X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

আমেরিকার ইতিহাসে বারবার বিভক্তির বিপরীতে ঐক্য জিতেছে: বাইডেন

বিদেশ ডেস্ক
২০ জানুয়ারি ২০২১, ২৩:৪৯আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২১, ২৩:৫৫
image

প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েই অভিষেক ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ কিংবা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির মর্মমূলে আঘাত হানলেন। দরিদ্র শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের ভোট জিততে বিভক্তির সূত্রে ট্রাম্প তাদের বিপরীতে শত্রু হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলেন মুসলিম অভিবাসী আর মেক্সিকানদের। শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যের সেই বিদ্বেষী রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার ইতিহাসে বারবার বিভক্তির বিপরীতে ঐক্য জিতেছে। ক্ষোভ, ঘৃণা, উগ্রবাদ, বিচারহীনতা, সহিংসতা, রোগ, বেকারত্ব আর হতাশা কাটিয়ে উঠতে আমেরিকার জনগণের ঐক্যের ওপর জোর দিয়েছেন জো বাইডেন। বলেছেন, ‘ঐক্যের মাধ্যমে আমরা মহৎ কিছু করতে পারি, গুরুত্ব বিষয় বাস্তবায়ন করতে পারি।’

২০১৬ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বারাক ওবামার স্থলাভিষিক্ত হন ট্রাম্প। পশ্চিমের কথিত বিশ্বায়নের রাজনীতি ও অর্থনীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করান তিনি। নব্য উদারবাদী অর্থব্যবস্থা মানুষকে যেখানে বিপন্ন করেছিল, ট্রাম্পের হাত ধরে নগ্ন বাজার আর পুরনো সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ সেখানে নিজের উত্থান ঘোষণা করে। ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট সূত্রে তিনি বিভক্ত করেন মার্কিনসহ বিশ্বজনতাকে। ‘আমরা’  আর ‘ওরা’ বিভাজনের মধ্য দিয়ে ঘৃণার বেসাতি ছড়াতে থাকেন কৃষ্ণাঙ্গ-মেক্সিকান-মুসলমানদের বিরুদ্ধে। ৬টি মুসলিম দেশসহ ৮টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব করেও ব্যাপক সমালোচিত হন ট্রাম্প। নিয়েছেন একের পর এক অভিবাসী প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ। সর্বশেষ মধ্যপ্রাচ্যে পড়েছে তার নগ্ন সাম্রাজ্যবাদী থাবা। জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাজধানী ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত উসকে দিয়েছেন। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে গিয়েছেন অচেনা চেহারায়।

ট্রাম্প জমানার অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে জো বাইডেন বলেছেন, তার সমস্ত হৃদয়জুড়ে ঐক্যের প্রতিধ্বনি। ‘জানি যে শক্তি আমাদের বিভক্ত করেছে তা গভীর আর সেগুলো বাস্তব। কিন্তু এও জানি এগুলো নতুন নয়। আমাদের ইতিহাস হলো আমেরিকান আদর্শ হিসেবে পরিচিত আমাদের সমতার বোধ এবং আমাদের টুকরো টুকরো করে ফেলা বর্ণবাদ, স্বজনপ্রীতি,  ভয়, আর হুমকির মতো কঠোর বাস্তবতার মধ্যে চিরন্তন লড়াই,’ বলেন বাইডেন। তিনি আরও বলেন, ‘আজ, জানুয়ারির এই দিনে আমার সমস্ত আত্মা জুড়ে রয়েছে: আমেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, আমাদের জনগণের ঐক্য গড়তে হবে আর জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।’

নির্বাচনি প্রচারকাল থেকেই বলে আসা কথার পুনরাবৃত্তি করে জো বাইডেন বলেন, দেশ আজ অস্বাভাবিক চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। আর তা মোকাবিলায় আমেরিকানদের ঐক্য গড়ে তোলার বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ‘এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, (দেশের) আত্মা পুনর্বহাল এবং আমেরিকার প্রয়োজনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ঐক্যের প্রয়োজন।’

শপথ নেওয়ার পর অভিষেক ভাষণে বাইডেন বলেন, ‘এটা গণতন্ত্রের দিন, ইতিহাস এবং আশাবাদের দিন, আর নতুন করে শুরু করার আর সংকট সমাধান শুরুর দিন।’ বাইডেন বলেন, ‘জনগণের আকাঙ্ক্ষা শোনা হবে আর জনগণের আকাঙ্ক্ষার দিকে মনোযোগ দেওয়া হবে। তিনি বলেন, 'আমরা আবারও শিখেছি, গণতন্ত্র অমূল্য। গণতন্ত্র ভঙ্গুর। আর বন্ধুরা এই মুহূর্তে আমরা গণতন্ত্রের মধ্যে আছি।’

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অভিষেক ভাষণে উভয় দলের পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার পূর্ববর্তী উভয় দলের প্রেসিডেন্টদের আজ এখানে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানাই।  হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে তাদের ধন্যবাদ জানাই... আর আমি আমাদের সংবিধানের সহনশীলতা এবং শক্তি সম্পর্কে, জাতির শক্তি সম্পর্কে জানি।’

/জেজে/বিএ/
সম্পর্কিত
যুক্তরাষ্ট্র বড় শক্তি, তাদের পরোয়া করতে হয়: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
ঘুষ মামলায় আদালতের আদেশ লঙ্ঘন, ট্রাম্পের শাস্তি চান প্রসিকিউটররা
যুক্তরাষ্ট্র থেকে পার্সেলে তরুণদের কাছে আসছে কোটি টাকার মাদক
সর্বশেষ খবর
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
ঝুঁকি নিয়ে পজিশন বদলে সব আলো কেড়ে নিলেন রাফায়েল
ঝুঁকি নিয়ে পজিশন বদলে সব আলো কেড়ে নিলেন রাফায়েল
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক