যশোরের চৌগাছায় পৃথক দুই গ্রামে দুটি বাল্যবিয়ে অনুষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) রাতে এ অভিযানে একটি বিয়ে বন্ধ করতে পারলেও অন্যটিতে আগেই কনেকে বরের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেন অভিভাবকরা।
অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে একটি বিয়েতে কনের বাবাকে এবং অন্যটিতে কনের দাদাকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাদের ১০০ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের পাতিবিলা উত্তরপাড়া গ্রামের দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। মেয়েটিকে পরিবারের সদস্যরা জোর করেই বিয়ে দিচ্ছিল। বর পাশের জেলা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেন সহকারী কমিশনার-ভূমি (এসিল্যান্ড)-কে। এসিল্যান্ড আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে রাত ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কনের দাদা আবদুস সালামকে (৬৫) ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ১০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এই বিয়ে বন্ধ করেই এসিল্যান্ড রওনা হন উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের মাড়ুয়া গ্রামে। সেখানে রাত সাড়ে ১১টায় গিয়ে দেখেন, দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ের আয়োজন করেছেন অভিভাবকরা। তবে সেখানে এসিল্যান্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছানোর আগেই কনেকে নিয়ে দ্রুত বিয়েবাড়ি ত্যাগ করেন বর ও বরযাত্রীরা। পরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কনের বাবা মহিউদ্দিনকে (৪৬) ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক চৌগাছার সহকারী কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ইউএনও স্যারের নির্দেশে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে একটি বিয়ে বন্ধ করা গেলেও অন্যটিতে কনেকে নিয়ে বর ও বরযাত্রীরা বিয়েবাড়ি ত্যাগ করেন।’
চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, ‘বাল্যবিয়ের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’