দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুপক্ষের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচ জন। এ ঘটনায় তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে উপজেলার খোদাদাদপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এ সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মনোয়ার হোসেন মিম (২৪) নামে এক যুবক নিহত হন। রাকিব হোসেন (২৫) নামের অপর একজন গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায়।
নিহত মনোয়ার হোসেন মিম উপজেলার ৪নং ঘোড়াঘাট ইউনিয়নের খোদাদাতপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে এবং রাকিব হোসেন একই গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে।
এ ঘটনায় গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো– উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে ওমর আলী (৫৫), তার স্ত্রী মোমেতা বেগম (৪৫) এবং তার ছেলে সামিরুল ইসলাম (২০)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে ২৮ শতক জায়গার মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ওমর আলীর সঙ্গে হায়দার আলীর দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। মীমাংসা না হওয়ায় তাদের এই দ্বন্দ্ব গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ওমর আলীরা মাঝে-মধ্যেই জায়গাটির দখল নিতে আসতো। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালে ওমর আলী ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে পানি দিতে আসে। সে সময় হায়দার আলীর ছেলেরা বাধা দিলে ওমর আলীসহ তার পরিবারের পাঁচ-ছয় সদস্য চাকু, ছুরি ও লাঠি নিয়ে অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা করে। এতে চাকুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান।
ঘোড়াঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ভুট্টু বলেন, ‘তাদের এই জায়গা নিয়ে অনেকদিন থেকেই দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সামান্য কিছু জমি নিয়ে হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়ার মতো নয়। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, ‘এই ঘটনায় সকালে পাঁচ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রংপুরে রেফার্ড করা হয়েছিল। বর্তমানে চার জন আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।’
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আবু হাসান কবির বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি। এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ঘটনায় তিন জনকে আটক করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ ইফতেখার আহমেদ।