X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

যে কারণে ব্রোকলিতে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের

দুলাল আবদুল্লাহ, রাজশাহী
২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১০:৩২আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১০:৩২

রাজশাহীতে কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিদেশি সবজি ব্রোকলির চাষ। উৎপাদন খরচ কম, লাভজনক বাজারমূল্য এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে গত ছয় থেকে সাত বছর ধরে রাজশাহীতে ধীরে ধীরে ব্রোকলির চাষ বাড়ছে। রাজশাহীর পবা উপজেলায় এই বিদেশি সবজির চাষ বেশি হচ্ছে। ব্রোকলিতে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের

ফুলকপির মতো দেখতে, তাই ব্রোকলিকে স্থানীয় চাষিরা ‘সবুজ ফুলকপি’ বলেও ডেকে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ব্রোকলি খুব জনপ্রিয়। তবে রাজশাহীতে এখনও এর পরিচিত ততটা নয়। ব্রোকলিতে ক্যান্সার প্রতিরোধী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় ও মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে পড়ায় বাজারে এর চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। ব্রোকলিতে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের

রাজশাহীর পবা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস এই সবজি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে। পবা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার জালাল উদ্দিন দেওয়ান জানান, পবা উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া ব্রোকলি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও ক্যান্সার প্রতিরোধী ব্রোকলি একটি অত্যন্ত লাভজনক সবজি। নতুন সবজি হিসেবে বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি। ব্রোকলির চাহিদা বাড়ায় এবং দাম ভালো পাওয়ায় আগামীতে এ সবজি চাষে কৃষকদের আগ্রহ আরও বাড়বে বলে তিনি মনে করেন। ব্রোকলি চাষ

পবা উপজেলার বড়গাছী দক্ষিণপাড়া এলাকার ব্রোকলি চাষি কুরমান আলী জানান, আমি এবছর এক বিঘা জমিতে ব্রোকলির চাষ করেছি। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এক বিঘা জমিতে ছয় হাজার ব্রোকলির চারা লাগিয়েছিলাম। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় আগামী বছর বেশি পরিমাণ জমিতে চাষ করবেন বলে জানান তিনি। ব্রোকলিতে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের

ব্রোকলি চাষি জালাল উদ্দিন জানান, রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয় বলে ব্রোকলি চাষে কীটনাশক কম লাগে। তাই উৎপাদন খরচ কম হয়। বাজারে চাহিদা বেশি হওয়ায় লাভ বেশি পাচ্ছি। ব্রোকলি চাষ

তিনি আরও বলেন, ফুলকপির মতো এর চাষাবাদ পদ্ধতি একই। চারা তৈরি থেকে মাত্র ৬৯ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা যায়। বিঘাপ্রতি ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজার পর্যন্ত ব্রোকলি চাষ করা যায় এবং মোট খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ব্রোকলি বিক্রি করে এবছর আয় হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারে প্রতিটি ব্রোকলি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়।

পবা উপজেলার পরিলা গ্রামের কৃষক বাবুল হোসেন জানান, অন্যান্য অনেক ফসলের তুলনায় ভালো বাজারমূল্য পাওয়ায় ব্রোকলি চাষ চাষ করছেন তিনি। ব্রোকলি

নগরীর সাহেব বাজার এলাকায় ব্রোকলি বিক্রেতা নরুউদ্দিন জানান, পবা উপজেলার চিটের মোড় এলাকায় বেশি চাষ হয় এই সবজি। বর্তমানে প্রতি পিস ছোট সাইজের ব্রোকালি পাঁচ টাকা ও বড় সাইজেরটা ১২ টাকা দরে পাইকারিতে কিনছি। আর আকার ভেদে খুচরা ১০ টাকা থেকে ২০ টাকার মধ্যে বিক্রি করি।

নগরীর সুলতানবাদ এলাকার গৃহবধূ মনওয়ারা বেগম বলেছিলেন, শীতের মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে নিয়মিত মৌসুমী শাকসবজি বেশি করে খাওয়া হচ্ছে। বাজার থেকে ব্রোকলি কিনে রান্না করি। ভালো স্বাদ রয়েছে। ব্রোকলিতে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের

পবা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, গত বছর কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে ব্রোকলি চাষ শুরু করা হয়। এখন তারা সফলতার মুখ দেখছেন। এ বছর বাণিজ্যিকভাবে সফলতা পাওয়ায় আগামী বছরগুলোতে ব্রোকলি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে ও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে আশা করছি।

তিনি আরও বলেন, গত বছর ১৮ হেক্টর জমিতে ব্রোকলি চাষ হয়েছিল এবং এবছর ২০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। ব্রোকলি চাষে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে পবা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। ব্রোকলি

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক শামছুল হক জানান, রাজশাহীতে ব্রোকলি আবাদে চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে। ফুলকপির চেয়ে ব্রোকলির পুষ্টিগুণ বেশি এবং লাভজনক। আগে অনেকেই এটা খেতে চাইতো না। এখন সেই ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। ব্রোকলি খেতেও সুস্বাদু। দেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ব্রোকলি চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।

 

/এফএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঢাকা ছেড়েছেন কাতারের আমির
ঢাকা ছেড়েছেন কাতারের আমির
জাহাজেই দেশে ফিরবেন এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক
জাহাজেই দেশে ফিরবেন এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক
তাপপ্রবাহের গেটওয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা, টানা ৪ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
তাপপ্রবাহের গেটওয়ে যশোর-চুয়াডাঙ্গা, টানা ৪ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের গল্প বাংলাদেশের পর্দায়
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
৭ দফা আবেদন করেও প্রশাসনের সহায়তা পায়নি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট
৭ দফা আবেদন করেও প্রশাসনের সহায়তা পায়নি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট