X
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
১৩ আষাঢ় ১৪৩২

চেয়ারম্যান প্রার্থী গোল্লাকে হত্যা করা হয়েছে, অভিযোগ মেয়ের

বগুড়া প্রতিনিধি
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২২:১৮আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২২:২১

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএনপি নেতা আশরাফুল হক গোল্লার (৫৮) মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায় নয়, তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে বগুড়া প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গোল্লার মেয়ে আফরোজার সুলতানা গীতি এসব অভিযোগ করেন।

এর আগে মামলা না নিয়ে গাবতলী থানা থেকে দুর্ব্যবহার করে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন গীতি। পরে তিনি আদালতে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। আদালত এ ব্যাপারে তদন্ত করে আগামী ২১ এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। গাবতলী থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন– নিহত চেয়ারম্যান প্রার্থী আশরাফুল হক গোল্লার মোটরসাইকেল চালক সেলিম মোল্লা, প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন মন্টু, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও অপর প্রার্থী এজাজ আহমেদ লাভলুর শ্যালক আতিকুর রহমান পিন্টু, ফুয়াদ ফকির ও এরশাদ ফকির।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহত চেয়ারম্যান প্রার্থী সুখানপুকুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল হক গোল্লার মেয়ে আফরোজা সুলতানা গীতি জানান, গত ৩১ জানুয়ারি গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন তার বাবা। ছয় প্রার্থীর মধ্যে ২ নম্বর আসামি শাহাদত হোসেন মন্টু এবং ৩ নম্বর আসামি আতিকুর রহমান পিন্টুর ভগ্নিপতি এজাজ আহমেদ লাভলু নির্বাচনে আশরাফুল হক গোল্লার প্রতিদ্বন্দ্বী হন। গোল্লা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পর থেকে আসামি মন্টু, ফুয়াদ, এরশাদ ও তাদের লোকজন প্রকাশ্যে বিরোধিতা করে আসছিলেন। গোল্লা প্রথমে আমলে না নিলেও পরবর্তী সময়ে প্রতিবাদ করলে আসামিদের সঙ্গে তার সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। এতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মন্টু আরও ক্ষিপ্ত হন। তিনি গোল্লার অন্যতম সহযোগী ও মোটরসাইকেল চালক সেলিম মোল্লাকে টাকার বিনিময়ে হাত করেন। এরপর সবাই মিলে গোল্লাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

গত ২৬ জানুয়ারি নির্বাচনি প্রচারণা শেষে গোল্লা মোটরসাইকেলে বগুড়া শহরে চোখের চিকিৎসকের কাছ যান। এরপর তিনি সেলিম মোল্লার সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির ২০০ গজ দূরে খলিশাকুড়ি ব্রিজের কাছে পৌঁছালে পরস্পর যোগসাজশে আসামিরা পথরোধ করেন। এরপর মন্টুর নির্দেশে সেলিম কাছে থাকা চায়নিজ কুড়াল বের করে গোল্লার মাথায় আঘাত করেন। জীবন বাঁচাতে গোল্লা মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার উত্তর পাশে পড়ে যান। এ সুযোগে অন্য আসামিরা গাবতলীর দিকে পালিয়ে যান। সেলিম মোল্লা নিজেকে হত্যার দায় থেকে নিজেকে বাঁচাতে পথচারীদের সামনে চিৎকার করতে থাকেন। প্রথমে গোল্লাকে গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। ঘটনার পর ৩০ মিনিট অতিবাহিত হলেও সেলিম ঘটনাটি পরিবারকে অবহিত করেননি। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলেও সেলিম আসল ঘটনা গোপন করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠিকমতো চিকিৎসা না দিয়ে গোল্লাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে বিকাল ৫টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া প্রচার করেন, গোল্লা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন মরদেহ দাফন করা হয়। নির্বাচন কমিশন সুখানপুকুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন স্থগিত করে।

আফরোজার সুলতানা গীতি আরও জানান, বাবাকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তারা গাবতলী থানায় মামলা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন। বাধ্য হয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে উল্লিখিত পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তিনি আসামিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।

এ প্রসঙ্গে বগুড়ার গাবতলী পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের ও পিবিআইয়ের তদন্ত রিপোর্ট পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে গোল্লা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন না তাকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট সবার কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছেন।

মামলার আসামিরা এলাকায় না থাকায় এবং ফোন বন্ধ রাখায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

/এমএএ/
সম্পর্কিত
অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনকেই সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেবে, আশা তারেক রহমানের
‘এখনই স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্ভব’, মনে করে সংস্কার কমিশন 
নির্বাচনের তিন বছর পর কেন্দ্রের পেছনে পাওয়া গেলো নৌকায় সিল মারা ২০০ ব্যালট
সর্বশেষ খবর
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আবারও রিমান্ডে
সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আবারও রিমান্ডে
বিরোধীদের নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ নয়: দ্য ইকোনমিস্ট
বিরোধীদের নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ নয়: দ্য ইকোনমিস্ট
মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সন্দেহে ১৬ বাংলাদেশি গ্রেফতার
মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সন্দেহে ১৬ বাংলাদেশি গ্রেফতার
চট্টগ্রামে আরও ১২ জন করোনায় আক্রান্ত
চট্টগ্রামে আরও ১২ জন করোনায় আক্রান্ত
সর্বাধিক পঠিত
পরীক্ষায় বাড়তি সময় না দেওয়ায় পরিদর্শককে মারধর ছাত্রদল নেতার, দিলেন হত্যার হুমকি
পরীক্ষায় বাড়তি সময় না দেওয়ায় পরিদর্শককে মারধর ছাত্রদল নেতার, দিলেন হত্যার হুমকি
৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা নিয়ে ক্ষোভ হাসনাত-সারজিসের
৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা নিয়ে ক্ষোভ হাসনাত-সারজিসের
জাতীয়করণ নয়, এমপিওভুক্তির আওতায় আসছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা
জাতীয়করণ নয়, এমপিওভুক্তির আওতায় আসছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা
ইরান-রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেছে চীন
ইরান-রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেছে চীন
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জন্য নতুন এমপিও নীতিমালা জারি
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জন্য নতুন এমপিও নীতিমালা জারি