X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯

পারিবারিক, শিশুতোষ ও মুক্তিযুদ্ধের ছবি নির্মাণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বিনোদন রিপোর্ট
১৭ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:৫৮আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:২১

সুস্থ ধারা তথা পারিবারিক, শিশুতোষ ও মুক্তিযুদ্ধের ছবি নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আহ্বান করেন এই বলে, ‘এমনভাবে সিনেমা তৈরি করতে হবে, যেন পরিবার-পরিজন নিয়ে দেখতে পারি।’

রবিবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

সমাজ গঠনে চলচ্চিত্রের ভূমিকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি একজন রাজনীতিক। বক্তৃতা দিয়ে মানুষকে যত কথাই বলি না কেন, একটা নাটক, একটা সিনেমা, একটা গানের মধ্য দিয়ে বা একটা কবিতার মধ্য দিয়ে কিন্তু অনেক কথা বলা যায়। মানুষের অন্তরে প্রবেশ করা যায়, মনের গহিনে প্রবেশ করা যায়। সেজন্য এর একটা আবেদন কিন্তু রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের শিশুদের জন্য সিনেমা তৈরি করা একান্তভাবে প্রয়োজন। এর মধ্য দিয়ে একটা শিশু জীবনকে দেখতে পারবে, বড় হতে পারবে।’

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে মহান স্বাধীনতা অর্জন, যে বিজয়ের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, নীতি-আদর্শ- আমাদের সিনেমায় সেগুলো প্রতিফলিত হওয়া একান্ত দরকার।’

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ও সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

এতে উপস্থিত ছিলেন, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, তথ্য সচিব খাজা মিয়াসহ চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি অঙ্গনের নবীন-প্রবীণ শিল্পী-অভিনেতা ও নির্মাতারা।

২০১৯ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য থেকে ২৬টি ক্যাটাগরিতে ছয়টি যুগ্মসহ মোট ৩৩ জনকে জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হয়।

এবার আজীবন সম্মাননা (যুগ্ম) পান চলচ্চিত্র অভিনেতা-প্রযোজক-পরিচালক মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও অভিনেত্রী কোহিনুর আক্তার সুচন্দা।

পুরস্কার গ্রহণের পর অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে সোহেল রানা বলেন, ‘জীবনের প্রথম পুরস্কার নিয়েছিলাম আজকের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে। আজও ভেবেছিলাম প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কারটি নেবো। এসে শুনলাম ওনার হাত থেকে পুরস্কার নিতে পারছি না। আমি যখন জানতে পারলাম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আমাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে, তখন আমার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হলো। হৃদয়ের মাঝখানে আমার মনে হলো একটা দুঃখবোধ চলে এলো। কিন্তু আমি বুঝে উঠতে পারলাম না সেই দুঃখবোধটা কেন! চলচ্চিত্র জগতে আমি গত ৪৬ বছর ধরে কাজ করছি, এ সময়ে এসে চলচ্চিত্র জগতে আমার যতটুকু পাওনা ছিল, আজ বোধহয় তার ইতি হয়ে গেলো। সে কারণেই হয়তো দুঃখবোধটা।’

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। দেড়ঘণ্টার এ আয়োজন প্রধানমন্ত্রীও উপভোগ করেন গণভবন থেকে।

এতে একটি করে গানে অংশ নেন লিজা (শালুক শালুক), অলক সেন (সুরের ভুবনে) ও লুইপা-অপু (তুমি শুধু আমারই)। পাশাপাশি নাচে অংশ নেন চলচ্চিত্রের পাঁচ শিল্পী। এরা হলেন, ফেরদৌস-অপু বিশ্বাস, সাইমন সাদিক-মাহিয়া মাহি এবং নুসরাত ফারিয়া। এরমধ্যে ফারিয়া তার গাওয়া ‘পটাকা’ ও ‘আমি চাই থাকতে’ এবং ‘রসিক আমার’ গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করেন।

আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু ও শেষ হয় অভিনেত্রী সাদিয়া ইসলাম মৌ ও ওয়ার্দা রিহাবের দলীয় নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। পুরো আয়োজনটি উপস্থাপনা করেন অভিনেতা আনিসুল হক মিলন ও অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা।

একনজরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯:

আজীবন সম্মাননা: মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও কোহিনূর আক্তার সুচন্দা

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র: ন’ ডরাই ও ফাগুন হাওয়ায়

শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: নারী জীবন

শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: যা ছিল অন্ধকারে

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক: তানিম রহমান অংশু (ন’ ডরাই)

শ্রেষ্ঠ অভিনেতা: তারিক আনাম খান (আবার বসন্ত)

শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী: সুনেরাহ বিনতে কামাল (ন’ ডরাই)

শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-অভিনেতা: ফজলুর রহমান বাবু (ফাগুন হওয়ায়)

শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-অভিনেত্রী: নারগিস আক্তার (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)

শ্রেষ্ঠ খল-অভিনেতা: জাহিদ হাসান (সাপলুডু)

শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী: নাইমুর রহমান আপন (কালো মেঘের ভেলা) ও আফরীন আক্তার (যদি একদিন)

শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: মোস্তাফিজুর রহমান ইমন (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)

শ্রেষ্ঠ নৃত্যপরিচালক: হাবিবুর রহমান (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)

শ্রেষ্ঠ গায়ক: মৃণাল কান্তি দাস (তুমি চাইয়া দেখো- শাটল ট্রেন)

শ্রেষ্ঠ গায়িকা: মমতাজ বেগম (বাড়ির ওই পূর্বধারে- মায়া- দ্য লস্ট মাদার) ও ফাতিমা-তুয যাহরা ঐশী (মায়া, মায়ারে- মায়া- দ্য লস্ট মাদার)

শ্রেষ্ঠ গীতিকার: নির্মলেন্দু গুণ (ইস্টিশনে জন্ম আমার- কালো মেঘের ভেলা) ও কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (চলো হে বন্ধু- মায়া- দ্য লস্ট মাদার)

শ্রেষ্ঠ সুরকার: প্লাবন কোরেশী (বাড়ির ওই পূর্বধারে- মায়া দ্য লস্ট মাদার) ও তানভীর তারেক (আমার মায়ের আঁচল- মায়া দ্য লস্ট মাদার)

শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: মাসুদ পথিক (মায়া-দ্য লস্ট মাদার)

শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: মাহবুব উর রহমান (ন’ ডরাই)

শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: জাকির হোসেন রাজু (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)

শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: জুনায়েদ আহমেদ হালিম (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)

শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক: মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বসু ও ফরিদ আহমেদ (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)

শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: সুমন কুমার সরকার (ন’ ডরাই)

শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (ন’ ডরাই)

শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা: খন্দকার সাজিয়া আফরিন (ফাগুন হাওয়ায়)

শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান: রাজু (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)

/এম/এমএম/এমওএফ/
সম্পর্কিত
বিনোদন বিভাগের সর্বশেষ
ঈদে আরিয়ানের একমাত্র নির্মাণ ‘তখন যখন’
ঈদে আরিয়ানের একমাত্র নির্মাণ ‘তখন যখন’
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
শাকিব খান: নির্মাতা-প্রযোজকদের ফাঁকা বুলি, ভক্তরাই রাখলো মান!
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং