X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পথে পথে সেনাবাহিনীর তল্লাশি: ফিরেছে শৃঙ্খলা

আবদুল আজিজ, কুতুপালং থেকে
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৫:২৪আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২৩:৪১

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে দায়িত্ব পালন করছেন সেনা সদস্যরা

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকেই রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ এবং ক্যাম্পসহ আশপাশের এলাকায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজে অংশ নিতে শুরু করেছে সেনাবাহিনী। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে ক্যাম্পগুলোর প্রবেশপথে তল্লাশিও শুরু করেছে তারা। সেনাবাহিনী ছাড়াও পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবিসহ সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাও বেড়েছে। এতে করে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ রোহিঙ্গাদের নিয়ে কর্মরত বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মীরাও এতে স্বস্তি জানাচ্ছেন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ত্রাণকর্মী মো. আলমগীর রেজা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘একসময় ত্রাণ বিতরণের কাজটি অত্যন্ত অগোছালো ছিল। অনেকে একসঙ্গে ত্রাণ নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ত। আমরা যারা ত্রাণ বিতরণ করতাম, তারাও ঠিকমতো কাজ করতে পারতাম না। ফলে দেখা যেত, পর্যাপ্ত ত্রাণ থাকলেও সেগুলো ঠিকমতো বিতরণ হতো না। সেনাসদস্যরা সরাসরি ত্রাণ বিতরণে অংশ নেওয়ায় এখন সেসব ঝামেলা দূর হয়েছে। এখন ত্রাণ দেওয়া সহজ হচ্ছে।’

জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকেই উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালী এবং টেকনাফের নয়াপাড়াসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুরোদমে কাজ শুরু করে সেনাবাহিনী। ত্রাণ বিতরণ থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও গতি নিয়ে আসার জন্যই তারা কাজ করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাতেও প্রশাসনকে সহায়তা করছে তারা। এই কাজের ধারাবাহিকতায় সেনাবাহিনী সোমবার থেকে শুরু করেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর প্রবেশপথে তল্লাশি। ত্রাণবাহী গাড়ি থেকে শুরু করে সব ধরনের যানবাহনই রয়েছে তাদের তল্লাশির আওতায়।

স্থানীয়রা বলছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশাপাশের এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে প্রশাসনসহ বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে বেগ পেতে হতো। এছাড়া, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোকে ঘিরে স্থানীয়দের জটলাও ছিল। তবে এসব জায়গায় সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন কাজেই শৃঙ্খলা ফিরেছে।

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রবেশ পথে সেনাবাহিনীর তল্লাশি

উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালং ইউপি সদস্য বখতিয়ার আহমদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা আসার পর থেকে গোটা এলাকায় এক ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। যেখানে-সেখানে মানুষের জটলা, দৌড়াদৌড়ি লেগেই ছিল। রাস্তার দুই পাশে মানুষ জটলা বেঁধে ত্রাণের জন্য দৌড়াদৌড়ি করত। এখন সে অবস্থা নেই। সেনাসদস্যরা এসে রাস্তার দুই পাশের বস্তিগুলো উচ্ছেদ করে দিয়ে ক্যাম্পের ভেতরে নিয়ে গেছে। ফলে ওই রাস্তায় আর মানুষের জটলাও নেই।’

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শুরু থেকেই সার্বিক দিক থেকে আমরা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছিলাম। আমাদের সঙ্গে বিজিবিও কাজ করেছে। তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাটা কষ্টকর হয়ে পড়ছিল। সর্বশেষ সেনাবাহিনী মাঠে নামার পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্বস্তিবোধ করছে। বলতে গেলে এখন শৃঙ্খলা চলে এসেছে সবদিকেই।’

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনীসহ সরকারি বাহিনী। রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, রোহিঙ্গাদের হত্যা করা হয়। নৃশংস নির্যাতনের মুখে রাখাইন থেকে দলে দলে পালিয়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গারা। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত চার লাখ ৩৬ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

/টিআর/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বনানীতে যাত্রীবাহী বাসে আগুন
বনানীতে যাত্রীবাহী বাসে আগুন
কোটি টাকার আইসসহ গ্রেফতার সংগীতশিল্পী এনামুল রিমান্ডে
কোটি টাকার আইসসহ গ্রেফতার সংগীতশিল্পী এনামুল রিমান্ডে
‘বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রণোদনা ৩ শতাংশ বিবেচনা করা হবে’
‘বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রণোদনা ৩ শতাংশ বিবেচনা করা হবে’
হেলিকপ্টারের সিটে বসতে গিয়ে পড়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
হেলিকপ্টারের সিটে বসতে গিয়ে পড়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
দক্ষিণে ‘ডায়াবেটিক ধানের’ প্রথম চাষেই বাম্পার ফলন, বীজ পাবেন কই?
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
তাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম
প্রাক-প্রাথমিক বন্ধই থাকছেতাপপ্রবাহে যেভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম