X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানের চক্রান্তের নির্বাচন

আনিস আলমগীর
২৪ জুলাই ২০১৮, ১৫:২৫আপডেট : ২৪ জুলাই ২০১৮, ১৬:২৪

আনিস আলমগীর কাল ২৫ জুলাই ২০১৮ পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। ইতিমধ্যে নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি, ক্যাম্পেইন শেষ হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের মুসলিম লীগ (এন), সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) এবং ভুট্টো পরিবারের পাকিস্তান পিপলস পার্টি-পিপিপি, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলওয়াল জারদারি– এই নির্বাচনে প্রধান তিনটি দল। তবে পর্বেক্ষকদের মতে, মূল লড়াই হচ্ছে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের দল এবং সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দলের মধ্যে।
গত নির্বাচনেও এমনটা দেখা গিয়েছিল। তবে গতবার সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিল মুসলিম লীগ, দ্বিতীয় হয়েছিল পিটিআই এবং তৃতীয় হয়েছিল পাকিস্তান পিপলস পার্টি। কিন্তু আসনের দিক থেকে প্রথম হয়েছে মুসলিম লীগ, দ্বিতীয় হয়েছে পিপলস পার্টি আর তৃতীয় হয়েছে পিটিআই। এবারের নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক নারী প্রার্থী ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তৃতীয় লিঙ্গ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, উপজাতি এমনকি উগ্রপন্থী রাজনৈতিক গ্রুপগুলোও এ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে।

ব্রিটিশরা ১৯৪৭ সালে ভারতকে বিভক্ত করে ১৪ আগস্ট পাকিস্তানকে এবং ১৫ আগস্ট ভারতকে স্বাধীনতা প্রদান করেছিল। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের স্থপতি মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর মৃত্যু হয় আর ১৯৫১ সালে রাওয়ালপিন্ডির জনসভায় প্রধানমন্ত্রী লেয়াকত আলী খান বক্তৃতা প্রদান করার সময় আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। সে থেকে আজ পর্যন্ত পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা সেনাবাহিনীর জেনারেলদের নিয়ন্ত্রণে এবং সে দেশের মানুষ সামরিক এবং বেসামরিক দুর্নীতিবাজ আমলাদের মর্জির হাতে বন্দি। দেশটির মানুষের ভাগ্য তাদের নিজের হাতে নয়।

৭০ বছর বয়সী রাষ্ট্রটি এ পর্যন্ত ৩৪ বছর শাসন করেছে রাজনীতিবিদরা আর ৩৬ বছর শাসন করেছে দেশটির জেনারেলরা। মাত্র দুবার নির্বাচিত দল সরকারের মেয়াদ পূর্ণ করতে পেরেছিল। পাকিস্তানের দেশরক্ষার বিষয় এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে সেনাবাহিনী। পাকিস্তান মুসলিম লীগ প্রধান নওয়াজ শরীফ তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। নির্বাচনে জিতে কিন্তু কোনোবারই মেয়াদপূর্ণ করতে পারেনি। কারণ, তিনি সেনাবাহিনীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ভারতের সঙ্গে বিরোধ মিটাতে চেয়েছেন বারবার। এবার তাকে চিরজনমের মতো অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।

এখন তিনি ও তার মেয়ে মরিয়ম জেলে বন্দি। অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্ট তাকে ১০ বছরের সাজা প্রদান করেছে। অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্ট রাজনীতিবিদদের শায়েস্তা করার জন্য সৃষ্টি করেছিল জেনারেল জিয়াউল হক। এই জেনারেল জিয়াউল হকই জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিলেন ১৯৭৯ সালে।

পাকিস্তান জাতীয় সংসেদ আসন সংখ্যা ৩৪২টি, যেখানে ২৭২টি সাধারণ এবং ৭০টি আসন নারী এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য রিজার্ভ রয়েছে। আসনের মধ্যে আবার পাঞ্জাব প্রদেশে ১৭৪টি, সিন্ধু প্রদেশে ৭৫টি, পাখতুনখাওয়া প্রদেশে ৪৮টি, বেলুচিস্তান প্রদেশে ১২টি আর কেন্দ্রীয় রাজধানীতে ৩টি। পাঞ্জাব সর্ববৃহত্তম প্রদেশ এবং এ প্রদেশে আসন সংখ্যাও বেশি। নওয়াজ শরীফ পাঞ্জাবের লোক। তিনি জেনারেল জিয়াউল হকের সময় পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। আসলে জেনারেল জিয়াউল হকই তাকে রাজনীতিতে এনেছিলেন। নওয়াজেরা পাকিস্তানের অন্যতম ধনাঢ্য পরিবার। ইত্তেফাক ফাউন্ডারির মালিক। তারা সারা বিশ্বে বিভিন্ন মেশিন সাপ্লাই করে থাকে।

নওয়াজের ভাই শাহবাজ শরীফও গত এক দশকব্যাপী পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সুশাসক হিসেবে তার সুনাম সুখ্যাতি আছে। শাহবাজ শরীফ এখন মুসলিম লীগের সভাপতি। নির্বাক প্রকৃতির লোক হওয়ায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে শাহবাজের কোনও দ্বন্দ্ব নেই। তিনি দলের সভাপতি হওয়ার পর থেকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। নওয়াজেরা পাঞ্জাবে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং জনপ্রিয়।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, নওয়াজ শরীফকে বরখাস্ত করার পর থেকে পাঞ্জাবের মানুষ তার প্রতি যেন সহানুভূতিশীল হয়ে উঠছে। এখন নওয়াজের ও তার মেয়ে অ্যাকাউন্টিবিলিটি কোর্টে দণ্ডিত হয়ে কারারুদ্ধ হওয়ার পর সহানুভূতির একটা ওয়েভ নিশ্চয়ই সৃষ্টি হবে, যার বেনিফিট নির্বাচনে হয়তো মুসলিম লীগ পাবে। শাহবাজ মুসলিম লীগের সভাপতি হয়েছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসি বলেছেন, মুসলিম লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেলে শাহবাজ শরীফই প্রধানমন্ত্রী হবেন। পাঞ্জাবের ১০ বছরের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে এবং নিশ্চয়ই প্রভাব প্রতিপত্তিও রয়েছে। সুতরাং পাঞ্জাবে নির্বাচনি পরিস্থিতি মুসলিম লীগের অনুকূলেই থাকার কথা।

তবে বিদেশি পত্র-পত্রিকা বলছে, সামরিক বাহিনী পাঞ্জাবের গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)-এর অনুকূলে প্রচুর টাকা ছড়াচ্ছে এবং মুসলিম লীগের মাঝে কোন্দল সৃষ্টির প্রয়াস চালাচ্ছে। পিটিআই সভাপতি ইমরান খান বিভিন্ন জনসভায় বলছেন, পাকিস্তানে একমাত্র সৎ ও নির্ভরযোগ্য সংস্থা হচ্ছে সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য। পাকতুনখাওয়া প্রদেশে তেহরিক-ই ইনসাফের প্রাদেশিক সরকার ছিল। এবারের নির্বাচনেও তারা পাকতুনখাওয়ায় হয়তো ভালো ফল প্রত্যাশা করতে পারে।

ইমরান খান তার নির্বাচনি টার্গেট করেছেন নওয়াজ শরীফকে। সোমবার লাহোরে ইমরান তার শেষ জনসভাতেও নওয়াজ শরীফ এবং তার মেয়ে মরিয়মের বর্তমান জেল জীবন নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। বলেছেন, তাদের ড্রামা বলিউড সিনেমাকেও হার মানাচ্ছে। নওয়াজ কাঁদছেন, তাকে জেলখানায় মশা কামড় দিচ্ছে, এসি কাজ করছে না বলে।

সেনাবাহিনীর মতো ইমরানেরও অভিযোগ নওয়াজের ভারত-প্রীতি নিয়ে। ইমরান রবিবার করাচিতে বলেছেন, কারাবন্দি নওয়াজ শরীফ ভারতের স্বার্থরক্ষা করছেন। একই সঙ্গে তিনি ২৫ জুলাইয়ের সাধারণ নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্টের চেষ্টা করেছেন। ইমরান দাবি করেন, আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্টের লক্ষ্যে বড় ধরনের খেল খেলা হচ্ছে। নওয়াজ শরীফসহ অন্যরা এই ষড়যন্ত্রের পেছনে আছে।

সিন্ধুর গ্রামাঞ্চলে পাকিস্তান পিপলস পার্টির অবস্থান ভালো। বেলুচিস্তানেও তাদের প্রভাব রয়েছে। বেনজির ভুট্টো ছেলে বিলওয়াল ভুট্টো এখন তার নানা জুলফিকার আলী ভুট্টোর প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান পিপলস পার্টির সভাপতি। সিন্ধু প্রদেশের ৭৫ আসনের মাঝে এর আগের নির্বাচনগুলোতে পিপলস পার্টি ও মোহাজের কওমি মুভমেন্টেই অধিকাংশ আসনে জয়লাভ করত। এবারও অনুরূপ ফলই বিশ্লেষকেরা প্রত্যাশা করছে। তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে নওয়াজ মুসলিম লীগ এবং তেহরিক-ই ইনসাফের মাঝে। এমন অবস্থায় কেউ যদি সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় তবে বিলওয়াল ভুট্টোর তখন ভূমিকা রাখার একটা অবস্থান সৃষ্টি হবে। মৌলবাদী দলগুলোও আর্মির আনুকূল্য পাচ্ছে। তবে ফলাফল কতটা ভালো করবে সন্দেহ অনেকের।

এখন পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হচ্ছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি নাছিরুল মূলক। তিনি নিরপেক্ষ হলেও সেনাবাহিনী ও আদালত নিরপেক্ষ নয়। আদালত সেনাবাহিনীর ক্রীড়ানকের ভূমিকা নিয়েছে। পাকিস্তানের হাইকোর্টের এক বিচারক ২২ জুলাই রবিবার অভিযোগ করেন যে দেশটির শক্তিশালী গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই  প্রধান বিচারপতি এবং অন্য বিচারপতিদের ওপর বিভিন্ন মামলায় পক্ষপাতিত্বপূর্ণ রায় প্রদানের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের মামলাও রয়েছে। আইএসআই  বিচারপতিদের মধ্যে মামলা বণ্টনেও হস্তক্ষেপ করছে।

রাওয়ালপিন্ডি বার অ্যাসোসিয়েশনের এক অনুষ্ঠানে হাইকোর্টের বিচারপতি শওকত সিদ্দিকী প্রকাশ্যে বিচার বিভাগ ও মিডিয়াকে ‘কন্ট্রোল’-এর জন্য আইএসআইকে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আজকে বিচার বিভাগ ও মিডিয়া ‘বন্দুকওয়ালাদের’ সেনাবাহিনী) নিয়ন্ত্রণে চলছে। বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। এমনকি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে নির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে। মিডিয়ায় সত্য কথা বলা যাচ্ছে না। কারণ, তারা চাপের মধ্যে আছে এবং তাদেরও স্বার্থ আছে’।

অফশোর অ্যাকাউন্টে শুধু নওয়াজের নাম ছিল তা নয়, ইমরান খানের নামও ছিল। আদালত নওয়াজকে দোষী সাব্যস্ত করলেও ইমরানকে কিছুই করেনি। সম্ভবত এ কারণে নওয়াজ শরীফ লন্ডনে তার অসুস্থ স্ত্রীকে দেখার জন্য যাওয়ার আগে বলেছিলেন, তার দল যদি আগামী নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তবে আদালতের বিষয়সমূহ তিনি সুরাহা করবেন। সেনাবাহিনী ও আদালতের অবস্থান এখন একই মেরুতে। যে কারণে নওয়াজের পক্ষে কোনও কিছু করা সম্ভব হয়নি।

নওয়াজের সমর্থক পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় জিও টিভির সম্প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে, ডন পত্রিকা বিক্রি বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। নওয়াজ বলেছিলেন, ২০০৮ সালের বোম্বে হামলায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জড়িত। সেখানে ১৬৬ জন মানুষ মারা গিয়েছিল। নওয়াজের এ মন্তব্যের পর সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাবেদ বাজওয়ার নির্দেশে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির মিটিং ডাকা হয়েছিল গত ১২ মে। সম্ভবত সে সভাতেই নওয়াজ সম্পর্কে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যার কারণে নওয়াজ এখন কারারুদ্ধ হয়েছেন।

নিরপেক্ষ ভোট হলে নওয়াজ শরীফ এগিয়ে থাকার কথা বা ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হওয়ার কথা পাকিস্তানে। কিন্তু নওয়াজের মুসলিম লীগ যেন ২৫ জুলাইয়ের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন না পায় সে ব্যবস্থা নিতে সেনাবাহিনী দ্বিধা করার কথা নয়। সুতরাং পাকিস্তানের ২৫ জুলাইয়ের নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে মনে হয় না। ইতোমধ্যে এটি একটি চক্রান্তের নির্বাচন হিসেবে দেশে বিদেশে পরিচিতি পেয়েছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে সেনাবাহিনীর ডিজাইন মতো ইমরানই প্রধানমন্ত্রী হবেন। সেনাবাহিনী স্বয়ং তেহরিক-ই ইনসাফের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার বিষয়টা নিশ্চিত করবে।

লেখক: সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক

[email protected]

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
একযুগ পর দলছুট, সঙ্গে সঞ্জীব চৌধুরী
একযুগ পর দলছুট, সঙ্গে সঞ্জীব চৌধুরী
সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করা ব্যক্তির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো বাঘ, নিয়ে গেলো গহীন বনে
সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করা ব্যক্তির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লো বাঘ, নিয়ে গেলো গহীন বনে
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন দিলেন এক ব্যক্তি
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন দিলেন এক ব্যক্তি
দুই জনপ্রতিনিধির নাম বলে সাভারে সাংবাদিকের ওপর কেমিক্যাল নিক্ষেপ
দুই জনপ্রতিনিধির নাম বলে সাভারে সাংবাদিকের ওপর কেমিক্যাল নিক্ষেপ
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ