X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ জিততে পারে মিস ওয়ার্ল্ডের মুকুট

ড. নিলুফার ইসলাম
২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৩:২৬আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৩:২৯

ড. নিলুফার ইসলাম হ্যাঁ, শিরোনামটি ঠিক। আসলেই আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি বাংলাদেশ জিততে পারে মিস ওয়ার্ল্ডের মুকুট। কেন? কারণ এখন সময় চলছে বর্ণবৈচিত্র্যের। উত্তর আমেরিকার শীর্ষ অ্যাকটিং ও ট্যালেন্ট এজেন্সিগুলোয়ও অগ্রাধিকার পান বাদামি ও কৃষ্ণবর্ণের প্রার্থীরা। ভারত সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে অনেক আগেই সাফল্যের স্বাদ পেয়েছে। নেপালও পিছিয়ে নেই। নেপালের প্রার্থী মিস ওয়ার্ল্ডের মঞ্চে সেরা বারোতে এমনকি ‘বিউটি উইথ এ পারপাস’ প্রজেক্টের পরপর দুই বছরের সেরা বিজয়ী। তাহলে আমরা কেন পারবো না?
খুব ছোট বেলা থেকে দেখছি, এসব বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতা। তখন খুব উচ্ছ্বসিত হতাম প্রতিযোগীদের প্রশ্ন-উত্তর-পর্ব শুনে। আর ভাবতাম কত বুদ্ধিদীপ্ত এই মেয়েগুলো, কত ভাগ্যবতী তারা নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাচ্ছেন। মনে হতো, এ যেন এক বছরের জন্য সারা বিশ্বের রানি হয়ে যাওয়া। নাহ, এজন্য নয় যে বিজয়ীর মাথায় মুকুট পরানো হয়, বরং এই জন্য যে, সে একজন রানির মতোই পরবর্তী এক বছর অনেক সমাজসেবামূলক কাজ করার সুযোগ পান। একবার ভেবে দেখেছেন যে প্রতিযোগিতার মূলমন্ত্র জনসেবা–যাকে বলে ‘বিউটি উইথ এ পারপাস’। সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধি জিতলে দেশের জন্য কত ধরনের সেবামূলক কাজ করতে পারবেন?

সম্প্রতি হয়ে গেলো বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতা মিস ওয়ার্ল্ড ২০১৯। বিজয়ী হলেন জ্যামাইকার মেয়ে ২৩ বছর বয়সী টনি এন সিং। বাংলাদেশের রাফা নানজিবা তোরসাকে নিয়ে অনেক আশা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি মুকুট লাভ করতে পারেননি। প্রতিবারের মতো সেরা ৩০ বা সেরা ৪০ এও স্থান পাননি।

বাংলাদেশ থেকে সর্ব প্রথম এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন আনিকা তাহের, ১৯৯৪ সালে। কিন্তু, দেশে কোথায়, কবে, কীভাবে এই সব প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়, তা যেমন ছিল না চোখে পড়ার মতো, আবার তখন তেমন সাড়াও জাগাতে পারেনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে। কয়েক বছর পর বাংলাদেশের প্রতিনিধি পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৭ সালে আবার শুরু হয় বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধি নির্বাচন। তার পর জেসিয়া, ঐশী এবং এই বছর তোরসা অংশগ্রহণ করেন। দেখে মনে হচ্ছে কোথাও একটা ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে।

আসুন দেখে নেওয়া যাক—কীভাবে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি আমাদের প্রতিনিধিদের।  প্রথমেই আমাদের নিজেদের বের হয়ে আসতে হবে মিস ওয়ার্ল্ড  প্রতিযোগিতা নিয়ে থাকা বেশ কিছু ভ্রান্ত ধারণা থেকে। যেমন,

১. মিস ওয়ার্ল্ডে শারীরিক বিষয়টাই গুরুত্বপূর্ণ—এটি খুবই ভুল ধারণা। ‘সুইমস্যুট’ রাউন্ড এখন আর নেই এই প্রতিযোগিতায়। বরং সেই জায়গায় স্থান পেয়েছে জনসেবামূলক প্রকল্প, ট্যালেন্ট রাউন্ড এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বা ফিটনেস রাউন্ড। এমনকি অফশোল্ডার গাউন না পরেও গ্ল্যামার দেখানো সম্ভব। তা মিস ইউনিভার্স ২০১৯ জোজোবিনি, বা হালের মিস ওয়ার্ল্ড টনির ইভিনিং গাউন দেখলেই বুঝা সম্ভব। গ্ল্যামারাস দেখানোর জন্য প্রথমেই দরকার শারীরিক ফিটনেস, কিছুটা ফ্যাশন সেন্স এবং স্মার্টনেস, আর ভালো কিছু ডিজাইনারদের সহযোগিতা। এখানে শরীর দেখানো একেবারেই একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।

২. ধরে নেওয়া যায় মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া অনেকেই মিডিয়াতে কাজ করতে চায়। কারণ পরবর্তী সময়ে আমরা অনেককেই দেখি মিডিয়ায় কাজ করতে আগ্রহী হন। কিন্তু এটাও তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। অনেকেই আছেন যারা পরে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন বা ডাক্তার-প্রকৌশলী হয়েছেন। মূল কথা সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় মেয়েদের পরিচিতি বাড়ে, তা কাজে লাগিয়ে কেউ করেন জনসেবামূলক কাজ, কেউ কাজ করেন মিডিয়ায়। এগুলো সবই তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।

৩. মিস ওয়ার্ল্ড জিততে হলে নাচ গান জানা প্রয়োজন—এটি অবশ্য আমাদের আয়োজকদেরই এখনও বোঝা বাকি। ঐশী কখনও বলেনি সে নাচ গান জানতো বা শিখেছেন। কিন্তু সে তার শ্রম আর মেধা দিয়ে ভালোই ম্যানেজ করে নিয়েছিলেন। গত বছরের মিস ওয়ার্ল্ড ভেনেসাও বলেন তার ট্যালেন্ট রাউন্ডে পারফরমেন্স তেমন ভালো ছিল না এবং সে ট্যালেন্ট রাউন্ডের সেরাদের তালিকাতেও ছিলেন না। বরং নাচ গান জানার চাইতে বেশি প্রয়োজন বুদ্ধিমত্তা এবং বিচক্ষণতা, যাকে বলে স্মার্টনেস।

৪. মিস ওয়ার্ল্ড জিততে ইংরেজি খুব ভালো জানতে হয়–এটিও খুব ভুল ধারণা। মোটামুটি ইংরেজি জানলেই হয় বা না জানলেও সমস্যা নেই। ভেনেজুয়েলার প্রতিনিধিদের কখনও ইংরেজিতে কথা বলতে দেখলাম না, তাও তারা প্রায়ই ফাইনালিস্টের লিস্টে থাকেন। মিস ওয়ার্ল্ড জিতেছেন ছয়বার! ঐশীর ইংরেজিও তোরসার থেকে কিছুটা দুর্বল ছিল। মিস ভিয়েতনাম ইউনিভার্স ২০১৮ সালে ফাইনালে খুব কষ্টে ইংরেজি বলেছিলেন। ২০১৭ সালের মিস ওয়ার্ল্ডের টপ পাঁচের বেশিরভাগ প্রতিযোগীই ইংরেজিতে দক্ষ ছিলেন না। কিন্তু তারা সবাই অনেক দূর আগান, কেন? কারণ তার ইংরেজি থেকে বিচারকরা তাদের উৎসাহ, আত্মবিশ্বাস, আর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকেই বেশি বড় করে দেখেন। বিশ্বাস করুন, আমরা বাঙালি ছাড়া বাইরের বিশ্বে কেউ ইংরেজি না জানা বা ইংরেজি ভাষায় দুর্বলতাকে এত বড় অপরাধ বলে মনে করেন না।

৫. এই প্রতিযোগিতায় যেতে হলে প্রতিযোগীকে অনেক বেশি সুন্দরী হতে হয়—যদিও ‘সুন্দরী’ শব্দটা খুবই আপেক্ষিক। কিন্তু এই সব প্রতিযোগিতা চামড়ার সৌন্দর্য থেকে প্রাধান্য পায় মনের সৌন্দর্য, বুদ্ধিমত্তা, সমাজ সেবামূলক কাজ করার মানসিকতা, পাবলিক স্পিকিং আর স্মার্টনেস।  এক্ষেত্রে দরকার হলে হতে পারে শারীরিক ফিটনেস এবং হয়তো কিছুটা রুচিশীল পোশাক নির্বাচন।

এবার দেখা যাক সমন্বয়কারীদের বা আয়োজকদের পক্ষ থেকে আর কী করা সম্ভব।

১. আমরা এখনও উন্নয়নশীল দেশ। মেকআপ সামগ্রী, ফ্যাশনেবল জামাকাপড় আমাদের অনেকের কাছে একটা বিলাসিতা। আবার বেশিরভাগই ভালো মেকআপ বলতে বোঝেন চামড়া সাদা করা বা শুধু একটা ভালো জামা পরা। আবার কেউ যদি একটু ফ্যাশন সচেতন হনও আমরা ধরে নেই, হয় সে পড়াশোনায় ভালো নয়, নয়তো সে ভালো মেয়ে নয়। এসব সামাজিক কারণেই আমাদের মেয়েদের গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে পা রাখার আগে ফ্যাশন সেন্স তেমন গড়ে ওঠে না। সুতরাং সমন্বয়কারীদের অবশ্যই তাদের বেছে নেওয়া প্রতিনিধিকে এই বিষয়ে গ্রুমিং করতে হবে।
২. মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার মতো মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় পেশাদার মেকআপ আর্টিস্টদের কোনও ধরনের সাহায্য থাকে না। কিন্তু তারপরও তাদের প্রতিযোগিতাতে টপ মডেল রাউন্ড থাকে যেন গ্ল্যামার এবং রুচিশীল পোশাক নির্বাচন প্রয়োজন। সুতরাং সমন্বয়কারীদের অবশ্যই মেকআপের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে দিতে হবে, নয়তো প্রয়োজনীয় ফান্ড বরাদ্দ করতে হবে। যেন সে সেখানে গিয়ে কারও সাহায্য নিতে পারেন।

৩. এই সব প্রতিযোগিতা আমাদের বস্ত্র শিল্পের প্রসারে একটি সূবর্ণ সুযোগ বয়ে আনতে পারে। আমাদের দেশীয় ঝলমলে পণ্য জামদানি, বেনারসি, রাজশাহী সিল্ক—যা এখনও দেশে-বিদেশে এত পরিচিতি পায়নি, এসব প্রতিযোগীদের মাধ্যমে খুব সহজেই আমরা তুলে ধরতে পারি বিশ্ববাসীর কাছে। এই বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রেখে নিত্যদিনের জামা-কাপড় নির্বাচন করে দিতে পারেন। গত তিন বছরে দেখলাম প্রতিবারেই ন্যাশনাল কস্টিউম হিসেবে বাংলাদেশের ট্রাইবাল পোশাকে হাজির হতে। যেখানে অন্যান্য দেশের প্রতিযোগীরা যান, তাদের সব চেয়ে ঝলমলে পোশাক পরে। আমাদের প্রতিনিধিরা ট্রাইবাল পোশাক পরে ঠিক কী উপস্থাপন করতে চাইছেন, দেশের ঠিক কত শতাংশ মানুষকে উপস্থাপন করতে চাইছেন, তা এখনও আমার কাছে বোধগম্য হচ্ছে না।

৪. ২০১৮ সালে ঐশী টপ মডেল রাউন্ডে মিস ওয়ার্ল্ডের মঞ্চে পরিধান করেন ভারতের মনীশ মালহোত্রার ডিজাইন করা গাউন! যা দেখে আসলেই অবাক না হয়ে পারিনি। এবার অবশ্য জুরিম এর ডিজাইন করা দেশীয় গাউন পরতে দেখা যায় তোরসাকে চ্যারিটি ডিনার অনুষ্ঠানে। তারপরও তোরসা বেশ সমালোচিত হন, কখনও হেড টু হেড রাউন্ডে আটপৌরে জামাকাপড় পরে আসার জন্য, নয়তো একই জুতা—একই রকম জামা পরে আসার জন্য। একই জামা-জুতা পরে আসা সত্যিকার অর্থে কোনও অপরাধ নয়। কিন্তু এর সঙ্গে এও মনে রাখা দরকার—এমন সুযোগ আর আসবে না দেশীয় ঐতিহ্য তুলে ধরার। যেখানে রোজ আমরা একটি করে দেশীয় ঐতিহ্য তুলে ধরতে পারতাম, সেখানে আটপৌরে জামা পরিয়ে প্রতিনিধিদের দিয়ে কী প্রমাণ করতে চাইলেন সমন্বয়কারীরা, তা আমার বোধগম্য হলো না!

৫. শুধু নাচতে পারা বা গান গাইতে পারা বা অভিনয় দিয়ে কারও ট্যালেন্ট বিচার করলে চলবে না। একজন মানুষ তখনও ট্যালেন্টেড, যখন সে ভালো কথা বলতে পারে, যখন সে খেলাধুলা করতে পারে। মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের নির্বাচনকে অবশ্যই আলাদা ভাবতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মিস ওয়ার্ল্ডের প্রতিনিধি নির্বাচনে ট্যালেন্ট রাউন্ড থাকে শুধু প্রিলিমিনারি রাউন্ডে। তার গুরুত্ব এত বেশি দেওয়া হয় না। সেখানে আমাদের বিচারকরা অডিশনের শুরুতেই জিজ্ঞাসা করেন, আপনি নাচ পারেন কিংবা গান গাইতে পারেন? ভুলে গেলে চলবে না, ট্যালেন্ট রাউন্ড থেকে ফার্স্ট ট্র্যাকে একজনই যেতে পারে টপ-৪০-এ। আবার সবসময় যারা মিস ওয়ার্ল্ড হন তারা ট্যালেন্ট রাউন্ডের শীর্ষেও থাকেন না। যেমন, ২০১৮ সালের মিস ওয়ার্ল্ড ভেনেসা। সুতরাং আসুন আমরা এই নাচ গান জানা ‘ট্যালেন্ট’ থেকে বের হয়ে আসি, যেন অন্যান্য বুদ্ধিদীপ্ত, তুখোড় বক্তাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে পারেন এই প্রতিযোগিতায়।

৬. এক থেকে দুই মাস একজন প্রতিনিধিকে তৈরি করার জন্য যথেষ্ট সময় নয়। ভারতে মিস ইন্ডিয়া কনটেস্ট হয় জুন মাসে এবং তারা ছয় মাস সময় পান তাদের প্রতিনিধিকে তৈরি করতে। প্রথম দুই বছর বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের ‘বিউটি উইথ এ পারপাস’ প্রকল্পের ভিডিও ছিল না । এবার খুব সুন্দর একটি ভিডিও থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ‘বিউটি উইথ এ পারপাস’ ফাইনালিস্টের লিস্টে এলো না। কেন? কারণ এখানে নতুন এবং ইউনিক বিষয় খোঁজে আয়োজকরা। দেখেন একজন প্রতিযোগী কতটা শ্রম দিয়েছেন। তার জন্য অবশ্যই ১-২ মাস যথেষ্ট নয়।  
৭. বাংলাদেশের সমন্বয়কারীরা  নির্বাচিত প্রতিনিধিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করতে হবে। যেমন- ১) পাবলিক স্পিকিং, ২) শারীরিক ফিটনেস, ৩) পার্সোনালিটি ইমপ্রুভমেন্ট, এবং ৪) ফ্যাশন। যেমন, একজন পাবলিক স্পিকিং প্রশিক্ষক জানাবেন নিজের কৃতিত্ব জানানোর সঙ্গে নিজের সংগ্রামের কথা বলা দরকার। আবার, আরেকজন প্রশিক্ষণ এই বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেবেন কিভাবে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কথা বলা যায়, কীভাবে শুধু নিজের দেশের মানুষের কাছে নয় বাইরের দেশের মানুষের মনে দাগ কাটা যায়। এমনকি বাচনভঙ্গির মতো একটা ছোট্ট বিষয়ের ও প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার যেন প্রতিনিধির করা ছোট্ট একটা বিষয় বাকিদের কাছে অদ্ভুত না দেখায়। মোটকথা, এইসব প্রশিক্ষক এমনভাবে তৈরি করবেন প্রতিনিধিকে যাতে তার সবকিছু খুব সাবলীল এবং স্বতঃস্ফূর্ত মনে হয়।

৮. শুধু ট্যালেন্টের ভরসায় বা শুধু গ্ল্যামার দেখে প্রতিনিধি নির্বাচন করলেই চলবে না। সেক্ষেত্রে আমরা প্রতিবছর হয়তো শুধু হেড টু হেড জিতে শীর্ষ ৩০/৪০ যেতে পারবো। শীর্ষ ১২ বা তার আগে যেতে হলে অবশ্যই আমাদের সব দিকেই খেয়াল রেখে প্রার্থী নির্বাচন করতে কবে এবং সঙ্গে যুক্ত করতে হবে বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা ও রুচিশীলতার মতো গুণ।
৯. বিচারক নির্বাচনেও খুব সাবধানী হওয়া প্রয়োজন আয়োজকদের। প্রথমবার নির্বাচনে অন্তর শোবিজ বেশ ভালো বিচারক আনেন। কেউ কেউ অবহেলায় সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন করে মজা করছিলেন বা হেঁয়ালি করে প্রশ্ন ভুলে প্রতিযোগীদের গান গাইতে বলছিলেন। দ্বিতীয়বার বিচারকরা অডিশন রাউন্ডে মাত্রাতিরিক্ত রুক্ষ ব্যবহার করেন প্রতিযোগীদের সঙ্গে। আবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার বিচারক বা বিচারক প্যানেলে ছিল বৈচিত্র্যের অভাব। আয়োজকরা শুধু মিডিয়া ব্যক্তিত্ব না এনে আরও আনতে পারতেন প্রতিষ্ঠিত কোনও স্পোর্টসম্যান ও লেখক। এক্ষেত্রে যদি আয়োজকদের বিচারকদের কিছুটা নিয়ম দেখিয়ে গ্রুমিং করতে হয় বা আগেই প্রতিযোগীদের প্রতি তাদের ব্যবহার সম্পর্কে সতর্ক করতে হয়, সেটাতেও দোষের কিছু দেখছি না।
হ্যাঁ, বাংলাদেশের আয়োজকরা অবশ্যই আরো ভালো করতে পারতেন। যেখানে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত ও নেপাল থেকে তাদের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ শিক্ষার্থীরা ছিনিয়ে আনতে যান এই সব প্রতিযোগিতার মুকুট, সেক্ষেত্রে আমরা কি পারি না আমাদের দেশের সেরা তুখোড় মেধাবী মেয়েদের পাঠাতে? যে প্রতিযোগিতায় আমাদের প্রতিনিধি বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে যান, তাকে আর দশটা আন্তর্জাতিক খেলাধুলার মতো দেশের জন্য গৌরবময় কেন ভাবতে পারি না আমরা? একবার একটু ভেবে দেখেছি কি আমরা?

লেখক: কানাডার ভ্যাংকুভার পৌরসভার সিটি ইঞ্জিনিয়ার

 

/এসএএস/এমএনএইচ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ড্যান্ডি সেবন থেকে পথশিশুদের বাঁচাবে কারা?
ড্যান্ডি সেবন থেকে পথশিশুদের বাঁচাবে কারা?
লখনউর কাছে হারলো চেন্নাই
লখনউর কাছে হারলো চেন্নাই
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার ভোট শেষেই বিজয় মিছিল
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার ভোট শেষেই বিজয় মিছিল
পোশাকশ্রমিককে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
পোশাকশ্রমিককে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ