বিমানবন্দর এলাকায় স্বামী-স্ত্রী নিহতের ঘটনায় বাসচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গোয়েন্দা তথ্য এবং প্রথাগত ও প্রযুক্তিগত তদন্তের ভিত্তিতে তার অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) সিআইডি কার্যালয়ে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বাসচাককে গ্রেফতারের অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
ওই বাসচালকের নাম তসিকুল ইসলাম (২৮)। এ ঘটনায় বাসের হেলপার ও কনডাক্টর পলাতক রয়েছেন। তাদের ধরতে অভিযান চলছে বলেও জানান মুক্তা ধর।
এবিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক জানান, এঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা হয়েছে। থানা পুলিশ এই মামলার তদন্ত করছে। পাশাপাশি সিআইডিও ছায়া তদন্ত করে। সোমবার মধ্যরাতে তসিকুল ইসলামকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
শেখ ওমর বলেন, ‘চালক চাপা দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। আমরা তদন্ত করছি। তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে।’
এদিকে সিআইডি কার্যালয়ে ছবি তোলার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন চালক তসিকুল। তার দাবি, মোটরসাইকেলটি হঠাৎ তার সামনে আসে। কুয়াশার কারণে তিনি মোটরসাইকেলকে দেখতে না পারায় চাপা লেগে যায়।
তার লাইসেন্স আছে কি না জানতে চাইলে চালক বলেন, ‘আমার হালকা যান চালানোর লাইসেন্স আছে। ১০ বছর ধরে এই লাইসেন্স দিয়েই আমি গাড়ি চালাচ্ছি।’ সাধারণত বাস ও ট্রাক চালকদের পেশাদার ও ভারি যান চালানোর লাইসেন্স নিতে হয়।
সিআইডি জানায়, তসিকুল ইসলামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শেরপুর গ্রামে।
এর আগে, সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী আকাশ ইকবাল (৩৩) ও তার স্ত্রী মায়া হাজারিকা (২৫) নিহত হন। বিমানবন্দর এলাকার পদ্মা ওয়েল গেটের পাশে এ ঘটনা ঘটে। তাদের বাসা দক্ষিণখানের মোল্লারটেক এলাকায়। এ দম্পতির আরফা আনজুম নামের চার বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
দুর্ঘটনার বিষয়ে বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বি এম ফরমান আলী জানান, প্রথমে যাত্রীবাহী বাস মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান। পরে বাসটি তাদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তারা।
এসআই মশিউল আলম বলেন, ‘নিহত দুজনেরই মাথায় হেলমেট ছিল। পুলিশের মামলা থেকে বাঁচতে তারা নামমাত্র হেলমেট পরেছিলেন। নিম্নমানের হেলমেটে তাদের জীবন রক্ষা হয়নি।’
ফরিদপুর সদর উপজেলার ধুলদি গ্রামের জাফর শেখের ছেলে আকাশ। একই এলাকায় বাড়ি মায়ারও। একমাত্র মেয়ে আরফা আনজুমকে নিয়ে দক্ষিণখান মোল্লারটেক তেতুলতলা উদয়ন স্কুলের পাশে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন তারা। আকাশ উত্তরায় একটি ডেভেলপার কোম্পানিতে চাকরি করতেন। মায়া বিমানবন্দরে একটি রেস্টুরেন্টে চাকরি করতেন।