X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনীতিতে ‘বেপরোয়া’ বক্তব্য

মো. জাকির হোসেন
২২ অক্টোবর ২০১৮, ১৬:৫৮আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০১৮, ২০:৫৩

মো. জাকির হোসেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমার অনেক অপছন্দের বিষয়ের মধ্যে একটি হলো নেতা-নেত্রী এমনকি মন্ত্রী-এমপিদের অতিকথন। লাগামহীন কথাবার্তা। কোনও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই তদন্ত ছাড়াই কাউকে দোষারোপ-দায়ী করা, তদন্তাধীন-বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা, রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিরূপ মন্তব্য-বক্তব্য দেওয়া আমার একেবারেই অপছন্দ। অনেক রাজনীতিক এরূপ লাগামহীন বক্তব্যের কারণে জনগণের কাছে এতটাই উপহাসের পাত্র হয়েছেন যে, মানুষ তাদের নিয়ে রীতিমতো হাস্য-রস করে। অতিকথনের জন্য তারা তাদের বচন দ্বারাই সমধিক পরিচিত। যেমন, ‘লুকিং ফর শত্রুজ’ ‘আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছেন’, ‘রাবিশ’ ইত্যাদি বচন দিয়েই তারা পরিচিত। কথায় বলে ‘সঙ্গ দোষে, লোহা ভাসে’। এতদিন আমার ধারণা ছিল অশ্লীল-অশোভন রাজনীতির সঙ্গে বসবাস করে আমাদের অনেক রাজনীতিকের পরিমিতিবোধ, রুচিবোধ লোপ পেয়েছে। কিন্তু একজন ডাক্তার, ডক্টরেট, ব্যারিস্টাররা যখন লাগামহীন, মিথ্যা, বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর, প্রতারণামূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলেন তখন কিছুই বলার থাকে না। যখন বর্তমান সরকারের বিরোধিতা করতে পাকিস্তানের পক্ষে মিথ্যা কথা বলেও রাজনীতিকের অতিকথন বিষয়ে আমার পূর্বানুমান ভুল প্রমাণিত হতে বাধ্য।

গণফোরাম ও জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘১৬ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশে পরিবর্তন আনবে’। ‘১৬ কোটি মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে’। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার। আসলে ড. কামাল হোসেন ১৬ কোটি বলতে বাংলাদেশের মোট জনসমষ্টিক বুঝিয়েছেন। প্রশ্ন হলো, ১৬ কোটির সবাই যদি কামাল হোসেনের পেছনে লাইন ধরে তাহলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থক-শুভাকাঙ্ক্ষীরা গেলো কই? আর গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা বলতে কি বুঝাতে চেয়েছেন? পুনঃপ্রতিষ্ঠা বলতে বুঝায় অতীতে ছিল, এখন নেই। তাই আবারও প্রতিষ্ঠা করতে হবে। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র কখন ছিল? আপনি কামাল হোসেন যখন বঙ্গবন্ধু সরকারের অধীন মন্ত্রী ছিলেন তখন? আপনার ঐক্যফ্রন্টের মিত্র বিএনপি তো সে শাসন আমলকে দুঃশাসন বলে আখ্যায়িত করে। জিয়ার শাসনামলে গণতন্ত্র ছিল? নিজেকে সেনাপ্রধান ঘোষণা, আইন লঙ্ঘন করে একই সঙ্গে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি থাকা, হ্যাঁ-না ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া, সামরিক শাসন নিয়ন্ত্রিত ‘ঘরোয়া রাজনীতি’ প্রচলন, যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী রাজনীতির পথ প্রশস্ত করা, উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষবৃক্ষ রোপণ, মদ, জুয়া ও ইচ্ছামতো ফরমান আদেশ অধ্যাদেশ জারি করে তা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা, তথাকথিত ক্যু’র অভিযোগে শত শত সৈনিক হত্যা, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মধ্য দিয়ে ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করে রাখা, জেল হত্যা বিচারের উদ্যোগ না নেওয়া, খুনিদের সুরক্ষা ও হত্যাকারীদের বিদেশে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা, বঙ্গবন্ধুকে নিষিদ্ধ করতে রাজনৈতিক দল গঠনের নীতিমালা (পিপিআর) ঘোষণা করে শর্ত জুড়ে দেওয়া–‘কোনো ব্যক্তিবিশেষের প্রতি ভক্তি বা বিশ্বাস গড়ে তুলতে পারে এমন কোনো নাম দল গঠনের প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রে উল্লেখ থাকতে পারবে না’ এসব যদি গণতন্ত্র হয় আমার বলার কিছু নেই।

গণতন্ত্রহীনতার কারণে তো হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিদায় করা হয়। ৯১’র বিএনপি সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমে বাধ্য করা হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রচলনের জন্য। ২০০১-এর বিএনপির বিরুদ্ধে তো বিরোধীদল নিপীড়ন, হাওয়া ভবন, দুর্নীতি, অর্থপাচার, গ্রেনেড হামলার মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে। আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার কামাল হোসেন-গংদের কাছে অগণতান্ত্রিক বলেই তো সে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ‘কাঁঠালের আমসত্ব’ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে তোলা হয়েছে। তাহলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না বলে পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা কেন বলছেন কামাল হোসেন? সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে নিজ বাসায় সভার আহ্বান জানিয়ে সটকে পড়া ও অন্যদের নিয়ে সে সময় সংবাদ সম্মেলন করা ও সংবাদ সম্মেলনে এ মিথ্যা তথ্য দেওয়া যে তিনি সভায় যোগদান করবেন, এটি কোন ধরনের গণতন্ত্রের ইঙ্গিত দেয়? জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনে কামাল হোসেন পাঁচবার বলেছেন তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চান। যে বিএনপি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু দিবসে মিথ্যা জন্মদিন বানিয়ে কেক কেটে নারকীয় উল্লাস করে, বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার স্থপতি দূরে থাক বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার পাল্টা হিসাবে জিয়াকে স্বাধীনতার বানোয়াট ঘোষক দাবি করে, যে বিএনপি স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর সকল অবদানকে অস্বীকার করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে নতুন কল্পকাহিনি তৈরি করেছে, এই সেদিনও লন্ডনে বঙ্গবন্ধুর ছবির চরম অসম্মান করেছে, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ভয়ানক বিদ্বেষ যে বিএনপির নেতাদের সে বিএনপিকে নিয়ে জোট গঠন করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার দাবি জাতির সাথে কত বড় প্রতারণা তা কি বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে? কামাল হোসেন এতদিন বলে আসছিলেন বিএনপি জামায়াত না ছাড়লে বিএনপির সঙ্গে কোনও ঐক্যে হবে না। বিএনপি কি জামায়াত ছেড়েছে? ছাড়েনি। কিন্তু কামাল হোসেন তার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ঐক্যফ্রন্ট করেছেন। ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই কামাল হোসেন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। ক্ষমতায় গেলে ঐক্যফ্রন্টের নামে দেয়া প্রতিশ্রুতি পদদলিত করবেন না তার কি নিশ্চয়তা আছে?

বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে দেওয়া ডাহা মিথ্যা বক্তব্য ঘিরে সারাদেশে তোলপাড় চলছে। সেনা সদর দফতর এমন বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ওই বক্তব্য সেনাবাহিনী প্রধানসহ সেনাবাহিনীর মতো রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে জনসম্মুখে হেয় করার হীন অপচেষ্টা মর্মে স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়। ডা. জাফরুল্লাহ একসঙ্গে অনেক ভয়ঙ্কর মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করেছেন। ডা. জাফরুল্লাহর বেপরোয়া ও ডাহা বানোয়াট গল্প বানানো কেবল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার হোতাদের বাঁচানোর অপচেষ্টা নয়, বরং এর মাঝে গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত রয়েছে।

টেলিভিশন টকশোতে ফ্রন্ট নেতা আ স ম আব্দুর রব একজন সাংবাদিককের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণের পাশাপাশি হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন। আরেক ফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না টকশোতে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের তুলনা করতে গিয়ে বলেন,‘বাংলাদেশ কোন দেশের মডেল বলুন তো? পাকিস্তানের রোল মডেল? পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা আমাদের চেয়ে ভালো। পাকিস্তানের অর্থনীতি বাংলাদেশের চেয়ে স্ট্যাবল, তাদের ইন্সটিটিউশনগুলো স্ট্যাবল। মান্নার এ মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে সঞ্চালক পাকিস্তানের অর্থনীতি বাংলাদেশের চেয়ে ভালো এ পাল্টা প্রশ্ন করলে মান্না জোর দিয়ে বলেন, ‘ডেফিনেটলি। তাদের গ্রোথ ইয়ে টিয়ে সব দিক থেকে অনেক বেশি স্টেবল।’ এ বিষয়ে খোদ পাকিস্তানিরাও মান্নার সঙ্গে একমত নন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আগামী পাঁচ বছরে পাকিস্তানকে সুইজারল্যান্ড বানিয়ে দেবেন এমন মন্তব্যে পাকিস্তানের একজন খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী পাকিস্তানের ক্যাপিটাল টিভি চ্যানেলে বলেছেন, ‘খোদাকে ওয়াস্তে হামে বাংলাদেশ বানা দে।’ তিনি বলেছেন পাঁচ বছরে সুইজারল্যান্ড নয়, দশ বছরে বাংলাদেশের সমপর্যায়ে পাকিস্তানকে নিয়ে আসুন। তিনি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের তুলনা করতে গিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে স্টক একচেঞ্জে বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়, সেখানে পাকিস্তান বছরে মাত্র ১০০ বিলিয়ন ডলারে লেনদেন করে। বাংলাদেশের বার্ষিক রফতানি আয় ৪০ বিলিয়ন ডলার আর পাকিস্তানের আয় ২২ বিলিয়ন ডলার। ইউএনডিপি ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে বলছে, মানব উন্নয়নে ১৮৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৩৬, পাকিস্তান ১৫০। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সূচকে বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তান থেকে এগিয়ে। বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২.৮ বছর, পাকিস্তানের ৬৬.৬ বছর। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার পাকিস্তানের বেশি। শিশু মৃত্যুহার বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানের তিনগুণ বেশি। নারীর ক্ষমতায়ন ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। ক্ষুধা সূচকেও বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তান থেকে এগিয়ে। ১১৭ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৮৬তম, পাকিস্তান ১০৬তম ও ভারত ১০৩তম। খাদ্য সংকটে পাকিস্তান ও ভারতের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়ে। বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পাকিস্তানের দ্বিগুণ। পাকিস্তানের বর্তমান জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৯১ শতাংশ মাত্র। বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.৬৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, অর্থনীতির সব সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশে। এমনকি উন্নয়ন সূচকে পাকিস্তান-ভারত দুই দেশকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ২০০৫ সালে শিবিরের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রকাশ্য ঘোষণা করেন, তার সঙ্গে শিবিরের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। শিবিরের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের এ ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঠিক এই প্রেক্ষাপট তুলে একটি টিভি টকশোতে একজন নারী সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি ব্যারিস্টার মইনুলকে প্রশ্ন করেন তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করেন কিনা? ব্যারিস্টার মইনুল প্রথমেই ওই সাংবাদিককে এমন প্রশ্ন করে ‘দুঃসাহস’ দেখানোর জন্য ধন্যবাদ দেন এবং তারপরেই ওই নারী সাংবাদিককে তিনি ‘চরিত্রহীনা’ বলে আক্রমণ করেন। মইনুল হোসেন কেবল মাসুদা ভাট্টির সঙ্গেই ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ করেননি, তিনি ইতোপূর্বে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন (১) এবং মুক্তিযুদ্ধ দেশটাকে বিভক্ত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন (২)।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কুশীলবদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসহিষ্ণু বক্তব্য ফ্রন্টের নেতৃত্বে সহিষ্ণু গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখতে আমাদের আশাবাদী করে কি? ভলতেয়ার গণতন্ত্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘তোমার মতামতের সঙ্গে আমি হয়তো একমত নাও হতে পারি, কিন্তু তোমার মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য আমি আমার জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করে যাবো।’ আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যে সহিষ্ণুতার দুর্ভিক্ষ আর অসহিষ্ণুতার জোয়ার চলছে তার পরিবর্তন করে সহিষ্ণু গণতন্ত্র চর্চার জন্যই তো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বান। সে ক্ষেত্রে ফ্রন্টের নেতারা নিজেরাই অসহিষ্ণু হলে সে গণতন্ত্রের রূপ কেমন হবে? আব্রাহাম লিঙ্কন বলেছেন ‘If you want to test a man's character, give him power. ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, এই পরীক্ষায় কত অহিংস মানুষ সহিংস হয়ে উঠেছে, সহিষ্ণু মানুষ হয়ে উঠেছে অসহিষ্ণু, তার ইয়ত্তা নেই। ক্ষমতায় গিয়ে সহিষ্ণু মানুষ অসহিষ্ণু হয়েছে। আর অসহিষ্ণু মানুষরা ক্ষমতায় গেলে তখন কী হবে? তখন কি দেশ থেকে গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার ভগ্নাবশেষটুকুও নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে?

যেভাবেই জোট গঠিত হোক, তা রাষ্ট্রের ভিত্তির পক্ষে, গণতন্ত্রের জন্য, বাকস্বাধীনতার জন্য, অসাম্প্রদায়িকতার জন্য জোটবদ্ধ না হয়ে কেবলই একটি দলের বিরোধিতা-বিদ্বেষের জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোটারি স্বার্থে ঐক্য হলে, তাতে জনগণের কপালে ভালো কিছু জুটবে বলে মনে হয় না।

লেখক: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

ই-মেইল: [email protected]

 

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
বাংলাদেশের স্পিন বিভাগে পার্থক্য তৈরি করতে চান মুশতাক
বাংলাদেশের স্পিন বিভাগে পার্থক্য তৈরি করতে চান মুশতাক
‘মুম্বাইয়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় খেললে ব্রেইন ফেটে যাবে’
‘মুম্বাইয়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় খেললে ব্রেইন ফেটে যাবে’
৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুক্রবার: যেসব নির্দেশনা দিলো পিএসসি
৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুক্রবার: যেসব নির্দেশনা দিলো পিএসসি
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ