কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি বিজড়িত স্থাপনা ‘সমুদ্র বিলাস’কে নতুন করে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এই রিসোর্টকে ঘিরে হুমায়ূন আহমেদের ভক্ত ও পর্যটকদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও আগ্রহের কথা বিবেচনায় এই উদ্যোগ নিয়েছেন তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন।
হূমায়ুন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সমুদ্র বিলাসকে পাল্টে ফেলার পরিকল্পনা করেছি। আমরা সমুদ্র বিলাসকে কেবল একটি রিসোর্টে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। বিশ্বের অন্যান্য জায়গায়ও বিখ্যাত ব্যক্তিদের স্মৃতি ধরে রাখার এমন পদক্ষেপ নেওয়ার উদাহরণ আছে। আমরাও সেই আদলেই সমুদ্র বিলাসকে নতুন রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
রিসোর্টের ম্যানেজার মো. পাপন খাঁন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সমুদ্র বিলাস নিয়ে ম্যাডামের (শাওন) অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এরই মধ্যে ম্যাডাম ৪৫ লাখ টাকা খরচ করে এই রিসোর্টের পাশে আরও ৩০ শতাংশ জমি কিনেছেন। সেখানে নতুন করে আরও কটেজ নির্মাণ করা হবে। এটা লাভজনক কোনও প্রজেক্ট নয়। হুমায়ূন স্যারের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও তার হাজারও স্মৃতি ধরে রাখতেই তিনি এই পরিকল্পনা নিয়েছেন।’
পাপন খাঁন আরও বলেন, ‘সমুদ্র বিলাসে যেখানে বসে স্যার উপন্যাস লিখতেন সেই জায়গা সংরক্ষণ করা হবে। এছাড়া, স্যারের ব্যবহৃত চেয়ার, টেবিল ও আসবাবপত্রও খুব যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করা হবে। পর্যটক ও ভক্তদের জন্য আরও বড় পরিসরে নতুন নতুন কটেজ নির্মাণ করা হবে। সবকিছু হচ্ছে ম্যাডামের ইচ্ছায়।’
পাপন খাঁন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে বাড়ি করার পর স্যার মাঝে-মধ্যে এখানে এসে থাকতেন। এখানে বসে লিখতেন। তিনি সর্বশেষ এসেছিলেন ২০১১ সালের ১৮ ডিসেম্বর। সঙ্গে স্ত্রী, দুই সন্তান নিশাদ ও নিনিত এবং নাট্যপরিচালক মাসুদ রানাসহ আরও অনেকে ছিলেন। এরপর তিনি আর আসতে পারেননি এখানে।’
প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে মাত্র ১৬ হাজার টাকায় ২২ শতক জমি কিনে নেন হুমায়ূন আহমেদ। পরে ১৯৯৩ সালে সেখানে গড়ে তোলেন সমুদ্র বিলাস নামের একটি রিসোর্ট। এই রিসোর্টকে ঘিরেই পর্যটকরা সেন্টমার্টিনকে চিনতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পর্যটকদের সংখ্যা। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর এই রিসোর্টের হাল ধরেন তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। এখন শাওনের তত্ত্বাবধানে সমুদ্র রিসোর্টের পুনঃনির্মাণ কাজ চলছে।
আরও পড়ুন-
অন্ধকার থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেন তারা
কাল না. গঞ্জের ৭ খুন মামলায় পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
/এফএস/টিআর/