প্রয়োজনে বনভূমি ব্যবহার ও ডি-রিজার্ভের পূর্বে বন অধিদফতরের অনুমতি গ্রহণ, ত্রুটিমুক্ত ইআইএ সম্পন্নকরণ ও সমপরিমাণ ভূমিতে প্রতিবেশ ও প্রতিবেশবান্ধব বনায়নে ‘কমপেনসেটরি এফরেস্টেশনের বিধি’ প্রণয়ন ও এর কার্যকর প্রয়োগ করতে হবে। বন খাত থেকে রাজস্ব সংগ্রহ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে; প্রাকৃতিক বনের বাণিজ্যিকায়ন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।

আইনি কাঠামোতে সংস্কার: বননির্ভর ও বনে বসবাসরত আদিবাসীদের প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি ও সুরক্ষাসহ বন আইনের আমূল সংস্কার ও প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়ন করতে হবে। এছাড়া কার্যকর জনঅংশগ্রহণমূলক বন সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে অধিদফতরের দায়িত্ব বিধিবদ্ধভাবে নির্ধারণ করতে হবে।

আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা: বন সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বিবেচনায় নিয়ে অধিদফতরের সার্বিক প্রশাসনিক কাঠামো পর্যালোচনাপূর্বক জনবল কাঠামো পুরোপুরি ঢেলে সাজাতে হবে। বন কর্মীদের মাঠ পর্যায়ে সার্কেল ও বিভাগভিত্তিক বাধ্যতামূলক ও পালাক্রমিক বদলির বিধান প্রবর্তন ও এর যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে।

বিজ্ঞানভিত্তিক বন ব্যবস্থাপনা: বনায়ন, বন সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমভিত্তিক প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও এর কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বন ব্যবস্থাপনায় সার্ভিলেন্স ড্রোন, ট্রাকিং ডিভাইস, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম, স্যাটেলাইট ইমেজের কার্যকর প্রয়োগ করতে হবে। জমির দলিল, রেকর্ডপত্র ও মানচিত্র, মামলার আলামত ইত্যাদি ডিজিটাইজ করতে হবে। সিএস রেকর্ডের ভিত্তিতে সরকারি বনভূমির সীমানা চিহ্নিত করে তা জনসমক্ষে দৃশ্যমান ও অবহিতকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এখন পর্যন্ত জবরদখলকৃত বনভূমির ওপর বস্তুনিষ্ঠ তথ্যভাণ্ডার তৈরিপূর্বক তা উদ্ধারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

স্থানীয় প্রজাতির বৃক্ষের বনায়ন: সংরক্ষিত বনের জমিতে আগ্রাসী প্রজাতির (ইউকেলিপটাস) ও নির্দিষ্ট মেয়াদভিত্তিক বৃক্ষের সামাজিক বনায়ন কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। বৃক্ষশূন্য প্রাকৃতিক বন পূর্বের অবস্থায় তথা প্রাকৃতিক বনে রূপদানের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিতে হবে। ইতোমধ্যে সৃজিত সামাজিক বনের গাছ না কেটে মেয়াদোত্তীর্ণ বনসমূহের উপকারভোগীদের মুনাফা প্রদানসহ বনকে প্রাকৃতিক বনে রূপান্তরের লক্ষ্যে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বাজেট বরাদ্দ ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা: সকল স্তরের কার্যালয়সমূহে অর্থ বণ্টন ও লেনদেন অনলাইন/মোবাইল ব্যাংকিংভিত্তিক করতে হবে। সব কর্মীর বেতন ভাতা নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি প্রেরণের ব্যবস্থা করতে হবে। বন মামলা পরিচালনা জন্য পৃথক বরাদ্দ ও আইনজীবীদের ফি যৌক্তিক পরিমাণে বৃদ্ধি ও তার যথাযথ ব্যবহারে কার্যকর জবাবদিহি রাখতে হবে।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি: সব কার্যালয়ের কর্মকাণ্ড কার্যকর তদারকি ও পরিবীক্ষণ ব্যবস্থার আওতায় আনতে হবে। বনায়ন ও বন সংরক্ষণ কার্যক্রম নিরীক্ষায় ফরেস্ট্রি পারফরম্যান্স অডিট ব্যবস্থা প্রবর্তন ও এর কার্যকর চর্চা নিশ্চিত করতে হবে। হয়রানিমুক্ত পরিবেশে অভিযোগ গ্রহণ ও প্রাপ্ত অভিযোগ একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিরসনে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির আওতায় রাখতে হবে।

স্বতঃপ্রণোদিত তথ্য প্রকাশ: ওয়েবসাইটে সব প্রকার বাজেট ও বরাদ্দসহ বিভিন্ন সংস্থাকে বরাদ্দকৃত ও জবরদখল হওয়া ভূমির পরিমাণের ওপর পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ ও নিয়মিত হালনাগাদ করতে হবে।

দুর্নীতি প্রতিরোধে পদক্ষেপ: বন অধিদফতর ও বন কেন্দ্রিক অনিয়ম-দুর্নীতি এবং বিভাগীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তি প্রদানের নজির স্থাপন করতে হবে।

লেখক: প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

(কৃতজ্ঞতা: নিবন্ধটি মূলত টিআইবি প্রকাশিত “বন অধিদফতর: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়” শীর্ষক গবেষণার তথ্যভিত্তিক। এতে সহ-গবেষক ছিলেন মো. নেওয়াজুল মওলা ও মোহাম্মদ নূরে আলম)।

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
পথের পাশের বাহারি শরবতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা?
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রণালয়ে সভা করে ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
লাগাতার তাপদাহে যশোরে জনজীবন দুর্ভোগে
লাগাতার তাপদাহে যশোরে জনজীবন দুর্ভোগে
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ