মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ইউএস ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের ভয়াবহ তাণ্ডবের ঘটনার পর এই প্রথম পরস্পরের মুখোমুখি হলেন তারা। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিছুটা নীরবতার পর স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় দুই নেতার মধ্যে ‘ভালো আলোচনা’ হয়েছে। এমন সময়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো যখন ট্রাম্পকে সরিয়ে দিতে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য ডেমোক্র্যাটদের চাপের মুখে রয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।
রয়টার্স জানিয়েছে, বৈঠকে সেদিন ইউএস ক্যাপিটলে হামলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে একমত হন যে, গত সপ্তাহে যারা আইন ভঙ্গ করে ইউএস ক্যাপিটলে হামলা চালিয়েছে তারা ‘আমেরিকা ফার্স্ট আন্দোলনকে’ প্রতিনিধিত্ব করে না। সূত্র জানিয়েছে, গত চার বছরে ট্রাম্প প্রশাসনের অর্জন নিয়েও কথা বলেন দুই নেতা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের রুলস কমিটির চেয়ারপার্সন জিম ম্যাকগভের্ন বলেছেন, আগামী বুধবার ট্রাম্পের অভিশংসন প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হতে পারে। প্রতিনিধি পরিষদের ওই ভোটাভুটিতে প্রস্তাবটি পাস হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ইউএস ক্যাপিটলে গত সপ্তাহেই ভয়াবহ ওই তাণ্ডব চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। মার্কিন গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে পরিচিত ভবনটির ভেতরে যেভাবে এ সহিংসতা চালানো হয়েছে সেটি ছিল নজিরবিহীন। এ সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগেই ট্রাম্পকে অভিশংসনের দাবি উঠে। এমন পরিস্থিতিতেই অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে ডেমোক্র্যাটরা।
সোমবার ডেমোক্র্যাটিক রিপ্রেজেন্টেটিভ জিম ম্যাকগভের্ন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বিবেকবর্জিত কাজ করেছেন। এর জন্য তাকে দায়ী করতে হবে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা খুব গুরুত্ব সহকারে এবং সুচিন্তিত উপায়ে কাজ করছি কিনা তা জরুরি। আশা করছি বুধবার প্রতিনিধি পরিষদই এর সুরাহা করবে। আমার প্রত্যাশা প্রস্তাবটি পাস হবে।’
অভিশংসন প্রস্তাবে ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার মধ্য দিয়ে উচ্চ পর্যায়ের অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। আইনপ্রণেতাদের যুক্তি, ট্রাম্প যেভাবে নির্বাচনকে খর্ব করেছেন এবং ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে হামলার দিন সমর্থকদের যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন তার মধ্য দিয়ে ‘তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার দায়িত্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছেন। এমন পরিস্থিতিতেই সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স।