X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

তৃতীয় ধাপে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গাদের যাত্রা শুরু

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১৩:৩৫আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:০৭

কক্সবাজারের ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে স্বেচ্ছায় তৃতীয় দফায় ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে রোহিঙ্গাদের আরেকটি দল। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) ১২টা ২৫ মিনিটে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রামের পথে তাদের নিয়ে রওনা দিয়েছে ১৬টি বাস। পথের নিরাপত্তায় বিকল্প হিসেবে আরও একটি খালি বাস এই বহরে সংযুক্ত আছে। মালপত্র বহন করছে আরও কয়েকটি ট্রাক। সরেজমিন উপস্থিত থেকে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে বাসগুলোতে ঠিক কতজন রোহিঙ্গা উঠেছেন তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের একটি সূত্রের দাবি, সপরিবারে  আনুমানিক ৫০০ রোহিঙ্গা উঠেছেন বাসগুলোতে। তবে আজ আরও বাস যাবে এবং মোট সংখ্যা এ প্রক্রিয়া শেষে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।

রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প ছেড়ে ভাসানচরের পথে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। তিনি জানান, বেলা ১২টার দিকে রোহিঙ্গাদের একটি দল বাসে করে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে উখিয়া ত্যাগ করেছে। সেখানে কতজন রোহিঙ্গা আছে সেটা এখন বলা মুশকির। দিন শেষে মোট কতজন যাচ্ছে সেটা বলা যাবে। ধাপে ধাপে রোহিঙ্গাদের যারা যেতে ইচ্ছুক তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাস

জানা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গত রাত থেকেই রোহিঙ্গারা সপরিবারে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে আসতে থাকে। সকালের মধ্যে সেখানে হাজার খানেক রোহিঙ্গাকে দেখা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, তাদের নাম নিবন্ধন চলছে। যাদের নিবন্ধন সম্পন্ন হচ্ছে তাদের মালপত্র ট্রাকে তুলে পরিবার সদস্যদের বাসে ওঠানো হচ্ছে। প্রথমে ১৬টি বাসে তাদের ওঠানো হয়।  এগুলোর কোনও বাস ভরা আবার কোনোটাতে কম যাত্রী দেখা গেছে। নিবন্ধন প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। প্রথম ধাপের পর দ্বিতীয় ধাপে আবারও বাস সাজানো হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের তোলার জন্য নিবন্ধনের কাজও চলছে।   

সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে, আজ সন্ধ্যা বা রাতের মধ্যে বাসে ওঠা নিবন্ধিত রোহিঙ্গারা চট্টগ্রামের বিএন শাহীন কলেজের ট্রানিজট ক্যাম্পে পৌঁছাবেন। সেখানে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষে নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় আগামীকাল তাদের জাহাজে তোলা হবে। ২৯ জানুয়ারি তারা ভাসানচরে পৌঁছাবেন।

ভাসানচরে রওনা হওয়া মো. ইব্রাহিম নামে এক রোহিঙ্গার কাছে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার পরিবার সদস্যরা আগে সেখানে গিয়েছেন। সেখান থেকে তারা ভাসানচরের যে বর্ণনা দিয়েছেন তাতে আমারও যেতে ইচ্ছা করছে। এখানে ঘিঞ্জি, নোংরা, ঝুপড়ি ঘরের চেয়ে ওখানে উন্নত জীবন আছে। সেখানে কাজের সুযোগ পাওয়া যাবে শুনেছি। তাই সেখানে চলে যাচ্ছি।    

গত ২৯ ডিসেম্বর ১ হাজার ৮০৪ জনের দ্বিতীয় দলটিকে ভাসানচরে নেওয়ার ঠিক এক মাস পরে রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দলটি সেখানে যাচ্ছে। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা হাসিমুখে ভাসানচরে পৌঁছায়।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেওয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে ঘিঞ্জি পরিবেশে বসবাস করছেন।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে 'দেরি করে আসায়' ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
শেষ দিকে বৃথা গেলো চেষ্টা, ৪ রানে হেরেছে পাকিস্তান 
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা