X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৮ বৈশাখ ১৪৩১

পাহাড়ে জুম চাষে বাম্পার ফলন, চলছে ধান কাটা

জিয়াউল হক, রাঙামাটি
২৩ অক্টোবর ২০১৭, ১০:১১আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০১৭, ১৩:০৯

ধান কাটছেন জুম চাষি আকাশে তখনও ঠিকমতো সূর্য ওঠেনি। কেবল আভা ছড়িয়েছে। এরই মধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পাহাড়ি জনপদ। কারণ পাহাড়ে পাহাড়ে থাকা জুমক্ষেতে ধান কাটা চলছে এখন। পাহাড়ি নারী-পুরুষ সবাই মিলে ধান কেটে রাখছেন পিঠের ঝুড়িতে। এরপর নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। অনেকে এরই মধ্যে ফসল কাটা শেষ করেছেন। বছরের এ সময়টা রাঙামাটির সবুজ পাহাড়ে চলে ধান কাটার উৎসব। এ বছর জুনে পাহাড় ধসের কারণে জুম চাষের জায়গা কমে গেছে। তবে এবার ফলন ভালো হয়েছে বলছেন চাষিরা। জুমিয়াদের ঘরে উঠছে সোনালি ফসল। একইসঙ্গে পাহাড়ে বাম্পার ফলন হয়েছে মারফা, বেগুন, মরিচ, ঢেঁড়শ, কাকরোল, আদা, পেঁপে ও কুমড়াসহ নানা ফসলের। জুমের বাম্পার ফলন হওয়ায় খুশি জুমিয়া পরিবারগুলো।

রাঙামাটির কাপ্তাই সড়কে মোরঘোনা এলাকার জুমিয়া অনিল চাকমা বলেন, ‘পাহাড় ধসের ফলে জুম চাষের জায়গা কমে গেছে। তারপরও যেটুকু জায়গাতে আমার চাষ করেছি,তাতে ফলন গত বছরের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে।’

জুমক্ষেত

তার অভিযোগ, ‘জুম চাষের সমস্যা হলেও কৃষি কর্মকর্তারা কোনও খবর নেয়নি। জলে ভাষা জমিতে চাষ করলে তখন তাদের দেখা যায়। জুমে যে পরিমাণ ধান পাওয়া যায় তাতে কয়েক মাস চলে। কৃষি বিভাগ যদি এমন কোনও জাতের ধান আমাদের দিতো যা চাষ করলে ফলন ২-৩ গুণ বেশি হবে, তাহলে জুমের ধান দিয়ে আমরা সারা বছর চলতে পারতাম।’

একই এলাকার জুমচাষি চম্পা চাকমা বলেন, ‘গত বছর জুমে ২০ কেজি ধান রোপণ করে ৪/৫ বস্তা ধান হয়েছিল। এবার ১৫/২০ বস্তা হতে পারে। গত বছরের তুলনায় এবারে জুমে ফলন ভালো হয়েছে।’

পাহাড়ে জুম চাষে বাম্পার ফলন, চলছে ধান কাটা

ধান কেটে মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত জুমচাষি মঙ্গল চাকমা। তিনি বলেন, ‘আমাদের জুমের সব ধান কাটা শেষ। সবজিগুলো এখনও আছে। পাহাড় ধসের কারণে অনেকে জুম চাষ করেনি। যারা করেছে তারা ভালো ফলন পেয়েছে।’   

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ সূত্র মতে, জুমচাষিরা পৌষ-মাঘ মাসে পাহাড়ের ঢালের জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আগুনে পুড়িয়ে পাহাড় জুম চাষের উপযোগী করে তোলে। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে পোড়া জুমের মাটিতে একসঙ্গে ধান, মারফা, মিষ্টি কুমড়া, তুলা, তিল, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রকম বীজ রোপণ করে। এর মধ্যে এখন ধান কাটা হচ্ছে।

ধান মাড়াই চলছে

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী পরিচালক কৃঞ্চ প্রসাদ মল্লিক জানিয়েছেন, ‘আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমির জুমের ধান আবাদের। তবে আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৯১০ হেক্টর কম জমিতে জুম চাষ হয়েছে। আশা করছি এ জমি থেকে এবার ৫ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন ধান পাওয়া যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নতুন কিছু প্রজাতির ধান আগামী বছর থেকে জুমিয়াদের দিতে পারবো। সেগুলো প্রায় প্রতি হেক্টরে ৩ টন করে ধান উৎপাদন হবে।’

পাহাড়ে জুম চাষে বাম্পার ফলন, চলছে ধান কাটা

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনপদের লোকজন জুম চাষ করেই তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। যে বছর জুমে ভালো ফলন হয় না সেবছর অনেকেই খাদ্য সংকটে থাকেন। চলতি বছর বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নের জুমিয়া পরিবারগুলো এবার খাদ্য সংকটে ছিল।

 

/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়দের পিটুনিতে একজনের মৃত্যু
ইজিবাইক ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয়দের পিটুনিতে একজনের মৃত্যু
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শ্রমিকরাও অংশীদার হবে: এমপি কামাল
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শ্রমিকরাও অংশীদার হবে: এমপি কামাল
মোস্তাফিজের শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়ের হার
মোস্তাফিজের শেষ ম্যাচে চেন্নাইয়ের হার
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
সর্বাধিক পঠিত
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
শিশু ঝুমুরকে ধর্ষণ ও হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে চোখ মুছলেন র‌্যাব কর্মকর্তা
‘মানুষের কত ফ্রেন্ড, কাউকে পাশে পাইলে আমার এমন মৃত্যু হইতো না’
‘মানুষের কত ফ্রেন্ড, কাউকে পাশে পাইলে আমার এমন মৃত্যু হইতো না’
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা
একজন অপরাধীর গল্প বলতে চেয়েছিলেন তিশা