X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

সুরক্ষার স্থায়ী ব্যবস্থা সর্বজনীন পেনশন

প্রণব মজুমদার
২২ জুলাই ২০২২, ১৮:১১আপডেট : ২২ জুলাই ২০২২, ১৮:১১
২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অবশেষে তা আলোর মুখ দেখতে চলেছে।

এ নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ কৌশলপত্র অনুযায়ী তৈরিকৃত ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২২’র খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ২০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় যা থাকছে

১। ১৮-৫০ বছর বয়সী সব কর্মক্ষম নাগরিক সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।

২। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

৩। সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীদের আপাতত নতুন জাতীয় পেনশন ব্যবস্থার বাইরে রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।

৪। জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে দেশের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিক পেনশন হিসাব খুলতে পারবেন।

৫। প্রাথমিক এ পদ্ধতি স্বেচ্ছাধীন থাকবে, যা পরবর্তী সময়ে বাধ্যতামূলক করা হবে।

৬। ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়া সাপেক্ষে মাসিক পেনশন পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে।

৭। প্রতিটি নাগরিকের জন্য একটি আলাদা পেনশন হিসাব থাকবে। ফলে চাকরি পরিবর্তন করলেও পেনশন হিসাব অপরিবর্তিত থাকবে।

৮। এই পেনশন পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। তবে এ ক্ষেত্রে কর্মী বা প্রতিষ্ঠানের চাঁদা জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ দ্বারা নির্ধারিত হবে।

৯। মাসিক সর্বনিম্ন চাঁদার হার নির্ধারিত থাকবে; তবে প্রবাসী কর্মীরা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা জমা দিতে পারবেন।

১০। সুবিধাভোগী বছরে ন্যূনতম বার্ষিক জমা নিশ্চিত করবে। অন্যথায় তার হিসাব সাময়িকভাবে স্থগিত হবে এবং পরে বিলম্ব ফিসসহ বকেয়া চাঁদা দেওয়ার মাধ্যমে হিসাব সচল করা হবে।

১১। সুবিধাভোগী আর্থিক সক্ষমতার ভিত্তিতে চাঁদা হিসেবে বর্ধিত অর্থ (সর্বনিম্ন ধাপের অতিরিক্ত যেকোনও অঙ্ক) জমা করতে পারবেন।

১২। পেনশনের জন্য নির্ধারিত বয়সসীমা (৬০ বছর) পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জিভূত লভ্যাংশসহ জমার বিপরীতে নির্ধারিত হারে পেনশন প্রদেয় হবে।

১৩। পেনশনাররা আজীবন অর্থাৎ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন।

১৪। নিবন্ধিত চাঁদা জমাকারী পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে জমাকারীর নমিনি অবশিষ্ট সময়কালের (মূল জমাকারীর বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন।

১৫। পেনশন স্কিমে জমা করা অর্থ কোনও পর্যায়ে এককালীন উত্তোলনের সুযোগ থাকবে না। তবে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমা করা অর্থের  সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে উত্তোলন করা যাবে, যা সুদসহ পরিশোধ করতে হবে।

১৬। কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে নিবন্ধিত চাঁদা দেওয়া ব্যক্তি মারা গেলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।

১৭। পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে।

১৮। এ ব্যবস্থা স্থানান্তরযোগ্য ও সহজগম্য; অর্থাৎ কর্মী চাকরি পরিবর্তন বা স্থান পরিবর্তন করলেও তার অবসর হিসাবের স্থিতি, চাঁদা দেওয়া ও অবসর সুবিধা অব্যাহত থাকবে।

১৯। নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকদের ক্ষেত্রে পেনশন স্কিমে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে দিতে পারে।

২০। পেনশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ব্যয় সরকার নির্বাহ করবে।

২১। পেনশন কর্তৃপক্ষ তহবিলে জমাকৃত টাকা নির্ধারিত গাইডলাইন অনুযায়ী বিনিয়োগ করবে (সর্বোচ্চ আর্থিক রিটার্ন নিশ্চিতকরণে)।

অর্থ বিভাগ কৌশলপত্র অনুযায়ী তৈরিকৃত কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর তুলনায় কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেশি থাকায় সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি শুরু করার এখনই প্রকৃত সময়।’

বিশ্বজুড়ে সাধারণত আনফান্ডেড, ফান্ডেড, ডিফাইন্ড বেনিফিটস (ডিবি), ডিফাইন্ড কন্ট্রিবিউশনস (ডিসি)- এই চার ধরনের পেনশন পদ্ধতি চালু রয়েছে। আনফান্ডেড পেনশনে কোনও কর্মীকে চাঁদা দিতে হয় না বলে এটির জন্য কোনও তহবিলও সৃষ্টি হয় না। ফান্ডেড পেনশনে কর্মী বা প্রতিষ্ঠান বা উভয়কেই চাঁদা দিতে হয়। ডিবি পদ্ধতি সরকারি কর্মচারীদের জন্য। ডিসি পদ্ধতিতে কর্মী বা প্রতিষ্ঠান থেকে একটি তহবিলে অর্থ জমা হয় এবং সেখান থেকেই ব্যয় নির্বাহ করা হয়। কোনও কোনও দেশে অবশ্য বিমা কোম্পানির মাধ্যমেও পেনশন ব্যবস্থা চালু আছে।

মতামতের জন্য জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়াটি ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে। কৌশলপত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পেনশন ব্যবস্থার একটি চিত্র তুলে ধরেছে অর্থ বিভাগ।

দেশে দেশে বিভিন্ন ধরনের পেনশন পদ্ধতি চালু রয়েছে। প্রতিবেশী ভারতে ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জাতীয় পেনশন ব্যবস্থা (এনপিএস) চালু করা হয়। শুরুতে সামরিক বিভাগ ছাড়া শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের জন্য চালু করা হয় এটি। গ্রাহক ও নিয়োগ কর্তা বা সরকার নির্দিষ্ট পরিমাণে চাঁদা দেয় এনপিএসে, যা পরে লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করা হয়। এতে ৬০ বছর বয়সে অবসরে যাওয়ার সময় ৬০ শতাংশ অর্থ নগদে তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। বাকি ৪০ শতাংশ অর্থে পেনশন প্রদানের সুযোগ তৈরি করা হয়।

ভারত ২০০৯ সালের ১ মে দেশের ভেতরে ও বাইরে থাকা ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী সব নাগরিকের জন্য পেনশন ব্যবস্থা উন্মুক্ত করে। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরও পেনশন সুবিধায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা রাখা হয়। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মজীবী এবং নিম্ন আয়ের নাগরিকদের জন্য ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে একটি এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে আরেকটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নেয় ভারত।

মাঝখানে ২০১৩ সালে সরকারি ব্যবস্থায় এনপিএস চালুর জন্য পেনশন তহবিল নিয়ন্ত্রক ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (পিএফআরডিএ) প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ ছাড়া দেশটিতে বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও বিধবাদের জন্য সামাজিক পেনশন ব্যবস্থাও চালু রয়েছে।

‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা’ প্রবর্তন হলে ১৮ বছর বয়সে যদি কেউ চাঁদা দেওয়া শুরু করে এবং ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত তা চালু থাকে তাহলে ওই ব্যক্তি অবসরের পর ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি মাসে ৬৪৭৭৬ টাকা পেনশন পাবেন। যদি ৩০ বছর বয়সে চাঁদা দেওয়া শুরু করেন এবং ৬০ বছর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে, তাহলে অবসরের পর প্রতি মাসে ১৮৯০৮ টাকা পেনশন পাবেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের মতে, বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা জনসংখ্যাগত লভ্যাংশের সুবিধা আমরা ভোগ করছি। আমাদের বর্তমান গড় আয়ু ৭৩ বছর, যা ২০৫০ সালে ৮০ বছর এবং ২০৭৫ সালে ৮৫ বছর হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় আগামী তিন দশকে একজন কর্মজীবী ব্যক্তি অবসর গ্রহণের পরও গড়ে ২০ বছর আয়ু থাকবে। বাংলাদেশে বর্তমানে নির্ভরশীলতার হার ৭.৭ শতাংশ, যা ২০৫০ সালে ২৪ শতাংশে এবং ২০৭৫ সালে ৪৮ শতাংশে উন্নীত হবে। গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি ও ক্রমবর্ধমান নির্ভরশীল হার বিবেচনায় আমাদের বৃদ্ধ বয়সের নিরাপত্তা হিসেবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা খুবই জরুরি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে আইন প্রণয়নের জন্য অর্থ বিভাগকে কাজ করছে। সকল শ্রেণির বয়স্ক নাগরিকদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রণয়নের কৌশলপত্রে জানা যায়, দেশের ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী নাগরিকদের যে কেউ প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ চাঁদা হিসেবে জমা দিয়ে এই পেনশন সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। সর্বনিম্ন মাসিক ফি’র পরিমাণ ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হতে পারে। মোবাইলে আর্থিক পরিষেবা (এমএফএস) ও এজেন্ট ব্যাংকিংসহ সমস্ত অনলাইন পদ্ধতিতে এই ফি পরিশোধ করা যাবে।

তবে এই পেনশনে নাম অন্তর্ভুক্ত করানো বাধ্যতামূলক করা হবে না। পেনশন তহবিলে নাগরিকদের চাঁদা হিসেবে জমা দেওয়া তহবিল সরকার ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগের পাশাপাশি সরকারের লাভজনক অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করা হবে। এতে সরকারের ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা কমবে।

বিনিয়োগ থেকে পাওয়া মুনাফার পাশাপাশি তহবিলে সরকারের অবদানও থাকবে। তবে সরকারের অবদান কত শতাংশ এখনও তা নির্ধারণ হয়নি। দেশজুড়ে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা পুরোদমে চালু হওয়ার পর থেকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্তদেরও এই পেনশন ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবীরা অবসরে যাওয়ার পর আমৃত্যু তারা আর্থিক সুবিধা পান প্রতি মাসে। সেই চাকরিজীবী মারা গেলে তার স্ত্রী এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সন্তান থাকলে তাকেও আমৃত্যু পেনশন দেওয়া হয়।

কিন্তু বেসরকারি খাতে কর্মরতদের জন্য অবসর জীবনে ও তাদের সন্তানদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোনও সুবিধা নেই।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৫০ সাল নাগাদ ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ৪০ মিলিয়নের ওপরে পৌঁছতে পারে। ২০২০ সালে এই বয়সী মানুষের সংখ্যা ছিল মাত্র ১০ মিলিয়ন। অর্থাৎ পরবর্তী তিন দশকের প্রতি দশকে ১০ মিলিয়ন মানুষ বয়স্ক নাগরিকের কাতারে নাম লেখাবেন।

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর তুলনায় কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অনেক বেশি থাকায় সার্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালু করাটা এখন ‘সময়ের দাবি’।

তিনি জানান, ২০২০ সালে দেশে ষাটোর্ধ্ব জনসংখ্যা ছিল ১ কোটি ২০ লাখ, যা ২০৪১ সালে ৩ কোটি ১০ লাখ এবং ২০৬১ সালে ৫ কোটি ৫৭ লাখে দাঁড়াবে। প্রত্যাশিত গড় আয়ু বর্তমানে ৭৩ বছর, যা ২০৫০ সালে ৭৯ দশমিক ৯ বছর এবং ২০৭৫ সালে ৮৪ দশমিক ৩ বছর হবে।

প্রত্যাশিত গড় আয়ু বৃদ্ধির কারণে ধীরে ধীরে বয়স্ক জনসংখ্যা বাড়তে থাকার বিষয়টি তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে একান্নবর্তী পরিবারের মাধ্যমে বয়স্ক ব্যক্তিবর্গের জন্য গ্রামে যে সামাজিক সুরক্ষাসহ নিরাপত্তা বলয় ছিল, তা ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। একক পরিবারে বসবাস বৃদ্ধি পাবার কারণে বয়োবৃদ্ধদের নিরাপত্তা ক্রমান্বয়ে হুমকির দিকে ধাবিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের শ্রম বাজারের ৮৫ শতাংশ জনবলই অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। অনানুষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত এবং প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য কোনও প্রাতিষ্ঠানিক সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামো না থাকায় বয়সকালে তাদের জীবনযাপনে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাজেটের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল জিডিপির ৩ দশমিক ১১ শতাংশ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর সামাজিক সুরক্ষার আওতা ও বাজেট বরাদ্দ উভয় বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এরমধ্যে ২৯ শতাংশ পরিবারকে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে এবং বাজেট বরাদ্দ ২০০৮-০৯ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৮ গুণ বেড়েছে। দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় আনার জন্য দুর্যোগপ্রবণ এলাকা, দরিদ্রতম এলাকা ও জনসংখ্যার ঘনত্বের অনুপাতের মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে বরাদ্দ ও উপকারভোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ খাতে নতুন অর্থবছরে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে বরাদ্দ বেড়েছে ৫ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১১ লাখ উপকারভোগী বাড়ানো হয়েছে।

দেশে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতের আওতায় ১২৩টি কর্মসূচি বা বিষয় রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছে ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এগুলোর মধ্যে ৮টি কর্মসূচি হচ্ছে নগদ ভাতা আর ১১টি খাদ্য সহায়তা।

বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি সকল জনগোষ্ঠীর সামাজিক চাহিদা এবং পরিণত বয়সে সংকটকালের স্থায়ী জীবন নিরাপত্তা তা জোর দিতেই বলতে পারি। সকল শ্রেণির মানুষের নিরাপত্তা বিধানে সর্বজনীন পেনশন চালু হচ্ছে এটা সকলের জন্য মহা-আনন্দের বিষয়! আর তা কার্যকর হলে স্বপ্নের পদ্মা বহুমুখী সেতুর মতো দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরেকটি উন্নয়নের মাইলফলক অতিক্রম করবেন।

লেখক: সাহিত্যিক ও অর্থকাগজ সম্পাদক

[email protected]
/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
চেলসিকে গুঁড়িয়ে দিলো আর্সেনাল
চেলসিকে গুঁড়িয়ে দিলো আর্সেনাল
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে কাঁদলেন মিতুর মা
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ