X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

‘কখন যে ছাদ ভেঙে পড়ে, ভয় লাগে, তারপরও স্কুলে আসি’

মোজাম্মেল হোসেন মুন্না, গোপালগঞ্জ
১৯ এপ্রিল ২০১৯, ২১:৩৬আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৫০

বারান্দায় পাঠদান

ক্লাস চলার সময় কখনও ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ে, কখনও খসে পড়ে দেয়ালের প্লাস্টার, তারপরও নিয়মিত উপস্থিত হয় শিক্ষার্থীরা। স্কুলের বারান্দায় মাদুর পেতেও ক্লাস করে ওরা। যেকোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সম্ভাবনা থাকলেও থেমে নেই পাঠদান। তবে স্কুলভবনের বাজে অবস্থার কারণে নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১৬২ নম্বর খাটরা নীচুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

এসময় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাথৈ বৈদ্য বলেছে, ‘আমাদের ক্লাসরুম ভাঙা, কখন যে ছাদ ভেঙে পড়ে, ভয় লাগে, তারপরও আমরা স্কুলে আসি, যাতে লেখাপড়ার ক্ষতি না হয়।’

অপর শিক্ষার্থী হীরা বলেছে, ‘আমাদের ক্লাসরুমের ছাদের-দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ে, ক্লাসে ঢুকতে ভয় লাগে।’

দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী স্নেহা বৈদ্য ও নুপুর বৈদ্য জানায়, অনেক বছর ধরে স্কুলের ক্লাসরুম ভাঙা। তাই স্কুলের বারান্দায় মাদুর পেতে লেখাপড়া করানো হয়।

ভবনের দেয়াল ও ছাদের কয়েকটি স্থানের ভাঙা অংশ

স্কুলটিতে অধ্যয়নরত স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্কুলটি পুরোটাই ভাঙা, জরাজীর্ণ। বড় ধরনের ঝড় বা সামান্য ভূমিকম্প হলে পুরো স্কুলটা গুঁড়িয়ে যাবে। দ্রুত স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ করে ছেলে-মেয়েদের ভালোভাবে লেখাপাড়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

স্কুলটির সহকারী শিক্ষক মুকুন্দ বিহারী বৈদ্য ও কবিতা কির্ত্তনীয়া বলেন, ‘স্কুলের প্রত্যেকটি শ্রেণিকক্ষ ভেঙে গেছে, তারমধ্যে একটি কক্ষ একেবারেই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লাইব্রেরি রুমেই ক্লাস নিতে হচ্ছে। দ্রুত নতুন ভবন না হলে ভবিষ্যতে স্কুলে পাঠদান সম্ভব হবে না। আর এ কারণেই স্কুলের শিক্ষার্থীও আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে।’  

লাইব্রেরি রুমে পাঠদান

প্রধান শিক্ষক সঞ্জিব কুমার বৈদ্য বলেছেন, ‘স্কুলটি ২০১৪ সালে সরকারিভাবে ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। ভাঙা, জরাজীর্ণ স্কুলে কেউ ছেলে-মেয়ে পাঠাতে রাজি হতো না। এলাকার লোকজন নিয়ে একাধিকবার মিটিং করে স্কুলে পাঠদান অব্যাহত রেখেছি। শিক্ষার্থীর সংখ্যাও আগের চেয়ে কমে গেছে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য বারবার অফিসে দৌড়েছি। আশা করছি দ্রুত নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।’  

এই প্রসঙ্গে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘সদর উপজেলা প্রকৌশলীকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলটি পরিদর্শন করেছি। একবারেই জরাজীর্ণ অবস্থা, একপাশ দেবে গেছে। সদর উপজেলায় এরকম ৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন রয়েছে, সেগুলির তালিকা করে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনন্দ কিশোর সাহা বলেছেন, ‘আমরা সব উপজেলার জরাজীর্ণ ভবনের তালিকা প্রস্তুত করছি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এসব স্কুল ভবনের তালিকা আমরা ঢাকায় ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো, যাতে পর্যায়ক্রমে ভবনগুলো নির্মাণ বা সংস্কারের ব্যবস্থা করে দিয়ে পাঠদানের উপযোগী করা হয়।’

 

 

/এএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: স্টেশন মাস্টারসহ ৩ জন বরখাস্ত
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: স্টেশন মাস্টারসহ ৩ জন বরখাস্ত
খিলগাঁওয়ে ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
খিলগাঁওয়ে ছাদ থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
ফুটবল লেখকদের ভোটে বর্ষসেরা ফডেন
ফুটবল লেখকদের ভোটে বর্ষসেরা ফডেন
চীন সফরের পরিকল্পনা করেছেন পুতিন
চীন সফরের পরিকল্পনা করেছেন পুতিন
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ
ব্যর্থতার অভিযোগে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আইনি নোটিশ