X
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাতকানিয়ায় বন্যায় কোমরপানি

প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
১৫ জুলাই ২০১৯, ১৮:০২আপডেট : ১৫ জুলাই ২০১৯, ১৮:৫২

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ওই উপজেলার অধিকাংশ এলাকা কোমরপানিতে তলিয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় খাবার এবং পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে ওই এলাকায়।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাতকানিয়ার ১৭টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় সবগুলো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে নলুয়া, ঢেমশা, কেঁওচিয়াসহ ছয়-সাতটি ইউনিয়নের অবস্থা ভয়াবহ। এসব এলাকায় পাঁচ থেকে ছয় ফুট পানি উঠেছে। সদর ইউনিয়নসহ অন্যান্য ইউনিয়নে তিন থেকে চার ফুট পানি উঠেছে। তবে সবচেয়ে বেশি পানি গতকাল উঠেছে। রবিবার (১৪ জুলাই) সাঙ্গু নদীতে বিপদসীমার দেড় মিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে।’

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্যায় সাতকানিয়ার অধিকাংশ ঘরবাড়িতে পানি ঢুকেছে। এজন্য রান্না করা যাচ্ছে না। শুকনো খাবার খেয়ে কোনও মতে তারা জীবনধারণ করছেন। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। আবার অনেক শহরে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় চলে গেছেন। যাদের ঘরবাড়ি পাকা তারা ঘরের ছাদে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে তারা রান্না-বান্না করে কোনও মতে দিনাতিপাত করছে। ছাদে রান্না করে তারা প্রতিবেশীদেরকেও খাওয়াচ্ছেন। অন্যদিকে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এখন মানুষ নৌকা দিয়ে পারাপার হচ্ছে।

কেঁওচিয়া উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রের নিচেও পানি   কেঁওচিয়া ইউনিয়নের কেঁওচিয়া উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা সকিনা খাতুন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘ঘরে পানি ঢুকে গেছে। তাই এখানে আশ্রয় নিয়েছি। এখানেও নিচে পানি। কোনও দিকে যাওয়া যায় না। রান্না করারও উপায় নেই। তাই এখন শুকনো খাবার খেয়ে কোনও মতে থাকছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, ‘বন্যা দুর্গতদের ইতোমধ্যে ৯৫ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে পাঠানো ৮০০ শুকনো খাবারের প্যাকেট এবং উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে আরও সাড়ে তিন হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট দেওয়া হয়েছে।’

বৃষ্টি না হলে আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ বৃষ্টি না হওয়ায় কিছু কিছু এলাকায় এক থেকে দেড় ফুট পানি কমেছে। এভাবে বৃষ্টি বন্ধ থাকলে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে।’

এদিকে বন্যার পানিতে চার থেকে পাঁচ ফুট তলিয়ে যাওয়ায় কেরানিরহাট থেকে বান্দরবান সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বাজালিয়া ইউনিয়নের সচিব মো. খসরু শিকদার বলেন, ‘বাজালিয়া ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই ইউনিয়নের মাহালিয়া এলাকার বাসিন্দারা। ওই এলাকার প্রায় দুই হাজার ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এখন মানুষকে নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।’

সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় গত এক সপ্তাহ কেরানিরহাট থেকে বান্দরবান সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত মঙ্গলবার সড়কে হাঁটু সমান জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবশ্য তখন কিছু বড় গাড়ি চলাচল করেছে। কিন্তু এরপর গত কয়েকদিন সড়কে আরও পানি যাওয়ায় এখন যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।’

 

/এমএএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বৃষ্টিতেই কাটলো ওয়াসার পানির সংকট
বৃষ্টিতেই কাটলো ওয়াসার পানির সংকট
টিভিতে আজকের খেলা (৭ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (৭ মে, ২০২৪)
খুলনায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা
খুলনায় আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরে জলাবদ্ধতা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
রৌমারীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিপক্ষের হামলা
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যেভাবে অপহরণকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে এলো স্কুলছাত্র
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
যে শিশুকে পাচারের অভিযোগে মিল্টনের বিরুদ্ধে মামলা
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস