X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

হে নগরপিতাগণ!

নাদীম কাদির
২৪ এপ্রিল ২০১৬, ১৮:৪৫আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০১৬, ১৮:৫২

Nadeem Qadirবছরের এই সময়ে লন্ডনে চোখে পরে পত্রপল্লবের নানা রঙ, বাংলাদেশে যেমন সবুজ। তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, শুরু হয় মেঘ আর রৌদ্রের লুকোচুরি খেলা।
লন্ডনে এই সময়ে বেশি দেখা যায় টিউলিপ। এই নগরটি এত পরিকল্পিত যে, বছরের সব ঋতুতেই কোনও না কোনও রঙ রাঙিয়ে দিয়ে যাবে তাকে। সৃষ্টিকর্তার দানের সঙ্গে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবন মিলে এখানে এসেছে রঙের এই বৈচিত্র্য।
এখানে অনেক পুরনো গাছের ডাল এমনভাবে কেটে রাখা হয়, তাতে গাছগুলোই এক একটা ভাস্কর্যের মতো দেখায়।
গাছের এ ধরনের যত্ন বাংলাদেশেও করা হয়, তবে তা শুধু সেনাবাহিনীতে ও কিছু সরকারি ভবনে। এর অর্থ আমাদেরও দক্ষতা রয়েছে, তবে তা আমরা নগরের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজে ব্যবহার করি না।


আরও পড়তে পারেন: আইএসের দায় স্বীকার ‘বায়বীয়’ বিষয়: মনিরুল ইসলাম

আমি ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, আমার মা কী করে সারাবছর বাগান রঙিন রাখার জন্য পরিকল্পনা করে গাছ লাগাতেন। ক্যান্টনমেন্টের মালিরা অবশ্য নিজেদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ডালিয়া বা সবচেয়ে রঙিন কসমস ফোটানোর প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই লেগে থাকতেন।
আমাদের নগরগুলো যেমন অপরিকল্পিতভাবে তৈরি হয়েছে, তেমনি আমরা সত্যিকারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকে খুবই সামান্যই মনোযোগ দিয়েছি।
আমি রাজধানীর নগরপিতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, আমি প্রয়োজনে এক্ষেত্রে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে প্রস্তুত। কিন্তু তারচেয়েও জরুরি, কনক্রিট দিয়ে নগরীটি মুড়ে না ফেলে সেনাবাহিনী থেকে মালিদের এনে প্রকৃতির দান ফুলের গাছ দিয়ে আমাদের পরিপার্শ্ব সাজিয়ে তোলা।
ঢাকায় যে দুটি স্থানে পরিকল্পিত বাগান করা হয়েছে তা হচ্ছে জাতীয় সংসদভবন এলাকা ও রমনা পার্ক। সেখানেও দক্ষ মালিরা রয়েছেন।

আরও পড়তে পারেন: সবার ওপরে মুস্তাফিজ

নগরটি লাল, পার্পল, হলুদ ইত্যাদি বিভিন্ন রঙে ভাগ করে ফেলা যায়, দুই ঋতুর দুই রকম ফুল গাছ দিয়ে সাজানো যায় রাজধানীকে। এতে কোনও রকম বাড়তি ব্যয় ছাড়াই সারাবছর একটি রঙের খেলা চলতে থাকবে নগরজুড়ে। আমি আমার বাগানে টিউলিপ লাগিয়েছিলাম। সে সব এখন বড় হচ্ছে। একবার গাছ লাগিয়ে পুরো বছর ধরে যত্ন করলে ব্যয় কমে ও পরিবেশ রঙিন থাকে।
আল্লাহ আমাদের দেশকে উর্বর ভূমি আর সুন্দর আবহাওয়ার আশীর্বাদে পুষ্ট করেছেন। এখন তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি, এমনিতে আমি আমার ঢাকার বাগানে দেখেছি, ইংলিশ রোজসহ নানা বিদেশি ফুল ভালোই ফোটে। নিয়মিত একটু যত্ন করে পানি দেওয়া, তাতেই বাগান রঙিন হয়ে ওঠে। আমার সন্তানরা নিয়মিত সে সব ফুলের ছবি তুলে আমাকে পাঠায়। কী আনন্দ! এই আনন্দ বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে।
আমি জানি মেয়র আনিসুল হক বাগানসহ একটি বাড়িতে থাকেন। তার সুন্দরী স্ত্রী রুবানার গৃহসজ্জাও চমৎকার। ফলে, তিনিও সাহায্য করতে পারেন।

আরও পড়তে পারেন: অন্ধকারে জীবিত ও মৃতের হৃদয়...


আমার অন্য পরামর্শগুলো হলো:

১. নগরের পার্কগুলোয় কিছু ছাউনি ও বেঞ্চ তৈরি করে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞাপন নিন। লোহার বেঞ্চ হলে তা টেকসই হবে। চুরিও হবে না।

২. বিখ্যাত ব্যক্তিদের নামে পার্ক ও রাস্তার নামকরণ করুন, যেন নতুন প্রজন্ম আমাদের ইতিহাস জানতে পারে।

৩. বসতবাড়িগুলোর সামনের অংশ সুন্দর রঙ করা বাধ্যতামূলক করুন। বিশেষত গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ওপর অবস্থিত বাড়িগুলো সুন্দর রঙ করা থাকলে শহরটিকে স্বাভাবিকভাবেই পরিচ্ছন্ন দেখাবে।

হে নগরপিতাগণ, আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন? আমি দেশে ফিরে আপনাদের সহায়তা করতে তৈরি আছি।

লেখক: সাংবাদিকতায় জাতিসংঘের ড্যাগ হ্যামারসোল্ড স্কলার এবং লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা
বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা
ইউআইইউতে ‘বাংলাদেশের সংবিধান এবং এর শাসন কাঠামো’ শীর্ষক লেকচার অনুষ্ঠিত
ইউআইইউতে ‘বাংলাদেশের সংবিধান এবং এর শাসন কাঠামো’ শীর্ষক লেকচার অনুষ্ঠিত
পাট শিল্পের উন্নয়নে জুট কাউন্সিল গঠন করা হবে
পাট শিল্পের উন্নয়নে জুট কাউন্সিল গঠন করা হবে
ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় মাদ্রাসাশিক্ষকের ১০ বছরের কারাদণ্ড
ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় মাদ্রাসাশিক্ষকের ১০ বছরের কারাদণ্ড
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ