পঞ্চগড়ে অচেতন অবস্থায় একই পরিবারের নারী ও শিশুসহ ১২ জনকে উদ্ধার করেছে তেঁতুলিয়া থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) রাতে তাদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চেতনানাশক মেশানো পানি বা খাদ্য খেয়ে তারা অচেতন হয়ে পড়েন বলে চিকিৎসকরা ধারণা করছেন। তারা বর্তমানে শঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলেও জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি একই উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের এক পাথর ব্যবসায়ীর বাড়ির পানিতে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ১০ লাখ টাকার মালামাল চুরির ঘটনা ঘটে।
বৃহ্স্পতিবারের ঘটনাটি ঘটে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের হোলাসিজোত গ্রামের পাথর ব্যবসায়ী আব্দুল জলিলের বাড়িতে। এ ঘটনায় অচেতন অবস্থায় পরিবারটির সদস্য আব্দুল জলিল (৫৫), আইনুল ইসলাম (২৮), ফেরদৌস (১৮), আঞ্জুমান আক্তার (১৫), শিমুলি আক্তার (২০), অনিমা আক্তার (৬), অরণ্য (৫), রাসেল (১০), অয়ন (৭), মনির হোসেন (২২), ময়না আক্তার (৫০) ও আসিয়া খাতুনকে (২৫) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাত, তরকারি, পানি ও চা পানের পর থেকেই বাড়ির প্রত্যেক সদস্যের প্রথমে মাথা ঘোরানো, ঝিমুনি এবং পরে একজন একজন করে অচেতন হতে থাকেন। এভাবে একে একে ওই পরিবারের ১২ জন সদস্য অচেতন হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে তেঁতুলিয়া থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাদের পানি বা খাদ্যে চেতনানাশক মেশানো হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন।
বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদরত ই খুদা মিলন জানান, পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আব্দুল জলিলের বাড়ির সদস্যদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বাড়ির সব ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। টাকা পয়সা, স্বর্ণালংকার বা মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি বা ডাকাতির উদ্দেশে দুষ্কৃতকারীরা এমনটি করতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
হাসপাতালে ভর্তির পরপরই পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার গিয়াস উদ্দিন আহমদ, পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডা. মো. সাইফুল ইসলাম তাদের দেখতে যান। এ সময় তারা তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে তেঁতুলিয়ার ভজনপুর ইউনিয়নের পাথর ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের বাড়ির পানির ট্যাংকিতে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাড়ির সদস্যদের ঘুমের সুযোগে ঘরে ঢুকে টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম তেঁতুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি বলে রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন।