বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের চরলক্ষ্মীপাশা গ্রামে বাবা-ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃত তিন ডাকাত। মঙ্গলবার (৭ জুলাই) দুপুরে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।
ঘাতকরা হলো বরিশালের বাকেরগঞ্জের বাদশা হাওলাদার, শাহীন খান ও সানি হাওলাদার। তাদের ৬ জুলাই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়। তারা বাকেরগঞ্জের গোমা গ্রামের বাসিন্দা। এদের বিরুদ্ধে বাকেরগঞ্জ থানায় দস্যুতা, চুরিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।
গ্রেফতার তিন জনের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ডের ৪-৫ দিন আগে থেকেই নজরদারি করছিল ডাকাত সদস্যরা। পরিকল্পনা মাফিক বাদশা, শাহীন ও সানি টাকা দেওয়ার কথা বলে ইয়াসিনকে বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে সানি ও শাহীন তাকে হত্যা করে।
এরপর হত্যাকারীরা নদীর তীরে এসে ইয়াসিনের বাবা বৃদ্ধ হেলাল উদ্দিনকে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দিয়ে পেটের দু’পাশে ছুরি চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ পানিতে ডুবিয়ে দেয়। এরপর আসামিরা ভিকটিমের সঙ্গে থাকা তিন হাজার ৫০০ টাকা, একটি মোবাইল ফোন, ট্রলার ও পরনের কাপড়চোপড় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে চলে যায়।
বাবা-ছেলের মরদেহ উদ্ধারের পরপরই তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ৬ জুলাই ঢাকার সদরঘাট এলাকার তেলঘাট থেকে তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করাসহ ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নইমুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরদার ফরহাদ হোসেন ও বাকেরগঞ্জ এসপি সার্কেল আনোয়ার সাঈদ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই রাত ৯টায় বাকেরগঞ্জ উপজেলার কবাই ইউনিয়নের চরলক্ষ্মীপাশা গ্রাম থেকে গলাকাটা ইয়াসিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লুঙ্গি ও জামা পরা ওই যুবককে ছুরি দিয়ে গলা কেটে ফেলে রাখা হয় বলে পুলিশের ধারণা। পরদিন ৪ জুলাই সকাল ৭টায় ইয়াসিনের মরদেহের ৫০০ গজ দূর থেকে উদ্ধার হয় তার পিতা হেলাল উদ্দিনের মরদেহ। এ ঘটনায় হেলালের স্ত্রী নাসিমা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের শিকার বাবা-ছেলে ট্রলার বোঝাই করে বিভিন্ন হাট ঘুরে চাই (মাছ ধরায় ব্যবহার হয়) বিক্রি করতো।