X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

অনলাইনের হেডিং কেন পত্রিকার চেয়ে একটু আলাদা হয়?

জনি হক
১৬ মে ২০১৭, ১৭:৪৪আপডেট : ১৬ মে ২০১৭, ১৭:৪৭

জনি হক কোনও কিছু মনকে না টানলে আমরা চোখ তো দূরের কথা, কানও দেই না! গাঁটের পয়সা খরচের বেলায় তো সেটা আরও মুখ্য। ৫ টাকা বা ৮-১০ টাকা দিয়ে একটা পত্রিকা কিনে যে খবর বা যে বিষয়ের প্রতি আলাদা ভালোলাগা কিংবা নিজের কোনও না কোনও সম্পৃক্ততা থাকে, সেটা আমরা আগে পড়ি। যতোই পড়ি খরচ কিন্তু বাড়ে না। এখানে ব্যয় এককালীন! কিন্তু সমস্যা হলো, এক-দেড় ঘণ্টা পড়লেই দৈনিক পত্রিকায় পড়ার মতো আর অবশিষ্ট কিছু থাকে না। তাহলে সারাদিনের ঘটনা জানার জন্য পাঠক কী করবেন?
টেলিভিশন চ্যানেল দেখবেন? কিন্তু তাতে কতোটাইবা ফায়দা হয়। একই সংবাদ দিনভর দেখানো হয়। নয়তো ১০-১২টির বেশি নতুন খবর সাজানোর সুযোগও থাকে না চ্যানেলগুলোর। সুতরাং আশপাশে কী হচ্ছে-না হচ্ছে তা মুহূর্তে এবং সবসময় জানার জন্য এখন অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিকল্প নেই। বর্তমান বাস্তবতায় পত্রিকা হয়ে পড়েছে বাড়ি থেকে বাইরে দেখার ছিদ্র। টেলিভিশনকে সেখানে ধরা চলে জানালা। আর অনলাইন হলো খোলা ছাদ। যেখানে এলে দেখা যায় গোটা দুনিয়া! তবে পত্রিকার ট্রেসিং হয়ে যাওয়ার পর বিশাল কোনও ঘটনা ঘটে গেলেও তা পাঠককে দেওয়ার সুযোগ থাকে না ২৪ ঘণ্টা পর ছাড়া। টিভি চ্যানেল ফুটেজ ছাড়া তাৎক্ষণিক সংবাদ পরিবেশন করতে পারে না।
কেবল অনলাইন নিউজ পোর্টালেরই আছে সেই সুযোগ। কিন্তু সবসময় যা চোখের সামনে থাকে সেটা আলাদা না হলে কারও মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয় না দেখার অথবা পড়ার। এজন্যই অনলাইনের হেডিং পত্রিকার চেয়ে একটু আলাদা হয়। আলাদা করতে হয় পাঠককে পড়ায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য, চমকের স্বাদ রাখার জন্য। সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে কার্যকরী যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এসব শিরোনাম দেখেই পাঠকরা খবরে ঢোকেন কিংবা শেয়ার করেন।
ধরা যাক, কোনও তারকা পর্দায় মায়ের চরিত্রে অভিনয় করবেন। সেক্ষেত্রে যদি ‘মায়ের চরিত্রে অমুক’ শিরোনাম করা হয় তাহলে হুট করে পাঠককে তা টানে না। তাই অনলাইনে সাধারণত এ ধরনের নিউজের বেলায় শিরোনাম হয়, ‘মা হচ্ছেন অমুক!’ তবে এ ধরনের শিরোনাম এখন সস্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ পাঠক এখন সচেতন। বিস্ময়সূচক চিহ্ন দেখলেই তাদের বুঝতে বাকি থাকে না কিছু। তবে বিভ্রান্ত না করেও যে শিরোনাম আকর্ষণীয় হতে পারে এমন উদাহরণও ভুরি ভুরি।
যেমন বাংলা ট্রিবিউনে সেরা প্রতিবেদন হওয়া ‘ঘরের চাল আছে বেড়া নেই, বেড়া আছে দরজা নেই’। ভোলা থেকে পাঠানো এ খবরটি পত্রিকা হলে হয়তো শিরোনাম হতো, ‘ভোলার ১০৯টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের অবস্থা নাজুক’। অথবা উদাহরণ হিসেবে আনা যায়, বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত ‘সবাই বিচারক, আর আমি তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই খুনি’। চট্টগ্রামে মিতু হত্যায় এসপি বাবুল আক্তারের ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে সাজানো প্রতিবেদনের শিরোনাম এটি। পত্রিকা কিংবা টেলিভিশন চ্যানেল হলে এই শিরোনাম হয়তো হতো, ‘স্ত্রী হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার এসপি বাবুলের’।
অন্যরকম শিরোনাম হলে পাঠকের মনে ও মননে প্রভাব ফেলে খবর। সুতরাং অনলাইনে শিরোনাম আলাদা না করা মানে প্রতিযোগিতা থেকে আলগা হয়ে যাওয়া কিংবা গতিতে পিছিয়ে পড়া। লক্ষণীয় বিষয় হলো, শুধু পাঠকের মনেই নয়, অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো সাম্প্রতিক সময়ে পত্রিকার শিরোনামেও প্রভাব ফেলেছে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার চেষ্টা নিয়ে কথা!  
লেখক : সহকারী বার্তা সম্পাদক, বাংলা ট্রিবিউন


*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
পেছন থেকে মোটরসাইকেলে ধাক্কা, ছিটকে পড়ে কাভার্ডভ্যানের চাপায় চালক নিহত
পেছন থেকে মোটরসাইকেলে ধাক্কা, ছিটকে পড়ে কাভার্ডভ্যানের চাপায় চালক নিহত
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ