X
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪
৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘এখন কী বই পড়ছো?’

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০৬ মার্চ ২০২০, ০০:২০আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২০, ১২:২২

মুহম্মদ জাফর ইকবাল

ছেলেবেলায় ঈদের পরদিন ঘুম থেকে উঠে কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগতো, বইমেলা শেষ হওয়ার পর আমাদেরও কয়দিন থেকে কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে! এতদিন বিকালবেলা হলেই মনে হতো বইমেলায় গেলে কেমন হয়? যখনই সময় পেয়েছি, সুযোগ পেয়েছি, বইমেলা গিয়েছি। চারপাশে বইয়ের স্টল, সুন্দর সুন্দর বইয়ের প্যাভিলিয়ন, সেখানে থরে থরে বই সাজানো। বিশাল এলাকাজুড়ে বইমেলা, একটু পরপর বসার ব্যবস্থা, সময় কাটানোর জন্য এর চাইতে মনোরম জায়গা আর কী হতে পারে? সমস্যা একটিই—বইমেলা পর্যন্ত পৌঁছাতে গিয়ে জীবন বের হয়ে যায়। ঢাকা শহরের ট্রাফিক জ্যাম থেকে নির্মম বিষয় পৃথিবীতে মনে হয় আর কিছু নেই। এর ভেতরে আটকা পড়লে হঠাৎ করে মনে হতে থাকে, কেন আমি ঘর থেকে বের হতে গেলাম? বইমেলায় যেতে গিয়ে আমি তিনদিন দীর্ঘ পথ হেঁটে গিয়েছি। মাঝে মাঝে মনে হয় ঢাকা শহরে বাস গাড়ি টেম্পু তুলে দিয়ে সবাইকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় হেঁটে যেতে বাধ্য করলে কেমন হয়? এখন যেরকম অবস্থা তার থেকে খারাপ হবে বলে মনে হয় না।

আমি যেহেতু শুধু বইয়ের পাঠক নই একইসঙ্গে বইয়ের লেখকও বটে, তাই আমার বইমেলার অভিজ্ঞতা অন্যদের থেকে একটু ভিন্ন হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আমার স্পষ্ট মনে আছে, একটা সময় ছিল যখন বইমেলায় গিয়ে বটতলায় বসে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অটোগ্রাফ দিয়েছি। সন্ধ্যাবেলায় বাসায় যাওয়ার সময় আবিষ্কার করেছি অটোগ্রাফ দিতে দিতে হাতের আঙুল চিপসে গিয়েছে! এখন আর সেরকম অবস্থা নেই। নিশ্চিতভাবে বলা যায় এখন বইমেলায় যারা আসছে তারা বই কিনছে অনেক কম, অটোগ্রাফের চাপ নেই। তবে নতুন এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে—সেটার নাম ‘সেলফি’। যে দুই-চারজন বইয়ের পাঠক একটা বইয়ে লেখকের অটোগ্রাফ নিতে আসছে, তাদের কনুইয়ের গুঁতো দিয়ে প্রায় ছিটকে ফেলে দিয়ে সেলফি শিকারিরা আক্রমণ করছে। (অটোগ্রাফ শিকারি বলে একটা শব্দ সাংবাদিকেরা মাঝে মাঝে ব্যবহার করে, শব্দটা আমার একেবারেই পছন্দ না। যারা অটোগ্রাফ নেয় তারা খাঁটি পাঠক, তবে যারা সেলফি নেয় তারা আক্ষরিক অর্থেই ‘শিকারি’!) 

বইমেলায় পাঠকদের অটোগ্রাফ দিতে দিতে আমি কিছু কিছু তথ্য আবিষ্কার করেছি। ছোট শিশুদের বেলায় পাঠকদের মাঝে ছেলে এবং মেয়ের সংখ্যা প্রায় সমান সমান হলেও শিশুরা যখন বড় হয়ে কিশোর-কিশোরী বা তরুণ-তরুণী হয়ে যায় তখন সেখানে ছেলেদের সংখ্যা ভয়াবহভাবে কম! আমার মাঝে মাঝে মনে হয় এই দেশে ছেলেরা হয়তো বই পড়া ছেড়েই দিয়েছে। বিষয়টা যে শুধু বইমেলায় দেখেছি তা নয়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও আমি একই ব্যাপার দেখেছি। ছেলেরা বই পড়ছে না, বই পড়ছে শুধু মেয়েরা! বই পড়াটাকে আমি খুবই গুরুত্ব দিই, আমি মনে করি বই না পড়া পর্যন্ত একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে পারে না। তাই যদি মনে হয়, এই দেশে ভবিষ্যতে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে ছেলেদের অবদান হবে দায়সারা, সেখানে মেয়েরাই আমাদের একমাত্র ভরসা, তখন আমার সত্যি সত্যি একটু দুর্ভাবনা হয়। বাবা-মায়েরা কী বিষয়টা লক্ষ করেছেন? অবসর সময়ে তাদের ছেলেরা কী করছে, সেটা কি তারা জানেন?

২.

সারা পৃথিবীতেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং নামে একটা ভার্চুয়াল জগতের জন্ম হয়েছে এবং রক্ত-মাংসের অনেক মানুষ সেই ভার্চুয়াল জগতে বাস করে। তাদের সেই ভার্চুয়াল জগতের সঙ্গে বাস্তব জগতের সরাসরি যোগাযোগ নেই বলে আমি সেগুলো সম্পর্কে খুব ভালো জানি না। তবে বইমেলায় সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে মনে হচ্ছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কের এই ভার্চুয়াল জগতের সঙ্গে বইমেলার জগতের এক ধরনের সংঘাত তৈরি হয়েছে! একদিন একজন সাংবাদিক এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ফেসবুক সেলিব্রেটিদের লেখা বই হঠাৎ করে বেস্টসেলার হয়ে যাচ্ছে, সেটা সম্পর্কে আমার মতামত কী। সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনেই অনুমান করা যায় তারা ঠিক কোন উত্তরটি শুনতে চান, তবে আমি সবসময় তাদের ‘সঠিক’ উত্তর দিয়ে সন্তুষ্ট করতে পারি না, এবারেও মনে হলো সেটাই ঘটেছে, তাদের সন্তুষ্ট করতে পারিনি। আমি বলেছি, নেটওয়ার্ক সেলিব্রেটি হওয়ার কারণে একজনের লেখা বই যদি হঠাৎ করে বেস্টসেলার হয়ে যায়, তাতে সমস্যা কোথায়? সত্যি যদি বইটি ভালো হয়ে থাকে, তাহলে সেটি তো বেস্টসেলার হতেই পারে। আর যদি কোনও ধরনের হুজুগের কারণে এটা বেস্টসেলার হয়ে থাকে, তাহলে দুই চার বছর পরে এমনিতেই কেউ আর সেই বই পড়বে না, এর মাঝে উত্তেজিত হওয়ার মতো তো আমি কিছু দেখি না। এরকম ব্যাপার সারা পৃথিবীতেই ঘটছে, আমাদের দেশে ঘটতে আপত্তি কোথায়? (বইয়ের ব্যাপারে আরও একটা মজার ব্যাপার ঘটে, যে বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় সেই বইই যে সবচেয়ে বেশি পড়া হয়, সেটি কিন্তু সব সময়ে সত্যি নয়। সালমান রুশদির ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর তার অসংখ্য কপি বিক্রি হয়েছিল, কিন্তু বইটি পড়ে শেষ করেছিল অল্প কিছু পাঠক!) 

তবে আমি কিন্তু সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ভার্চুয়াল জগতের সঙ্গে বইমেলার বাস্তব জগতের যোগাযোগটাকে একটা ইতিবাচক বিষয় হিসেবে দেখি। ছাপানো একটা বই মানেই বেশকিছু কাগজ এবং যার অর্থ পৃথিবীর কোথাও না কোথাও একটা গাছের ওপর কুড়ালের নিষ্ঠুর আঘাত। কাজেই কেউ যদি সত্যিকারের একটা বই ছাপানোর আগে সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ফিল্টার পার হয়ে আসে, সেটি সবার জন্য ভালো। পৃথিবীর পরিবেশের জন্য সবচেয়ে বেশি ভালো। আমি মনে করি নতুন লেখকদের নিজের পকেটের টাকা খরচ করে বই ছাপানোর আগে অবশ্যই সোশ্যাল নেটওয়ার্কে নিজের লেখার মান যাচাই করে আসা উচিত।

৩.

বইমেলা নিয়ে ইদানীং সারাদেশে একটা চমৎকার ব্যাপার ঘটতে শুরু করেছে, সেটি হচ্ছে বইমেলা এখন শুধু ঢাকা শহরের মাঝে আটকা পড়ে নেই—সারাদেশেই বইমেলা হচ্ছে। আমি চট্টগ্রামের বইমেলায় গিয়ে মুগ্ধ হয়ে এসেছি, বিশাল এলাকাজুড়ে অনেক বড় একটি বইমেলা। ঢাকা শহরের মতো এক মাসব্যাপী নয়, কিন্তু যথেষ্ট সময় নিয়ে বইমেলা। তবে সেখানে যে বিষয়টি আমাকে মুগ্ধ করেছে সেটি হচ্ছে সাহিত্য সংক্রান্ত একটি আলোচনা। দেশের এবং দেশের বাইরের সাহিত্যিকদের নিয়ে সেই আলোচনাটি ছিল অসাধারণ, আলাদাভাবে যে বিষয়টি আমাকে হতবাক করেছে সেটি হচ্ছে সেই আলোচনায় উপস্থিত বিশাল সংখ্যক দর্শক। এতো দর্শক যে এতো আগ্রহ নিয়ে এতো দীর্ঘ সময় সাহিত্যের ওপর আলোচনা শুনতে পারে, সেটি আমি নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না!

চট্টগ্রামের এই বইমেলাটি দেখে আমার মনে হয়েছে সারা দেশেই এরকম বইমেলার আয়োজন করা সম্ভব। আমরা এখন খুব একটা জটিল সময়ে বসবাস করছি, যত বেশি মানুষকে আমরা বই পড়ায় আগ্রহী করতে পারব ততই মঙ্গল। আর বই পড়াতে আগ্রহী করার জন্য বইমেলা থেকে ভালো উদ্যোগ আর কী হতে পারে? 

৪.

বইমেলা নিয়ে কথা বললেই বইয়ের কথা চলে আসে। আর বইয়ের কথা বললেই বই পড়ার কথা চলে আসে। আমার নিজেকে অসাধারণ সৌভাগ্যবান মনে হয় যে আমি জন্মের পর থেকে অসংখ্য বইয়ের ভেতর বড় হয়েছি। শৈশবের সবচেয়ে পুরনো স্মৃতি হচ্ছে বাসায় অসংখ্য বই, আমি বইয়ের শেলফ থেকে সেই বই নামিয়ে বসে বসে তার পৃষ্ঠা উল্টে ছবি দেখছি। এক একটি ছবি দেখে মাথার মাঝে রাজ্যের কল্পনা এসে ভিড় করছে। পড়তে শেখার আগেও বই নেড়েচেড়ে দেখেছি। পড়তে শেখার পর সম্পূর্ণ নতুন আরেকটা জগৎ চোখের সামনে খুলে গেছে। মনে হয়েছে শুধু আমার জীবনটাই একমাত্র জীবন নয়, এর সঙ্গে আমি অনেক জীবন-যাপন করছি, যত বইয়ের যত কাহিনি ততগুলো জীবন।

তাই আমার বুকটা ধক করে ওঠে যখন একজন কিশোর বা কিশোরী এসে আমাকে বলে, ‘স্যার, আমার বাবা-মা আমাকে বই পড়তে দেয় না, আমি কী করব?’

আমাদের দেশে একটি বিচিত্র অভিভাবক শ্রেণির জন্ম হয়েছে, যারা মনে করে লেখাপড়া মানে পরীক্ষা। তারা বিশ্বাস করে, পরীক্ষায় ভালো মার্কস ছাড়া এই জীবনে ছেলেমেয়েদের আর কিছু পাওয়ার নেই। আমি কেমন করে তাদের বোঝাবো কোনও কিছু শেখা থেকে হাজার গুণ বেশি জরুরি শেখার ক্ষমতাটাকে শানিত রাখা। (সেই জন্য আমি প্রাইভেট আর কোচিং এতো অপছন্দ করি। তারা একজন শিশু-কিশোরকে কিছু একটা হয়তো শেখায়, কিন্তু তার শেখার ক্ষমতাকে পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়। তারা নিজেরা নিজেরা কিছু একটা শিখতে পারবে সেই আত্মবিশ্বাসটা তাদের আর থাকে না।) যে অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের কাছে পরীক্ষায় ভালো ফল করা ছাড়া আর কোনও কিছুই চান না, তারা জানেন না তাদের ছেলেমেয়েদের কত বড় ক্ষতি করে যাচ্ছেন।

একটি ছেলে বা মেয়ে যখন একটা গল্পের বই পড়ে তখন তারা যে শুধু একটা মজার কাহিনি পড়ে আনন্দ পায় তা নয়, বই পড়ার পুরো এই ব্যাপারটা তার মস্তিষ্কের মাঝে একটা ছোটখাটো বিপ্লব করে ফেলে। আমাদের মস্তিষ্কের নানা অংশ নানা ধরনের আলাদা আলাদা কাজ করতে পারে—আজকাল বিজ্ঞানীরা সেটা যন্ত্রপাতি দিয়ে বাইরে থেকে দেখতেও পান। কেউ যখন একটা বই পড়ে, তখন তার মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ একটির সঙ্গে আরেকটা সমন্বয় করতে শুরু করে দেয়। সোজা ভাষায় বলা যায়, আমাদের মস্তিষ্ক যে উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছে—চিন্তাভাবনা করে কোনও একটা দায়িত্ব পালন করা, মস্তিষ্ক সেটা অনেক ভালোভাবে করতে পারে, যদি মস্তিষ্ককে বই পড়ায় অভ্যস্ত করে তোলা যায়। বিষয়টা বোঝার জন্য রকেট সায়েন্টিস্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই, আমরা নিজেরাই কী লক্ষ করিনি একটা বই পড়ার সময় নিজের অজান্তেই আমরা বইয়ের চরিত্রগুলোকে কল্পনা করতে শুরু করি? আমরা যখন একটা বইয়ে কোনও গল্প পড়ি, সেই গল্পের সবসময় একটা শুরু থাকে, মাঝের অবস্থা থাকে এবং গল্পের শেষ থাকে। বই পড়ে অভ্যস্ত একটা মস্তিষ্ক তখন নিজেই সকল বুদ্ধিবৃত্তিক সমস্যার শুরু, তার বিশ্লেষণে মনোযোগ দেওয়া এবং সমাপ্ত করার কাজে অভ্যস্ত হয়ে যায়। এটি আমার নিজের কথা নয়, যারা এই বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা করেন, তাদের কথা।

কাজেই কেউ যেন মনে না করে বই পড়া হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় কাজে সময় অপচয় করা। বই পড়া হচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার সঞ্জীবনী সুধা—যদি সত্যিই পৃথিবীতে সেরকম কিছু থেকে থাকে! 

যেকোনও সময়ের তুলনায় এই মুহূর্তে বই পড়া সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সারা পৃথিবীতে মানুষের মহামূল্যবান মস্তিষ্কটিকে তার উপযুক্ত কাজের জন্য প্রস্তুত না করে সেটিকে অকর্মণ্য করে তোলার বিশাল একটা ষড়যন্ত্র কাজ করে যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্য দেশে যা কিছু হতে থাকুক আমরা কি আমাদের ছেলেমেয়েদের অন্যভাবে বড় করতে পারি না, যেন তার সঙ্গে দেখা হলেই তাকে জিজ্ঞেস করতে পারি—‘তুমি এখন কী বই পড়ছো?’

তখন সে যেন উজ্জ্বল মুখে একটা বইয়ের নাম বলতে পারে। শুধু তাই নয়, সে যেন হাসিমুখে বলে, ‘এটা শেষ করেই আমি নতুন একটা বই পড়বো!’ সে তখন তার পরবর্তী বইয়ের নাম বলবে এবং আমরা মুগ্ধ চোখে তার দিকে তাকিয়ে থাকবো।

এটি কি খুব বেশি কিছু চাওয়া হলো?

লেখক: কথাসাহিত্যিক

 

/এমএমজে/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণ: ২ আসামির স্বীকারোক্তি
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণ: ২ আসামির স্বীকারোক্তি
‘সাংগ্রাই জলোৎসব’ যেন পাহাড়ে এক মিলন মেলা
‘সাংগ্রাই জলোৎসব’ যেন পাহাড়ে এক মিলন মেলা
পাঁচ উপায়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা
বাজেট ২০২৪-২৫পাঁচ উপায়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা
টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কাউন্সিলর-যুবলীগ নেতার সংঘর্ষে যুবক নিহত
টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কাউন্সিলর-যুবলীগ নেতার সংঘর্ষে যুবক নিহত
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ