নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের (নাসিক) প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে নির্বাচনি লড়াই। প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ছুটির দিন শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির চেয়ারপারসেনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় এবং ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণসংযোগ করছেন। দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি।
সেলিনা হায়াৎ আইভী সকাল ১০টায় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের জামতলা, হাজী ব্রাদার্স রোড, মাসদাইরসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট চান এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের বিষয়ে এলাকাবাসীকে প্রতিশ্রুতি দেন।
পরে সাংবাদিকদের আইভী বলেন, ‘জনগণ ভোট দিয়ে আবারও সেবা করার সুযোগ দিলে অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজগুলো আগে শেষ করবো। সিটি করপোরেশনের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করবো।’
তিনি জানান, মেয়রের দায়িত্ব পালনের সময় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তায় ৮০০ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট হাতে নেন তিনি। সেই টাকাটি তিনি ওয়াসার উন্নয়নে বরাদ্দ দিয়ে এসেছেন। আবারও নির্বাচিত হতে পারলে সেই প্রকল্পের আওতায় সিদ্ধিরগঞ্জের প্রতিটি ওয়ার্ডসহ সব এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করবেন।
আইভী বলেন, ‘সিটি করপোরেশন শুধু মার্কেট নির্মাণ করেনি। করপোরেশনের আয় বৃদ্ধির জন্য যেসব খালি জায়গা মানুষের দখলে ছিল, সেগুলো উদ্ধার করে মার্কেট অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করেছি। সেখানে সিটি করপোরেশেনের মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করেছি। সিটি করপোরেশনের আয়ের টাকা দিয়েই কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা হয়। সিটি করপোরেশন স্বাবলম্বী হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জে জলাশয় রক্ষা করে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলছে।’
অপরদিকে, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার শুক্রবার সকাল থেকে সিটি করপোরেশনের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সাইলো গেট থেকে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেন। পরে আদমজী, সুমিলপাড়া ও বিহারি কলোনি এসও রোড, বামা স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভোটারদের কাছে হাতি প্রতীকে ভোট চান। জনগণ নির্বাচিত করলে নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোসহ বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন।
পরে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে মানুষ তাদের একজন প্রার্থী পেয়েছে। ৫০ বছরে আমার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মানুষ জানে। রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে গুলি, পুলিশের মার খেয়েছি। কিন্তু জনগণের পাশ থেকে সরে যাইনি। তাই জনগণ আমার পাশে আছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘আইভীকে বুঝতে হবে সিটি করপোরেশন কোনও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। কোনও ট্রেড ইউনিয়ন অর্গানাইজেশন নয়। এটি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করে বিক্রি করা সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন নয়। সিটি করপোরেশনের কাজ হলো নাগরিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা। সিটি করপোরেশনের অনেক কাজ।’
তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে ট্রেনের নিচে পড়ে, বহুতল ভবন থেকে শাবল পড়ে মানুষ মরে যাচ্ছে। ডাক বাংলোর কারণে সরু রাস্তায় দুর্ঘটনায় হচ্ছে।’ তিনি এসব নিয়ে কাজ করবেন বলে মানুষকে প্রতিশ্রুতি দেন।