X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে সিভিল সার্জন-সেবাগ্রহীতা মুখোমুখি

নীলফামারী প্রতিনিধি
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০০:৩৭আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৭:০২

নীলফামারীতে সেবাগ্রহীতাদের মুখোমুখি সিভিল সার্জন নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালের সেবাগ্রহীতাদের মুখোমুখি হয়েছেন জেলার সিভিল সার্জন রনজিৎ কুমার বর্মণ। সেখানেই সদরের এই হাসপাতাল নিয়ে অভিযোগের ঝাঁপি খুলে বসেন সবাই। সিভিল সার্জন তাদের সব অভিযোগ শুনে সেবাগ্রহীতাদের কাছে কর্তৃপক্ষের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে তাদের আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শও দেন।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে হাসপাতাল চত্বরে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এসময় উপস্থিত সেবাগ্রহীতারা হাসপাতালের আবাসন ও চিকিৎসক সংকট, ওয়ার্ডে দুর্গন্ধ, কুকুর-বেড়ালের অবাধ বিচরণ, পানির সংকট এবং কর্তব্যরতদের আচরণসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন সিভিল সার্জনের কাছে।
জেলা সদরের পঞ্চপুকুর গ্রামের সুফিয়া খাতুন (৪০) বলেন, ‘হাসপাতালের বাথরুম অপরিষ্কার থাকে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুর্গন্ধের কারণে চলাফেরা করা যায় না। এছাড়া, ওয়ার্ডে কুকুর-বেড়ালের অবাধ বিচরণে রোগী ও স্বজনদের আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়।’
শহরের ছমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মামুন অর রশিদ বলেন, ‘হাসপাতালে হেল্প ডেস্ক আছে, কিন্তু সেখানে কেউ থাকে না। ফলে হাসপাতাল সম্পর্কে কোনও তথ্য পেতে চাইলে ভোগান্তি পোহাতে হয়।’
একই উপজেলার দাড়োয়ানী গ্রামের রাশেদুর রহমান বলেন, ‘আমার স্ত্রীর প্রসবের সময় হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও আয়ারা আমার স্বজনদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। এর প্রতিবাদ করায় তারা আমাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। প্রসবের সময় আমার সন্তানও আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ওই আঘাতের কারণে আমার বচ্চা এখন প্রতিবন্ধী।’
সদর আধুনিক হাসপাতাল নিয়ে এমন আরও অনেক সমস্যার কথাই উঠে আসে উপস্থিত সেবাগ্রহীতাদের মুখে। তবে হাসপাতালটির আবাসন ও জনবল সংকটের পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবের কথাই অনেক বেশি উঠে আসে অভিযোগকারীদের কাছ থেকে। উপস্থিত সিভিল সার্জন অভিযোগকারীদের জানান, সব অভিযোগই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবেন তিনি।
পরে সিভিল সার্জন রনজিৎ কুমার বর্মণ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সংকট আছে, সামর্থ্য অনুযায়ী সমাধানের চেষ্টাও করা হচ্ছে।’ জনবল ও অবকাঠামোর কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ কার্ডিওলোজি বিভাগসহ অনেক বিভাগই জনবলের সংকটের কারণে বন্ধ আছে। এ সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকার চাহিদার কথা জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলেই এসব বিভাগ চালু হবে।’
হাসপাতালে পানির সংকটের বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায়, রোগীর স্বজনরাও বাথরুমে পানি ব্যবহার করে কল ছেড়ে রাখেন, কল ভেঙে ফেলার ঘটনাও রয়েছে। এসব কারণে অনেক সময় পানির সংকটে পড়তে হয়।’
রনজিৎ কুমার বর্মণ আরও বলেন, ‘বর্তমানে একশ শয্যার অবকাঠামো রয়েছে এই হাসপাতালে। এখন ক্যাম্পাসে ২৫০ শয্যার অবকাঠামো নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। সেটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে রোগীর আবাসন সমস্যা অনেকটাই সমাধান হবে।’ সার্বিকভাবে সেবা নেওয়ার জন্য সবাইকেই আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি এসএম সফিকুল আলম ডাবলু শাহের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মুজিবুল হাসান চৌধুরী, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আসাদ আলম, আসমা আহসান, সনাকের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক নাসিমা বেগম প্রমুখ।

/টিআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
খুলনায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা
খুলনায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল এক ঘণ্টা
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস